আমাদের প্রবাস জীবন
লিখেছেন লিখেছেন সিটিজি৪বিডি ২৯ মে, ২০১৫, ০৪:১০:৩৪ রাত
আমাদের প্রবাস জীবন
লিখেছেনঃ প্রবাসী বাদশা
----------------------------------------------------
প্রবাসী মিল্টন চারটি ব্যবসায়িক প্রতিস্টানের মালিক। প্রতিস্টানের ১৫ জন কর্মচারী সবাই বাংলাদেশী। মিল্টন ও তার প্রতিস্টানের কর্মচারীরা পাশাপাশি দুটি রুমে থাকে। কর্মচারীদের বেশীর ভাগ মিল্টনের আত্মীয়। বাকীরা বিভিন্ন জেলার। এই মিল্টন এতটায় কিপটা যে কল্পনার বাইরে। প্রতিমাসে লক্ক লক্ক টাকা উপার্জন করলেও মন মানসিকতা খুব নিন্মমানের। কর্মচারীদের থাকা ও খাওয়া মিল্টন নিজেই বহন করে। কর্মচারীদের বেতন ও খুব বেশী নয় ১২০০/১৫০০ শত দিরহামের নীচে। এই সামান্য টাকা উপার্জনের জন্য কর্মচারীরা প্রতিদিন ১৩/১৪ ঘন্টা কাজ করতে বাধ্য হয়। এমনকি ছুটির দিনেও কাজ করতে হয়।
এই মিল্টন তার কর্মচারীদেরকে
মিনি সাবান দুই টুকরো করে দেয়।
লিকুইট কম খরচ করার জন্য বোতলে "অপচয় বন্ধ" লিখে দেয়।
খাবারের মেনুতে নিন্মমানের তরকারী দেয়।
কেউ নাস্তা বেশী খেলেই বকা দেৃয। কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসা সেবা না দিয়ে উল্টো গালি দেয়।
কর্মচারীদের রুমে প্রবেশ করে এসি বন্ধ করে দেয়।
পানি কম খরচ করার জন্য পানির সুইস বন্ধ করে দেয়।
কেউ জরুরী প্রয়োজনে বেতন অগ্রীম চাইলে সরাসরি না সুচক উত্তর দেয়।
এই হচ্ছে দুবাই প্রবাসী কোটিপতি কিপটে মিল্টনের আসল চরিত্র।
এই মিল্টনকে দেখলে যে কেউ মনে করবে এমন ফেরেস্তার মত মানুষ দুনিয়াতে আর নেই। এমন করে মিস্টি কথা বলে যে কেউ তার আচরণে সাময়িক মুগ্ধ হয়ে বিদেশে এসে তার প্রতিস্টানে কাজ করার জন্য পাগল হয়ে যায়। কিন্তু
প্রবাসে এসে বুঝতে পারে মিল্টনের আসল চরিত্র।
প্রবাসে মিল্টনের মত হাজারো মিল্টন আছে যাদের খপ্পরে পড়ে প্রবাসীরা নীরবে চোখের পানি ফেলে। না পারে তারা দেশে যেতে, না পারে অন্য কোথাও কাজ করতে। ভিসার টাকা উসুল করতেই তাদের কয়েক বছর লেগে যায়।
কর্মচারীদেরকে ঠকিয়ে এই মিল্টনেরা দেশে বড় বড় দালান তৈরী করে। হালাল-হারাম বিচার না করে অর্থ উপার্জন করে দেশে গিয়ে মেজবান দেয়। মসজিদ ও মাজারে দান করে সমাজ সেবক সাজে।
প্রবাসে আসার আগে জেনে নিনঃ
আপনার কাজ কি হবে।
কত ঘন্টা কাজ করতে হবে।
সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে কি না।
মাসিক বেতন কত হবে।
থাকা-খাওয়া ও নাস্তার টাকা দিবে কি না।
ছুটির সময় টিকেটের টাকা দিবে কি না।
লিভ সেলারী দিবে কি না।
কত বছরের জন্য ভিসা লাগাবে।
ভিসার জন্য টাকা দিতে হলে কত দিতে হবে।
অন্য কোথাও কাজ করার সুযোগ থাকবে কি না।
ভিসা ট্রান্সফার করতে পারবেন কি না।
৫/৬ লাখ টাকা খরচ করে প্রবাসে আসার আগে উপরোক্ত পয়েন্টগুলো নিয়ে ভিসা দাতার সাথে আলাপ আলোচনা করে প্রবাস জীবনে পা বাড়াবেন।
ভিসা দালাল ও দুস্ট লোকের খপ্পরে পড়ে আর কোন মানুষের জীবনে যাতে নস্ট না হয় সেই কামনা করি।
বিষয়: বিবিধ
১০৮৭ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বিদেশে শ্রম আইন বিষয়ে সরকার এর সচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার কিন্তু সেটা তারা করবে না!
মন্তব্য করতে লগইন করুন