۩۞۩ নারীদেরকে রাস্তায় যখন টিজ করে তখন অনেক মানুষ থাকে এবং টিজকারী পাশেই থাকে, তখন প্রতিবাদ করা যায়; কিন্তু মোবাইলের টিজ থেকে রক্ষা পাওয়া খুব কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। ۩۞۩

লিখেছেন লিখেছেন সিটিজি৪বিডি ০৮ জানুয়ারি, ২০১৩, ০২:২৬:২৮ দুপুর



১.

তখন মধ্যরাত। স্বামী-স্ত্রী ঘুমাচ্ছেন। হঠাৎ স্ত্রীর মোবাইল ফোনটি বেজে উঠলো। মধ্যরাতে অপরিচিত নম্বর দেখে ধরবেন কী ধরবেন না ভেবে ফোনটি ধরার সঙ্গে সঙ্গেই ওপাশ থেকে নোংরা মন্তব্য। ‘রং নাম্বার’ বলে ফোনটি কেটে দিলেন তিনি।

কয়েক মিনিট পর অশালীন মেসেজ।

এরপর একাধিক মেসেজ।

এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্বের সৃষ্টি। স্বামীর দাবি, মেসেজ প্রদানকারী স্ত্রীর পূর্বপরিচিত। স্ত্রী হতভম্ব। মেসেজ প্রদানকারীকে তিনি চেনেন না।

শুধু এ অশ্লীল মেসেজকে কেন্দ্র করে ঝগড়াটি শেষ পর্যন্ত গড়ালো বিয়ে বিচ্ছেদে। সুখের সংসার ভেঙে দ্বিখন্ডিত। অপরিচিত এ ‘মোবাইল শত্রুর’ কারণে ৩ বছরের সংসার পরিণত হলো বিষাদে।

==============================

২.

বিয়ের দুই বছর পরে রাত বারোটায় হঠাৎ অপরিচিত নাম্বার থেকে স্ত্রী মিলার মোবাইলে কলঃ

মিলাঃ হ্যালো, কে?

অপর প্রান্ত থেকেঃ আমি আপনার স্বামী।

মিলাঃ আমার স্বামী আমার পাশেই আছে। আপনি কে?

মিলা মোবাইলটি তার হাজবেন্ডকে ধরিয়ে দিল।

মিলার হাজবেন্ড কথা বলতে চাইলে অপর প্রান্ত থেকে কোন কথা বলে না। মিলার হাজবেন্ড অনেক গালাগালি করে ফোন রেখে দিল।

সকালে ঘুম থেকে উঠেই মিলার হাজবেন্ড বিভিন্নজনকে নাম্বারটি জানিয়ে দিল। বিভিন্ন নাম্বার থেকে একের পর এক কল আসার কারনে এক পর্যায়ে অপরিচিত কন্ঠটি মাফ চেয়ে বিদায় নিল। সে বলল, একটি ফোনের দোকান থেকে নাম্বারটি সংগ্রহ করেছে।

==============================

৩.

কলেজ শিক্ষার্থী তারিন। হাতে এখনো মোবাইল নেই। তারিনের আম্মার মোবাইলে অচেনা নম্বর থেকে বিভিন্ন অশালীন মেসেজ, ফোন ও মিসড কল আসতো। তারিনের আম্মার গালি খেয়ে কিছুদিন ডিস্টাব করা বন্ধ ছিল। কিন্তু কিছুদিন পর আবার সেই একই যন্ত্রণা। মেসেজ প্রদানকারীদের নম্বরে ফোন করে এসব মেসেজ না পাঠাতে অনেক অনুরোধ করা হলো, পরে থ্রেডও। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। যন্ত্রনা মুক্ত হতে সিম পাল্টাতে বাধ্য হয়েছিল।

==============================

নারীদেরকে রাস্তায় যখন টিজ করে তখন অনেক মানুষ থাকে এবং টিজকারী পাশেই থাকে, তখন প্রতিবাদ করা যায়; কিন্তু মোবাইলের টিজ থেকে রক্ষা পাওয়া খুব কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফোন রিসিভ করে হ্যালো বলার পর যদি নোংরা কথা শুনতে হয়, তখন মেজাজ ঠিক রাখা যায় না। না পারা যায় সঠিক প্রতিবাদ করতে, না পারা যায় সহ্য করতে। এ ক্ষোভটা থাকে দীর্ঘসময়। দীর্ঘদিন এ ধরনের ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হলে বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

টিজাররা আসলে অপরাধী। মেয়েদের জন্য এটি মানসিক অত্যাচার। অচেনা এক নাম্বার থেকে একের পর এক কল-ম্যাসেজ আসতে থাকলে মেয়েরা ভেঙ্গে পড়ে। দাম্পত্য জীবনে অশান্তি নেমে আসে। স্বামী তার স্ত্রীকে ভুল বুঝতে থাকে। ভুল বুঝার আগে স্বামীকে কে ফোন করছে, কেন করছে? নাম্বার কোথায় পেয়েছে তদন্ত করে বের করতে হবে।

মোবাইল নম্বর কিভাবে ছড়ায়?

ফ্লেক্সিলোডের দোকানে সবসময় ভিড় থাকে। কোনো মেয়ে ফ্লেক্সিলোড করতে এলে অপেক্ষমাণ বখাটেরা নম্বরটা টুকে নেয়। অনেক সময় বন্ধুদের মোবাইল থেকেও নম্বর নিয়ে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে অনেকেই মজা পায়। আবার অনেকেই বসে বসে নম্বর তৈরি করে ফোন করে। আর তখন মেয়ে কণ্ঠ পেলে তো কথাই নেই। তাই মেয়েদেরকে ফোনের দোকান থেকে ফ্লেক্সিলোড করা থেকে বিরত থাকতে হবে। দুষ্ট বন্ধূ-বান্ধব, আত্বীয়-স্বজনদেরকে নাম্বার প্রদান থেকে বিরত থাকতে হবে। বর্তমানে সস্তায় সিম পাওয়া যায়। বখাটের ডিস্টাবের কারনে নিজেকে কষ্ট না দিয়ে সিম পরিবর্তন করতে হবে।

আরেকটা কথা প্রবাসী ভাইয়েরা প্রবাস থেকে স্ত্রীর মোবাইলে টাকা পাঠিয়ে থাকে। হুন্ডিওয়ালাদেরকে স্ত্রীর নাম্বার দেয়। এই কাজটি না করায় ভাল হয়।

বিষয়: বিবিধ

১৫১৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File