۩۞۩ প্রবাসীদের আকাশ ভ্রমনের অভিজ্ঞতা-۩۞۩

লিখেছেন লিখেছেন সিটিজি৪বিডি ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১১:০৫:২৯ সকাল



আমরা যারা প্রবাসে থাকি আমাদেরকে উড়োজাহাজে বসেই প্রবাসে যেতে হয় আবার দেশে ফিরে আসতে হয়। দুরত্ব বেশী বলে স্থল কিংবা নৌ পথে আসা-যাওয়া করা প্রায় অসম্ভব। উড়োজাহাজ এই অসম্ভব কাজটি সহজ করে দিয়েছে। ৪/৫ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে মাত্র ৪/৫ ঘন্টা সময় লাগে। উড়োজাহাজ ভ্রমনকারীদের নানান বিচিত্র অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমারও কয়েকটি ঘটনা মনে পড়ে।



বাংলাদেশ বিমানঃ মধ্যে প্রাচ্যের বিভিন্ন রুটে বিমান আসা-যাওয়া করে। দাম একটু বেশী হলেও প্রবাসীরা বিমানকে পছন্দ করে। কারন মালামাল বেশী নেয়া যায়। দেশীয় খাবারও পাওয়া যায়। টাকার বিনিময়ে যখন তখন তারিখ পরিবর্তন করা যায়। যদিও মাঝে মধ্যে বিমানের সিডিউল বিপর্যয় দেখা দেয়। যাত্রীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। তারপরেও আমরা বিমানকে পছন্দ করি।



ছোট বেলা থেকেই দু-বেলা ভাত খেয়ে আসছি। ভাত ছাড়া আমার চলেই না। বিমানে বসে ভাত খেতে খেতে আকাশ দেখতে আমার খুব ভাল লাগে। তাই আই লাভ বিমান।



ফ্লাই দুবাইঃ দাম একটু সস্তা। প্রতিদিন দুবাই-চট্টগ্রাম রোডে ফ্লাইট আছে। জাস্ট টাইমে আসা-যাওয়া করে বলে প্রবাসীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যদি ও মালামাল বেশী নেয়া যায় না। আরেকটা অসুবিধা হচ্ছে এক কাপ পানি ছাড়া আর কিছুই জুটে না। টাকা দিয়ে খাবার কিনে খেতে হয়। তারিখ পরিবর্তন করতে হলে নিদিষ্ট ফি প্রদান করতে হয়। তাই অলস ব্যক্তিরা (যারা বারবার তারিখ পরিবর্তন করে) এই উড়োজাহাজে ভ্রমন করতে চায় না।



এয়ার এরাবিয়াঃ সারজাহ টু চিটাগাং । সার্ভিস ফ্লাই দুবাইয়ের মত। দাম একটু সস্তা।

এয়ার এরাবিয়ায় একবার চট্টগ্রাম থেকে সারজা এসেছিলাম। এয়ার এরাবিয়াতেও মাত্র এক কাপ পানি ফ্রিতে পাওয়া যায়। খিদে লাগার কারনে টাকার বিনিময়ে বার্গার খেয়েছিলাম। আমার পাশে বসা প্রবাসী ভাইটির টিকেটে লাঞ্চ এর অর্ডার ছিল। মনে হয় তার প্রতিষ্টানের মালিক অতিরিক্ত টাকা দিয়েছিল। বিমান বালা তাকে খাবার এখন আনবে কি না জিজ্ঞেস করতেই সে "না" সুচক উত্তর দিল। আমি তাকে বললাম, আপনার জন্য খাবার ফ্রি। টাকা দিতে হবে না। এটা বলার পর সে খাবার খেয়েছিল। বেচারা মনে করেছিল আমার মত টাকা দিয়ে খেতে হবে। হাহাহা।



ইমারেটস এয়ারঃ দুবাই টু ঢাকা। প্রতিদিন কয়েকটি ফ্লাইট আসা-যাওয়া করে। চট্টগ্রামে পারমিশন নাই বলে চট্গ্রামবাসীরা তাদের সেবা থেকে বঞ্চিত। আমার এক বন্ধু ইমারেটস এয়ারে জব করে বলে তার অনুরোধে একবার ঢাকায় গিয়েছিলাম। ঢাকা থেকে মাইক্রোতে চট্টগ্রাম। লং জার্নি। ইমারেটস এর সেবার মান বেশ উন্নত। প্রতিটি সিটের সাথে মনিটর লাগানো আছে। শত শত চ্যানেল ঘুরাতে ঘুরাতেই গন্তব্য পৌছানো যায়।

তাদের সার্ভিস দেখে আমি খুব খুশী হয়েছি। প্রথম গরম ভেজা তাওয়েল দিয়ে হাত-মুখ মু্ছাবে। তারপর ঠান্ডা পানীয়। তারপর খাবার দিবে। ভাত না পেয়ে আমি একটু মন খারাপ করেছিলাম। ইমারেটস এ বিদেশী মদ ও আছে। আমাদের কিছু প্রবাসী ভাই ফ্রিতে মদ পান করতে ভুল করেন না।



পিআইএঃ একবার পিআইএ এর টিকেট নিয়ে দুবাই টু করাচী তারপর ঢাকায় গিয়েছিলাম। করাচী এয়ারপোট দেখে আমাদের চট্টগ্রামের এয়ারপোটের কথা মনে পড়ে গিয়েছিল।

আরেকটা মজার বিষয় হচ্ছে, আমাদের দেশের প্রবাসী শ্রমিক ভাইয়েরা ফ্লাইটে উঠেই পাইচারী করতে থাকে। কেউ বা সীটের মধ্যে পা রেখে ঘুমানোর চেষ্টা করে। কেউ কেউ ডিউটি ফ্রি সপ থেকে ইচ্ছে মত বাজার করে দু হাতে পলিথিনের প্যাকেট নিয়ে ফ্লাইটে উঠে। ফ্লাইট লেন্ডিং করার আগেই দাড়িয়ে থাকে। বিমানবালাদের বারবার বসার অনুরোধেও তারা সিটে বসে না। এই দৃশ্য দেখে বিদেশী যাত্রীরা হাসতে থাকে। বাংলাদেশ বিমানের বিমানবালারা একটু রাগ করলেও অন্য এয়ারের বিমানবালারা সুন্দর ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে। কিন্তু কে শুনে কার কথা----------

প্রবাস থেকে সবাইকে শুভেচ্ছাসহ--

বিষয়: বিবিধ

২৬৫৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File