অপ্রিয় হলেও সত্য-৫ (শাশুড়ীর সেবার ফজিলত)
লিখেছেন লিখেছেন সিটিজি৪বিডি ২৯ মার্চ, ২০১৪, ০৫:৩৮:২৭ বিকাল
জাহরাকে স্কুলে পৌছে দিয়ে আরিফ অফিসে গেল। অফিসে এসেই পত্রিকার পাতা উল্টাতে উল্টাতে এক কাপ চা খেল। চা টা শেষ করে পেন্টের পকেট থেকে মোবাইল ফোন বের করে দেখে স্ত্রীর মিসকল। আর দেরী না করে স্ত্রীকে ফোন দেয়।
আরিফঃ হ্যালো জাহরার আম্মু, আসসালামু আলাইকুম। কি খবর বলো।
ইয়াসমিনঃ ওয়ালাইকুম সালাম। বাড়ী থেকে আব্বা ফোন করেছে। আম্মারা আজ বিকেলে বাসায় চলে আসবে। তুমি ডাক্তার তানিয়ার চেম্বারে গিয়ে আম্মার জন্য সিরিয়াল নাম্বার নিয়ে আসবে। আম্মাকে আজ রাতেই ডাক্তার দেখাতে হবে।
আরিফঃ আচ্ছা ঠিক আছে বলে লাইনটা কেটে দিল।
আরিফের আম্মা আজ দুবছর ধরে অসুস্থ। কোন কিছু মনে রাখতে পারে না। কারো সাথে বেশী কথাও বলে না। কখনো জানালার পাশে দাড়িয়ে নীরবে কাঁদে। অনেক ডাক্তার দেখিয়েও ওনাকে ভাল করা যাচ্ছে না। তাই আরিফের আম্মাকে নিয়ে বাসার সবাই চিন্তিত। আরিফের বউ, ছোট বোন, ভাবী ও ছোট ভাইয়ের বউ সারাক্ষণ মা-শাশুড়ীর সেবায় ব্যস্ত। সবাই সেবা-যত্ন করে চলেছে। তাদের এই সেবা যত্নে আরিফের বাবা ও তাদের আত্বীয়-স্বজনরা সন্তুষ্ট।
আরিফরা কিভাবে বড় হয়েছে তাদের আম্মা যে কত পরিশ্রম করে তাদেরকে মানুষ করেছে সেই বিষয়ে স্ত্রীকে বিয়ের পরেই জানিয়েছিল। আরিফ সেই সময় স্ত্রী ইয়াছমিনকে কয়েকটি কথা বলেছিল, "আম্মা একটু রাগী। আম্মার কোন ব্যবহারে মন খারাপ করা চলবে না। কোনো কারনে বাসার বাইরে গেলে আম্মাকে বলে যাবে। সাধ্যমত আম্মার সেবা করবে। কোন সমস্যা হলে আমাকে শেয়ার করবে।"
আরিফের গুনবতী স্ত্রী এই কথাগুলো আজও অক্ষরে অক্ষরে পালন করে চলেছে। আনন্দচিত্তে শাশুড়ীর সেবা করেই যাচ্ছে। শাশুরবাড়ীতে কাজের মধ্যে ডুবে থাকতে থাকতে মাঝে মধ্যে মন খারাপ হলেও কাউকে বুঝতে দেয় না। সবকিছু হাসি-মুখে মেনে নেয়।
আরিফ তার মায়ের সেবা-যত্নে অক্লান্ত পরিশ্রমের কথা স্বরণ করে স্ত্রীকে সব সময় বলে, "ইয়াছমিন, এই সেবার প্রতিদান তুমি দুনিয়া ও আখিরাতে পাবে। এর বিনিময়ে বৃদ্ধ বয়সে তোমার সন্তান ও পুত্র বধু তোমার সেবা করবে। আমরা যদি বাবা-মাদের কষ্ট দিই, তাদেরকে অবহেলা করি, তাদেরকে একা রেখে অন্যত্র বসবাস করি তাহলে আমাদের সন্তানেরাও একদিন আমাদের সাথে এমন আচরণ করবে। তাই কখনো বাবা-মায়ের মনে কষ্ট দেয়া যাবে না। আরেকটা কথা, বৃদ্ধ বয়সে সকলের বাবা-মা তো শিশুর মতই আচরণ করে। শিশুকালে আমরা যেমন বাবা-মার সেবা পেয়ে বড় হয়েছিলাম। আজ তারা ও আমাদের সেবা-যত্নে বাকী জীবনটা কাটিয়ে দিবে।"
বিষয়: বিবিধ
১৯৭৩ বার পঠিত, ৪৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আদর্শ পরিবার
আবদুর রাযযাক বিন ইউছুফ
কুরআন ও সুন্নার আলোকে আদর্শ বিবাহ ও দাম্পত্য
আবুদল হামিদ মাদানী
এই দুটি পড়ে অনেক কিছু জানতেও শিখতে পেরেছি।
২। বেহেস্তী জেওরে (আশরাফ আলী থানবী রহ.) সংশ্লিষ্ট অধ্যায়ে।
১ নং বইটি নেটে পাওয়া যায় কিনা জানিনা, ২ নং টি পাওয়া যায়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন