অপ্রিয় হলেও সত্য-৪ (শিশুপার্কে একদিন)
লিখেছেন লিখেছেন সিটিজি৪বিডি ১২ মার্চ, ২০১৪, ০৫:০২:৩৩ বিকাল
জুমার নামায আদায় করে আরিফ সবাইকে নিয়ে খাবার টেবিলে খেতে বসে। সপ্তাহে মাত্র এই দিনটিতে দুপুরের খাবার সবার সাথে খেতে পারে। ভাত খেতে খেতে কন্যাও স্ত্রীকে শিশুপার্কে যাবার জন্য তাড়াতাড়ি রেডি হতে হবে।
আরিফ কন্যা জাহরা ও স্ত্রী ইয়াসমনিকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে রাস্তায় গাড়ীর জন্য দাড়িয়ে আছে। শুক্রবার ছুটির দিন বলে খালি টেক্সী পাওয়া যাচ্ছেনা। তাদের পাশে আরো অনেক যাত্রী টেক্সীর আশায় দাড়িয়ে আছে। প্রায় ৪০ মিনিট দাড়ানোর পর একটি টেক্সী পেল তাও দ্বিগুন ভাড়া দিয়ে। আর দেরী না করে তারা টেক্সীতে ওঠে পড়ল।
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে স্কুলে যাওয়া, স্কুল থেকে এসে হুজুরের কাছে আরবী পড়া, সন্ধ্যা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত মায়ের কাছে পড়তে গিয়ে এই মেয়েটা হাপিয়ে উঠছে। আজকের এই ছুটির দিনে বাবা-মায়ের সাথে শিশুপার্কে প্রবেশ করেই জাহরা আনন্দে নেচে উঠল। মেয়েকে ট্রেনের টিকেট হাতে ধরিয়ে আরিফ তার স্ত্রীকে নিয়ে শিশুপার্কে হাটতে শুরু করল।
নামে শিশু পার্ক হলেও যুবক-যুবতীদের আনাগুনাই বেশী। যুবক-যুবতীরা একজন আরেকজনের হাত ধরে পার্কের বিভিন্ন জায়গায়া বসে আছে। আরো কত যে দৃশ্য দেখতে হচ্ছে। এই দৃশ্য দেখে আরিফ একটু অবাক হয়। স্ত্রীকে বলে, শিশুপার্কে এসব কি হচ্ছে? বাচ্চারা এসব দেখে নষ্ট হয়ে যাবে না? তার স্ত্রী বলে, জাহরার আব্বু চলো, এ দৃশ্য দেখতে আমারও ভাল লাগছে না।
শিশু পার্কে আর ঘুরাফেরা না করে তারা একটি শপিং মলে গেল। শপিং মলের সপ্তম তলায় কিছু খেতে গিয়েও একি দৃশ্য দেখতে পেল। যুবক-যুবতীরা রেষ্টুরেন্টে বসে আড্ডা দিচ্ছে। কেউবা মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত। কেউবা টেবিলের উপর ল্যাপটপ চালাচ্ছে। তাদের চিল্লাচিল্লিতে আরিফের কান ফেটে যাবার অবস্থা।
রেষ্টুরেন্টের এক কোনায় আরিফ তাদের পাশের ফ্লাটের করিম সাহেবের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে রেশমীকে একটি ছেলের সাথে আড্ডা দিতে দেখল। জাহরা বলল, আম্মু ঐ যে রেশমী আপু। ইয়াছমিন কন্যাকে চুপ থাকতে বলে তাড়াতাড়ি কিছু খেয়ে শপিংমল থেকে বাসায় ফিরল।
বাসায় ফিরে আরিফ তার স্ত্রীকে বলে, রেশমী মেয়েটা ছেলেদের সাথে ঘুরে বেড়ায় তার বাবা-মা কিছুই জানে না? ইয়াছমিন বলে, বাদ দাও। আজকাল ছেলে-মেয়েরা বাবা-মার কথা শুনে নাকি? কোচিং এ যাবার নাম করে শপিং মলে/পার্কে ঘুরে বেড়ায়। বাবা-মা কতক্ষণ পাহারা দিয়ে রাখবে? আরিফ বলে, তাই বলে ছেলে-মেয়েরা যা ইচ্ছে তাই করে বেড়াবে? শুনো জাহরার আম্মু, জাহরা বড় হলে কিন্তু সব সময় পাহারার মধ্য রাখতে হবে। আচ্ছা ঠিক আছে সেটা পরে দেখা যাবে বলে ইয়াছমিন রান্নাঘরে চলে গেল.....
(চলবে---)
বিষয়: সাহিত্য
১২৭৩ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন