আত্মহত্যার পরিণাম কি হতে পারে একজন মাদ্রাসার ছাত্রীর জানার কথা।
লিখেছেন লিখেছেন সিটিজি৪বিডি ১০ মার্চ, ২০১৪, ১২:৩১:২৫ দুপুর
আজ চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকায় দেখেছি পড়ালেখা নিয়ে মায়ের সাথে রাগ করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে জান্নাতুল নাঈম (১৬) নামের এক আলিম পড়ুয়া মাদ্রাসা শিক্ষার্থী। আত্মহত্যার পরিণাম কি হতে পারে একজন মাদ্রাসার ছাত্রীর জানার কথা। তারপরেও সে মায়ের উপর রাগ করে আত্মহত্যা করেছে। খুব দুঃখজনক ঘটনা।
আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েরা বাবা-মায়ের সাথে রাগ করে আত্মহত্যা করে। স্ত্রী তার স্বামীর উপর রাগ করে অথবা নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করে। কেউবা ব্যবসা করতে গিয়ে লস খেয়ে আত্মহত্যা করে। আরো বিভিন্ন কারনে মানুষ আত্মহত্যা করে থাকে। আত্মহত্যা করে দুনিয়া থেকে বিদায় নিলেই কি সমস্যার সমাধান হবে?
আল্লাহ তায়ালা আামদেরকে সৃষ্টি করেছেন। আবার আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে মৃত্যু দান করবেন। আমরা মুসলমানরা তাই বিশ্বাস করি। এখন কেউ ইচ্ছেকতৃ ভাবে নিজেকে হত্যা করলে তার পরিণাম হবে ভয়াবহ।
ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে আত্মহত্যার পরিনামঃ
------------------------------------------------
ইসলামী দৃষ্টিকোণে বিষয়টি আলোচনা করা যায়। আল্লাহ মানুষকে মরণশীল করে সৃষ্টি করেছেন। তিনিই মৃত্যু ঘটান। কিন্তু আত্মহত্যার ক্ষেত্রে বান্দা স্বাভাবিক মৃত্যুকে উপেক্ষা করে মৃত্যুকে নিজের হাতে নিয়ে নিজেই নিজকে হত্যা করে ফেলে। এ কারণে এটি একটি গর্হিত কাজ। তাই আলাহ তা মোটেই পছন্দ করেন না। এ কারণে যদিও শরিয়তে আত্মহত্যাকারীর জানাযা হয় তবু রাসূল (সাঃ) তা নিজে পড়াননি। সাহাবী দ্বারা তা পড়ানো হয়। এ সূত্র ধরে আমাদের সমাজেও উচ্চ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন আলেমের স্থলে অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন আলেম দ্বারা আত্মহত্যা কারীর জানাযার নামায পড়ানো হয়।
কোরআনের বানীঃ
আত্মহত্যা মহাপাপ। এ কাজ থেকে বিরত থাকতে মহান আল্লাহ্ তা’আলা বিশেষভাবে নির্দেশ দান করেছেন এবং এর পরিনামের কথা ভাববার জন্য কঠোর ও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির বর্ণনা দিয়ে মহা পবিত্র আল কুরআনে আয়াত অবতীর্ণ করেছেন।
মহান আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন, “আর তোমরা নিজেদের হত্যা করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়ালু। এবং যে কেউ জুলুম করে, অন্যায়ভাবে উহা (আত্মহত্যা) করবে, অবশ্য আমি তাকে অগ্নিদগ্ধ করবো, আল্লাহর পক্ষে উহা সহজসাধ্য।” (সূরা-নিসা-২৯-৩০)
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর বানীঃ
ক) সাহাবা আবু হোরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি নিজেকে পাহাড়ের ওপর থেকে নিক্ষেপ করে আত্মহত্যা করে, সে জাহান্নামের মধ্যে সর্বদা ঐভাবে নিজেকে নিক্ষেপ করতে থাকবে।
খ) যে ব্যক্তি বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে সেও জাহান্নামের মধ্যে সর্বদা ঐভাবে নিজ হাতে বিষপান করতে থাকবে।
গ) যে কোন ধারালো অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করেছে তার কাছে জাহান্নামে সে ধারালো অস্ত্র থাকবে যার দ্বারা সে সর্বদা নিজের পেটকে ফুঁড়তে থাকবে।
ঘ) রাসূল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে সে দোজখে অনুরূপভাবে নিজ হাতে ফাঁসির শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। আর যে বর্শা ইত্যাদির আঘাত দ্বারা আত্মহত্যা করে- দোজখেও সে সেভাবে নিজেকে শাস্তি দেবে।
ঙ) হযরত জুনদুব ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, তোমাদের পূর্বেকার এক লোক আহত হয়ে সে ব্যথা সহ্য করতে পারেনি। তাই সে একখানা চাকু দিয়ে নিজের হাত নিজেই কেটে ফেলে। এর পর রক্তক্ষরণে সে মারা যায়। আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা নিজেকে হত্যা করার ব্যাপারে বড় তাড়াহুড়া করে ফেলেছে। তাই আমি তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিলাম।
("ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে আত্মহত্যার পরিনাম" আর্টিকেলটি কয়েকবছর আগে পত্রিকা থেকে সংগ্রহ করে বিভিন্ন ব্লগ ও ফেইসবুকে শেয়ার করেছি। আপনারা ও শেয়ার করে দিন। যারা আত্মহত্যা করতে চায় তারা আত্মহত্যার পরিণাম সম্পর্কে জানতে পারলে আর আত্মহত্যা না করতে পারে।)
বিষয়: বিবিধ
১৪৮৩ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যেখানে প্রচন্ড আবেগের ঝড় বইতে শুরু করে।
তাদের পরিবর্তনের ব্যাপারে আমাদের পরিবার,সমাজ অসচেতন আর একদম উদাসীন।
যতই ইসলামিক জ্ঞান থাকুক না কেন পরিবার ভিত্তিক যদি সুষম ভালবাসার বন্ধনের অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি পাশাপাশি সন্তানদেরকে যদি আত্নসচেতন না করে দাড়ানো কৌশল শিখে দেওয়া না হয় তাহলে সুইসাইড এড়ানো ভয়ানক কঠিন।কানাডা আমেরিকার মত দেশগুলোর অবস্থা আরো খারাপ।
জীবনযুদ্ধে পরাজয় মানুষকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেয়!
আত্মহত্যা ঝুঁকিতে টিনেজ কিশোর-কিশোরীরা
আত্মহত্যা প্রবণতা কেন?
বিষন্নতা এবং মিতা নূরের মৃত্যু
আত্মহত্যা এবং অন্যান্য...
দেশে বছরে ১০ হাজার লোক আত্মহত্যা করে; অভিনেত্রী মমর আত্মহত্যার চেষ্টা: তিনি কি বিষন্নতায় ভূগছেন?
পড়ুনঃ http://www.psychobd.com
মন্তব্য করতে লগইন করুন