۞۞ যে কক্ষে হানিমুন সে কক্ষেই ডাঃ আসমা সুলতানার আত্মহত্যা! ۞۞
লিখেছেন লিখেছেন সিটিজি৪বিডি ০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৫:২৪:৪৯ বিকাল
আত্মহত্যা করার আগে স্বামীর জন্য লিখা চিঠিঃ
"বিয়ের পর থেকে তুমি এবং তোমার মা আমাকে একদম সহ্য করতে পারতেনা। কেনো ? আমি তোমার কাছে এবং তোমার মায়ের কাছে এতো খরাপ ছিলাম কিনা জানিনা। কই, কখনোতো কোন নির্যাতনের প্রতিবাদ করিনি। রাগ করে বাড়ি ছেড়ে আসলাম। তার পরেও তো কিছুই বলিনি। কেনো ডির্ভোস দেয়ার জন্য রিগ্যাল নোটিশ পাঠালে? আমার বাবার প্রতি কেনো এতো প্রতিশোধ পরায়ন হলে। তোমার পাঠানো রিগ্যাল নোটিশে আমার তরফ থেকে আমি হ্যা বলে দিলাম। তোমার যা ইচ্ছে করো। আরেকটা বিয়ে করো। কোনো সমস্যা নেই। আমি বেঁচে থেকে ডির্ভোস লেটারে স্বাক্ষর করতে পারবোনা। দ্বিতীয় বিয়ে দেখার সাহস আমার নাই। তোমার উপর আমার প্রচন্ড বিশ্বাস ছিলো। কেনো বার বার আমার বিশ্বাস ভাঙ্গলে। বিশেষ করে তোমাকে ভুলতে পারছিনা আমি। পাশাপাশি তোমার মা, তোমার মামীর খুছা মারা কথা সহ্য হচ্ছেনা আমার। তাই তোমাকে চিরদিনের জন্য বিদায় দিলাম। বিরক্ত, আর অশান্ত শব্দগুলো ক্রমাগতো আমার কানে বাজে। তুমি বলতে আমি বিরক্তিকর, আমি অশান্তি। বিয়ের আগে এটা তোমাদের মাথায় ছিলোনা। বিয়ে করে আমার লাইফটা কেনো শেষ করলা।’ ইত্যাদি অনেক হ্নদয় বিদারক কথা পড়ে উপস্থিত সকলের চোখের পানি ঝরতে থাকে।
=================================
যে কক্ষে হানিমুন সে কক্ষেই আত্মহত্যা!
ইমাম খাইর, কক্সবাজার প্রতিনিধি:
যে কক্ষে হানিমুন সে কক্ষেই আত্মহত্যা করেছে আসমা নামের ঢাকার এক পর্যটক তরুণী। তার এ মৃত্যু নিয়ে দর্শকমাত্রই আফসোস করেছে। খবরে রাত অবধি ভিড় হয়েছে ওই আবাসিক হোটেলেও। তবে মৃত্যুর আগে সাদা কাগজের একটি চিরকুটে আসমা লিখে গেছে ৬ পৃষ্টার দুঃখভরা তার কথামালা। যেখানে ১০ বছরের প্রেম ভালবাসা, বিয়ে ও সংসার জীবনের কিছু দুঃখ দুর্দশার কথা রয়েছে।
কথাগুলির মধ্যে রয়েছে নির্যাতনের একটি চিত্র। এমন একটি হ্নদয় বিদারক ঘটনা লিখে চির দিনের মতো জীবনের ইতি টেনেছে কক্সবাজারের পর্যটন এলাকার বীচ সিটি রির্সোট নামক একটি আবাসিক হোটেল কক্ষে। কক্ষ নং ১১০। এ কক্ষেই বিয়ের পর হানিমুন হয়েছিলো তাদের।
হোটেল রেজিষ্টার মতে নিহত তরুণীর নাম আসমা সোলতানা (২৮) স্বামী মাসুদ, পিতা মোঃ আলমগীর, বাড়ি-ঢাকা খিলগাও। পেশায় একজন ডাক্তার।
হোটেল ম্যানেজার জানায়, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯ টায় হোটেলে ওঠে। অতীতের পরিচয়ে এবং পেশায় একজন ডাক্তার হিসেবে সম্মানের সাথে রুম দেয়। পর দিন (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল পর্যন্ত উক্ত তরুণীর কোন রকম সাড়াশব্দ না পেয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দরজা খুলতে না পেরে হোটেলর ছাল খুলে ভেতরের সিলিং ভেঙ্গে কক্ষে প্রবেশ করে। পাশাপাশি খবর পেয়ে সাংবাদকর্মীরাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
কক্ষে ঢুকতেই দেখা যায়, খাটের উপর পুরো শরীরটা পড়ে আছে। তবে বাম হাতটা খাটের উপর থেকে নিচে পড়ে ঝুলছে। বুকের উপর বিয়ের সময়কালীন স্বামী স্ত্রীর অপরূপ সাজে এক আনন্দ মুহুর্তের তোলা একটি রঙ্গিন ছবি। পাশে সাইলেন্ড করা মোবাইল ফোনটি ক্রমাগতই বাজছে। ব্যাগের পাশে পড়ে আছে তাসবির ছরা ও ইসলামিক বই। তার পাশে সাদা কাগজে লিখা ৬ পৃষ্টার শশুর বাড়ির নানা যন্ত্রনার কথা ও স্বামী কর্তৃক বারবার ডির্ভোসের হুমকি এবং আসমার পিতার প্রতি মাসুদের প্রতিশোধের চিরকুট।
প্রত্যক্ষদর্শীরা ধারণা করছেন, দিনের বেলায় ছটফট করে সময়টা কাটালেও গভীর রাতে স্বামী ও শাশুড়ির নির্যাতন এবং শ্বশুর বাড়ি কর্তৃক প্রায় সময় ডির্ভোস দেয়ার যন্ত্রনার কথা সহ্য করতে না পেরে নিজের শরীরের কাঁধের উপর স্পর্শকাতর স্থানে আলপিন ঢুকিয়ে মৃত্যুর কুলে ঢলে পড়ে।
=============================
এই খবরটি পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল। একজন ডাক্তার হয়েও আসমা সুলতানা স্বামী ও শশুরবাড়ীর উপর অভিমান করে আত্মহত্যা করেছে। তার লিখা চিঠি পড়েই বুঝা যায় যে, আসমা সুলতানা তার স্বামী মাসুদকে অনেক ভালবাসত। কিন্ত মাসুদ ও তার পরিবার তাকে সীমাহীন অপমান করতো বলে নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে না পেরে নিজের জীবনকে আত্মহত্যার মাধ্যমে শেষ করে দিয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিতে এই আত্মহত্যা মহাপাপ। কিন্তু এই পাপ কার্যে লিপ্ত হওয়ার জন্য যারা তাকে ঠেলে দিয়েছে তাদের কি কোন বিচার হবে?
বিষয়: বিবিধ
২৪৭৪ বার পঠিত, ৪৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভাই, শ্বাশুরী-বউ দ্বন্ধ নাকি জামাই-শ্বশুর দ্বন্ধ? আসমার বাবাকে জুতা পেটা করা উচিত।
হে আল্লাহ একজন শিক্ষিত দ্বীনি বুঝ সম্পন্ন নারী কতটুকু কষ্ট পেলে এই কাজ করতে পারে তা তুমি আমাদের হতেও বেশি জান । হে আল্লাহ তুমিত রহমানুর রাহিম।
আর ঐ প্রতিযোগীতায় হেরে যাওয়া পুরুষ কিংবা নারী আজ বাধ্য হয়ে জীবন বিধ্বংশী কাজে লিপ্ত - কেউ তা করে ড্রাগের আশ্রয়ে আর কেউবা এমন আত্মহ্ত্যা করে। আর এক শ্রেনী কোন অপরাধ না করেও অনাহুদ জেলের প্রকোষ্ঠে বেচে থাকে।
আর বিয়ের মাধ্যমে যদি ১০ বছরের সংসার হত তবে এই দশ বছরে তাদের কোলে আসা সন্তানেরাই তাদের ঐক্য ও ভালবাসাকে টিকিয়ে রাখত।
সবই আমাদের বর্তমান তথাকথিত আধুনিক সভ্যতার ফল।
মন্তব্য করতে লগইন করুন