۞۞ অনলাইনে পাত্র-পাত্রী দেখা--তারপর বিয়ে--۞۞
লিখেছেন লিখেছেন সিটিজি৪বিডি ০৪ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৬:২৭:০২ সন্ধ্যা
১. আমার প্রবাসী বন্ধুরাঃ
আমি, শাহাদাত ও এহতেশাম ভাই আমরা তিনজন দুবাই প্রবাসী বন্ধু। শাহাদাতের মাধ্যমে এহতেশাম ভাইয়ের সাথে পরিচয়, পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব। আমরা এই তিন বন্ধু মিলে আরব আমিরাতের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছি। এহতেশাম ভাই বিবাহিত বলে মাঝে মধ্যে দুষ্টামী করে আমাদের জন্য পাত্রী দেখতে বলতাম। উনিও দেখব দেখব বলে আমাদেরকে কথা দিতেন।
২. অন-লাইনে পাত্র-পাত্রী দেখাঃ
২০০৮ সালের জুন মাসের কোন একদিন এহতেশাম ভাই ফোন করে বলে," জামাল ভাই আপনার জন্য পাত্রী ঠিক করেছি।" ওনাকে খুব শ্রদ্ধা করি বলে এই প্রস্তাবে রাজী হয়ে গেলাম। একদিন ওনার অফিসে ওয়েবক্যামের মাধ্যমে আমাকে পাত্রী পক্ষকে দেখানো হয়। ওয়েবক্যামে আমাকে দেখে নাকি সবার পছন্দ হয়। পাত্রী ও নাকি আমাকে এক নজর দেখেছিল। আর আমি পাত্রীর পরিবারের সবাইকে দেখলেও পাত্রীকে দেখতে পারিনি বলে এহতেশাম ভাইকে পাত্রীর ছবি দেখাতে বলি। কয়েক দিন পর পাত্রীর মামার বিয়েতে তোলা ছবি ও ভিডিও চিত্রের একটি সিডি আমাকে দেখতে দেয় । আমি অফিসে বসে পাত্রীর সুন্দর সাজোগুজো ছবি ও ভিডিও চিত্র দেখে পাত্রীকে পছন্দ করে ফেলি। আমার পছন্দের কথা এহতেশাম ভাইকে জানালে "আলহামদুলিল্লাহ" বলে আমাকে একটা বায়োডাটা দিতে বলে। দুই পরিবারের বায়োডাটা বিনিময়ের পর জানতে পারি যে পাত্রী আর কেউ নন এহতেশাম ভাইয়ের শালী।
৩. পরিবারে বাধার সস্মুখীনঃ
আমার এই পাত্রী দেখা ও বায়োডাটা বিনিময়ের কথা তখনও বাসার কাউকে বলা হয়নি। পাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে গ্রীন সিগন্যাল পাওয়ার পর বাসায় জানাই। প্রবাসে পাত্রী দেখার খবর শুনে বাসার সবাই বেঁকে বসে। কোন ভাবেই কাউকে রাজী করাতে পারছিলাম না। সবার একটাই প্রশ্ন" শুধু ছবি দেখে কি পাত্রী নির্বাচন করা ঠিক হবে?" কিন্ত আমি নাছোড় বান্দা। বিয়ে যদি করতে হয় তাহলে এই পাত্রীকেই বিয়ে করব বলে জানিয়ে দিই। হাজার হলেও ঘটক বন্ধুর শালী। আমার এই কঠিন সিন্ধান্তের কাছে তারা কিছুটা পিছু হটে
৪. শিশুপার্কে পাত্রী দেখাঃ
তারপর একদিন চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের পাশের শিশুপার্কে পাত্রী দেখার ব্যবস্থা করা হয়। সেদিন আমাদের পরিবারের সবাই পাত্রীকে দেখে। আর আমি দুর প্রবাসে অফিসে বসে আল্লাহকে ডাকতে থাকি। পাত্রী দেখে আমার আপা ফোন করে বলে, জামাল, "পাত্রী আমাদের পছন্দ হয়েছে।" (রাগে বাসায় বলে দিয়েছিলাম বিয়ে করলে এই মেয়েকেই করব, তাই দেখাদেখি পর্বটা ছিল শুধুই আনুষ্টানিকতা)
৫. অপেক্ষার পালাঃ
আমাদের পরিবারের পাত্রী পছন্দ হওয়ার খবরটি আমার ঘটক বন্ধু এহতেশাম ভাইকে জানিয়ে দিই। তারপর পাত্রীর ডিগ্রী পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাদেরকে অপেক্ষা করতে বলে। আরো কয়েকমাস অপেক্ষা করতে হবে বলে এহতেশাম ভাইয়ের কাছ থেকে পাত্রীর ফোন নাম্বার সংগ্রহ দুজনে এসএমএস আদান-প্রদান শুরু করি। এসএমএসের মাধ্যমে দুজনের ভাললাগা ও মন্দ লাগার বিষয়গুলি একে অপরকে শেয়ার করি। তবে কোন দিন ফোনে কথা বলিনি।
৬. পাত্রীর সাথে সাক্ষাতঃ
২০০৯ সালের ৬ ফেব্রয়ারী বিয়ের দিন ধার্য করা হলে আমি ২০ জানুয়ারী দেশে গিয়ে পাত্রী সাথে সাক্ষাত করি। পাত্রীর অনিচ্ছা সত্বেও একদিন বাইরে ঘুরতে যাব বলে পাত্রীকে সোজা আমাদের বাসায় নিয়ে গিয়েছি। বিয়ের কনেকে বাসায় দেখে সবাই অবাক হয়। পাত্রীর পরিবারের কেউ আমাকে সরাসরি দেখেনি বলে একদিন বিয়ের কার্ড নিয়ে সোজা পাত্রীর বাড়ীতে গিয়ে হাজির হয়ে ওদেরকে বলি আমি বরের ছোট ভাই।
৭. বিয়েঃ
তিন দশকের একাকীত্ব জীবনের অবসান ঘটিয়ে ৬ ফেব্রয়ারী ২০০৯ সালে চট্টগ্রাম শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে আমাদের বিয়ের অনুষ্টান হয়। ঘটক-বন্ধু অফিসে ব্যস্ততার কারনে দেশে আসতে যেতে পারেনি বলে কিছুটা মন খারাপ ছিল। ওনি বিয়েতে উপস্থিত থাকলে আরো বেশী ইনজয় করা যেত। বিয়ের পরে পাত্রীর কাছ থেকে সেই রোমান্টিক এসমএসএম না পেলেও প্রতিমাসের প্রথম সপ্তাহে একটি এসএমএস পাই এই রকম-"টাকা পেয়েছি,ধন্যবাদ।" হাহাহা---
৮. আমাদের ঘর-সংসারঃ
আমাদের ছোট সাজানো সংসারে আল্লাহ তা'আলা দুটো সন্তান দান করেছেন। আমার কন্যা "জারিফা আমরিন" ২১ জানুয়ারী ২০১০ সালে ও আমার পুত্র "আফরাজ মাহমুদ" ১৭ ডিসেম্বর ২০১৩ সালে জন্ম গ্রহন করে। আমাদের কলিজার টুকরা দুটো কে নিয়ে আমরা অনেক স্বপ্ন দেখছি। আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের এই সুন্দর স্বপ্ন পুরণ করে দেন। আমিন।
৯. শেষ কথাঃ
একটি কথা বলে শেষ করতে চাই, আমি শুধুমাত্র একজন আদর্শবান বন্ধুর উপর ভরসা করে পাত্রী না দেখেই বিয়ে করেছি। পাত্রী না দেখে আমার মত আর কেউ বিয়ে করেছে কিনা জানিনা। এই রকম আদর্শবান বন্ধু থাকলে বন্ধুর উপর ভরসা করে প্রবাসীরা বিয়ের কাজটা সেরে ফেলতে পারে। কারন দেশে গিয়ে পাত্রী দেখা অনেক সময় সাপেক্ষের। অনেক সময় পাত্রী না পেয়ে প্রবাসীরা কর্মস্থলে ফিরে আসতে বাধ্য হয়।
২০১৪ সালে আমার প্রিয় কিছু ব্লগার বিয়ে করতে যাচ্ছেন। আমি তাদের জন্য দু'আ করছি। আল্লাহ তা'আলা যেন তাদেরকে উপযুক্ত পাত্রীর ব্যবস্থা করে দেন। আমিন।
লেখকঃ দুবাই প্রবাসী
বিষয়: বিবিধ
১১৩৬২ বার পঠিত, ৮৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
১ বাংলার দামাল সন্তান
২. জনাব নুর নবী
৩. জনাব লোকমান
৪. জনাব আজবমানুষ
৫. ইকু ইকবাল
৬. গেঁও বাংলাদেশী
৭. আওণ রাহ'বার
৮. প্রজাপতি
৯. ভিশু(?)
১০. ধ্রুব নীল
১১. প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন
১ বাংলার দামাল সন্তান
২. জনাব নুর নবী
৩. জনাব লোকমান
৪. জনাব আজবমানুষ
৫. ইকু ইকবাল
৬. গেঁও বাংলাদেশী
৭. আওণ রাহ'বার
৮. প্রজাপতি
৯. ভিশু(?)
১০. ধ্রুব নীল
১১. প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন
আমার নাম কই।
আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি
এর মানে কি
বাহ প্রতিযোগীতা দারুন চলছে জমে উঠুক এই কামনায়।
তো ধ্রুব নীলের সিরিয়াল কততে?
জামাল ভাইয়ের আগের করা লিস্টের সাথে কিছু অতিরিক্ত ব্যাচেলর নিম্নরূপ-
১ বাংলার দামাল সন্তান
২. জনাব নুর নবী
৩. জনাব লোকমান
৪. জনাব আজবমানুষ
৫. ইকু ইকবাল
৬. গেঁও বাংলাদেশী
৭. আওণ রাহ'বার
৮. প্রজাপতি
৯. ভিশু(?)
এর সাথে আব্দুল্লাহ শাহীনের নামটাও দেয়া হোক।
বিয়ের পর এই দুই চাঁদের কণাকি ভাবির পক্ষ থেকে আপনার জন্য রোমান্টিক এস এম এস নয়কি ?
আল্লাহ তায়ালা যেন আপনাদের সব জায়েজ স্বপ্ন পুরণ করে দেন। আমিন।
বিয়ের পরে আর কোন দিন এসএমএস পাইনি। সেই রোমান্টিক এসএমএসের অপেক্ষায় থাকি--হাহাহা। আমি তাহলে বিয়ে না করে শুধু এঙ্গেজ্ড হয়েই থাকবো, যাতে সার জীবন রোমান্টিক এসএমএস পাই
আল হামদুলিল্লাহ, আমার শেষ।
ভাবীকে সালাম আর জারিফা আর মাহমুদকে অনেক অনেক আদর।
কথাটা সবার উদ্দেশ্যে।
ধন্যবাদ এই দুবাই প্রাসিটাকে- সরি অভিনন্দন।
আর হ্যা আপনার যে টাকা ভাগ করতেছেন- আমার সেই একটা দিবেন- না হয় আমি কী করটে পারি জানেনতোঁ???
ধন্যবাদ এই দুবাই প্রবাসিটাকে- সরি অভিনন্দন।
আর হ্যা আপনার যে টাকা ভাগ করতেছেন- আমার সেই টাকা থেকে একটা টাকা দিবেন- না হয় আমি কী করটে পারি জানেনতোঁ???
মন্তব্য করতে লগইন করুন