۞۞ যৌথ পরিবারের ঐক্য ধরে রাখার জন্য বউদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকা জরুরী ۞۞
লিখেছেন লিখেছেন সিটিজি৪বিডি ১৪ নভেম্বর, ২০১৩, ০৫:৫৯:৫০ বিকাল
আমাদের দেশের যৌথ পরিবার গুলো বিলুপ্তির পথে। আমাদের পরিবার গুলোতে সংসারের খরচের টাকা ও সংসারের কাজ-কর্ম নিয়ে বউ-শাশুড়ি-স্বামীর সাথে মান-অভিমান-ঝগড়া শুরু হয়। বেশী টাকা উপাজর্নকারীর বউরা তাদের স্বামীদেরকে পৃথক হয়ে বসবাস করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। অন্যদিকে কম উপার্জনকারীকে নীরবে সবকিছু সহ্য করতে হয়। টাকা কম উপার্জন করার শাস্তি স্বরূপ তার বউকে ঘরের বেশীর ভাগ কাজ করতে হয়। আমাদের সমাজে এই চিত্র আমরা প্রায় দেখি। অবস্থা চরম আকার ধারন করলে কোন এক সময় যৌথ পরিবার ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। বৃদ্ধ মা-বাবাকে নিয়ে টানাটানি শুরু হয়। বোনদের প্রতি অবহেলা করা হয়।
সংসারে কেউ বেশী আবার কেউ কম টাকা উপার্জন করে। সবাই সমান ভাবে উপার্জন করতে পারে না। তাই বলে কম উপার্জনকারীর উপর ক্ষীপ্ত হয়ে পৃথক করে দেয়া মোটেও উচিত নয়। তাকে ও ভাল কিছু করার সুযোগ দিতে হবে। সংসারে এক ভাই সুখে থাকবে অন্য ভাই কষ্টে থাকবে পৃথিবীর কোন বাবা-মা চাইবে না।
রাজু ,সাজু, মনি তিন ভাই। তিনজনই বিবাহিত। তিনজনের ৫ সন্তানসহ তাদের বাবা-মাকে নিয়ে শহরে বসবাস করে। একত্রে বসবাস করে বলে সংসার চালাতে তাদের কষ্ট হয় না। সবাই সাধ্যমত খরচের টাকা শেয়ার করে।
এখন যদি কোন কারনে সংসার ভেঙ্গে যায় তাহলে তিনজনকে আলাদা বাসা নিতে হবে। তিনজনকে বাসা ভাড়াসহ সংসারের যাবতীয় খরচ নিজেদেরকে বহন করতে হবে।
সংসারে কে বেশী আয় করল কে কম আয় করল, কে বেশী কাজ করল কে কম কাজ করল এই বিষয়গুলো নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ না করে যদি একটু ছাড় দিয়ে সবাই মিলেমিশে যৌথভাবে বসবাস করে তাহলে সংসারে আয়-উন্নতি বাড়বে। সঞ্চয় বাড়বে। সন্তানেরা সামাজিক হবে। পড়ালেখায় প্রতিযোগিতা বাড়বে। সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। বাবা-মারা ছেলেদের প্রতি ও বউদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে। বোনরা ভাইদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। আত্বীয়-স্বজনরা প্রশংসা করবে।
তাই যৌথ পরিবারের ঐক্য ধরে রাখার জন্য বউদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকা খুব জরুরী। যৌথ পরিবারে সদস্য সংখ্যা বেশী বলে কাজ ও বেশী থাকে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংসারের কাজ গুলো সুষ্ট ও সুন্দর ভাবে সম্পন্ন করা যায়।
যৌথ পরিবারে থাকার সুবিধাঃ
যৌথ পরিবারে আপনি আপনার সন্তানটাকে ভালোমত লালন-পালন করতে পারবেন। দেশের বাইরে থাকলে সন্তানের জন্য দুশ্চিন্তা করতে হবে না। কথায় আছে যত মানুষ তত কাজ, নাই মানুষ নাই কাজ। কিন্তু মানুষ বেশি থাকলে সে আপনাকে সাহায্য করতে পারে। বাচ্চারা দাদা-দাদি বা নানা-নানির সান্নিধ্য পাচ্ছে। তারা তাদের কাছ থেকে রূপকথার গল্প, অতীত জীবন প্রণালী সম্পর্কে জানতে পারছে। বাচ্চাদের মানসিক গঠন ও বেড়ে ওঠায় যৌথ পরিবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাছাড়া বাচ্চারা একাকিত্বের দুঃসহ কষ্ট থেকে মুক্তি পায়। দাদা-দাদি, নানা-নানির সঙ্গে তারা হেসে খেলে সময় কাটাতে পারে। তা না হলে টিভি আর কম্পিউটারে ভিডিও গেমস নিয়ে তাদের সময় কাটাতে হয়। যা শিশুর মানসিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে।
শুধু শিশুদের ক্ষেত্রেই নয়, যৌথ পরিবারে সদস্যদের ভালো বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে আর্থিক সচ্ছলতাও আসে। একেকজন একেকভাবে সাহায্য করে।
যৌথ পরিবারে সুখী সুন্দরভাবে বসবাস করতে হলে পরিবারের সব সদস্যকে কয়েকটি উপদেশ মেনে চলতে হবে।
۞ মনটা পরিষ্কার রাখুন।
۞ সবার সঙ্গে মানিয়ে চলুন।
۞ অহংবোধ ঝেড়ে ফেলুন।
۞ কিছু করলে তা নিয়ে বড়াই করবেন না
۞ স্বামীর উপার্জিত অর্থ নিয়ে ফ্যাসাদ করবেন না।
۞ আপনার স্বামী বেশি রোজগার করে তাই তিনি সংসারে বেশি টাকা দেন, দিতেই পারেন তাই বলে আপনি এই নিয়ে মন খারাপ করবেন না।
۞কোনো সমস্যা হলে সরাসরি প্রশ্ন করেন। অন্যের মাধ্যমে জেনে কাউকে সন্দেহ করবেন না। তথ্যটা ভুলও হতে পারে।
যৌথ পরিবার সবার কাছে অধিক প্রয়োজনীয়, আর সবাই মিলে একসঙ্গে বাস করার মধ্যে আলাদা একটা আনন্দ আছে। তাই একক পরিবার নয়, যৌথ পরিবার গঠনে অধিক আগ্রহী হয়ে উঠুন। সবাইকে নিয়ে সুখের সংসার গড়ে তুলুন।
বিষয়: বিবিধ
১৯৪৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন