সাঈদীর ফাঁসির বিরুদ্ধে কলকাতার শহীদ মিনারে ৫০ হাজার মানুষের সমাবেশ
লিখেছেন লিখেছেন স্বাধীনতার কথা ৩১ মার্চ, ২০১৩, ০১:৫৩:১৬ রাত
বাংলাদেশে ইসলাম ধর্মের অবমাননায় ক্ষোভ
শুধু বাংলাদেশে নয়, এবার প্রকাশ্যেই কলকাতায় সমাবেশ করে জামায়াতের সাজাপ্রাপ্ত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে শনিবার কলকাতার শহীদ মিনারের সামনে সমাবেশ করলো পশ্চিমবঙ্গের ১৫টি ইসলামিক সংগঠন।
বাংলাদেশে কিছু ব্লগারদের দ্বারা ইসলাম ধর্মের অবমাননা ও তাদের প্রতি সেদেশের সরকারের নীরব সমর্থনের প্রতিবাদে গতকাল কলকাতার শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ করে পশ্চিমবঙ্গের ১৫টি মুসলিম সংগঠন। এসব সংগঠনের পক্ষে মুহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, বাংলাদেশের শাহবাগ স্কয়ারে জমায়েতে যে ভাষায় ব্লগার রাজীব হায়দার শোভনসহ অন্যদের দ্বারা প্রিয়নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-কে নিন্দার নীরব সমর্থন করা হয়েছে এবং ভিন্ন মতের মিডিয়াকে আক্রমণ করা হয়েছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানাতেই এ সমাবেশের আয়োজন। তিনি বলেন, রাজীব নিজের এসব ব্লগে ইসলামের প্রতি এমন সব কুরুচিপূর্ণ মিথ্যা ও মনগড়া লেখা পোস্ট করেছেন যা ইসলামধর্ম অনুসারী দূরের কথা কোনো সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে কয়েক লাইন পাঠ করা সম্ভব নয়। অথচ বাংলাদেশ সরকার এর প্রতিবাদ তো করেইনি উপরন্তু ইসলাম দরদি মানুষদের শাস্তি দিতে পদক্ষেপ নিয়েছে। তাই ইসলাম অবমাননার প্রতিবাদে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এই বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেয়। সমাবেশে ইসলামকে আক্রমণের তীব্র প্রতিবাদ জানান পশ্চিমবঙ্গ সুন্নত অল জামাতের প্রধান মুফতি আবদুল কাইয়ুম, আবদুল মাতিন।
সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন, পশ্চিমবঙ্গ সুন্নত অল জামাত, ওলামা পরিষদ, পশ্চিমবঙ্গ অঞ্জুমানে ওয়ায়েজীন, অল বেঙ্গল মাইনোরিটিসহ ১৫টি সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে গতকাল কলকাতার ধর্মতলার কাছে শহীদ মিনারে জমায়েত হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, অশালীনতার দিক দিয়ে ইসলাম বিদ্বেষী সালমান রুশদি, হিরসি আলি, তসলিমা নাসরিন প্রমুখের লেখা রাজীবের ব্লগের কাছে কিছুই নয়। আমাদের প্রাণপ্রিয় নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) ও তাঁর পরিবার-পরিজন সম্পর্কে এমন অশ্লীল ও বিকৃত রুচির লেখা এর আগে কেউ লিখেছে বলে মনে হয় না।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, রাজীব হায়দার শোভনের মতো একজন ইসলাম বিদ্বেষী ও রাসুল (সা.) অবমাননাকারীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ সরকার তার প্রতি যে সম্মান প্রদর্শন করেছে তা সম্পূর্ণ ইসলাম পরিপন্থী। বস্তুত আমেরিকা ও ব্রিটেনের মতোই বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকার প্রতি ধিক্কার জানানো হয়েছে।
১৫টি মুসলিম সংগঠনের দাবি, বাংলাদেশে যাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে তারা ‘গুণী’ মানুষ। তাই তারা বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। কামরুজ্জামানের অভিযোগ, কলকাতার দুটি বাংলা দৈনিক আমাদের সম্পর্কে ভুল খবর ছাপছে। তারা লিখেছে ‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গোয়েন্দারা রিপোর্ট দিয়েছেন যে, পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম সংগঠনগুলোর কাজকর্ম ইদানীং বেড়ে গেছে। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলো তো বটেই, রাজ্যের অন্যত্রও তারা সক্রিয়। এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বাংলাদেশের ইসলামপন্থী আন্দোলনের সমর্থনে কলকাতার শহীদ মিনারে ১৫টি মুসলিম সংগঠন জমায়েতের ডাক দিয়েছে। উদ্যোক্তাদের দাবি তাদের সঙ্গে কোনো নিষ্ক্রিয় সংগঠন নেই। গত ফেব্রুয়ারিতে কলকাতার দুটি মুসলিম সমাবেশ হয়। সংগঠকদের নিজেদের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ থাকলেও দু’পক্ষেরই অভিযোগের তীর ছিল মমতার সরকারের বিরুদ্ধে। দুটি সমাবেশ থেকেই অভিযোগ তোলা হয়েছিল, ‘পরিবর্তনের সরকার’ মুখেই মুসলমানদের প্রতি দরদ দেখাচ্ছে, বামফ্রন্ট সরকারের মতোই তারাও আসলে সংখ্যালঘুদের প্রতি উদাসীন। বেশ চড়া সুরে এক সময়ের সিপিএম বিরোধী নেতারা সমাবেশে সরব হন।
ইসলামি সংগঠনগুলোর কাজকর্ম সম্পর্কে গোয়েন্দা রিপোর্ট রাজ্য সরকারের পক্ষে মোটেই স্বস্তিকর নয়। এ রাজ্যে যেসব সংগঠন মুসলিমদের মধ্যে কাজ করে, তাদের দু’ভাগে ভাগ করেছেন গোয়েন্দারা। একটি মৌলবাদী এবং অন্যটি অমৌলবাদী সংগঠন। মৌলবাদী সংগঠনের সংখ্যা মোট আটটি। আর অমৌলবাদী ১১টি সংস্থার চলাফেরায় নজর রাখছেন গোয়েন্দারা। এসব সংগঠনের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে কাদের যোগাযোগ, কোথায় তারা যাচ্ছেন, বিদেশ থেকে কোনো সাহায্য পাচ্ছেন কি না, এসবই খতিয়ে দেখেছে রাজ্যের গোয়েন্দা পুলিশ
।Click this link
বিষয়: বিবিধ
২০০০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন