মক্কা-মদিনার স্মৃতি : পর্ব-(১৩)
লিখেছেন লিখেছেন আবু তাহের মিয়াজী ১৫ মে, ২০১৬, ০৩:৪২:১৮ দুপুর
এইদিকে ওমরার কাজ শেষকরার দু'দিন যাবৎ কোন নেটের সাথে যোগাযোগ ছিলনা আমাদের। তিনদিন পরে হঠাৎ আমাদের প্রাণপ্রিয় শ্রদ্বেয় ব্লগার বাহার ভাইকে ফোন দিযে আমাদের অবস্হান জানালাম। কিছুক্ষণ পরেই না-জানা নাম্বার থেকে ফোন। মিয়াজী ভাই আমি ব্লগার নজরুল ।
নজরুল ভাইয়ের সাথে কথা বলে মনে হল অনেক পুরানা বন্ধু । নেটে নাম দেখেছি কিন্তু এত আন্তরিকতা আগে জানা ছিলনা। বার বার ফোন, ভাই আপনারা চলে আসেন জেদ্দায়, আমার দোকানে একা আমি, কষ্ট করে চলে আসেন। এমন করে দিনে কয়েকবার ফোন দিয়ে যেতে বললেন। হাবিব ভাই শশুরালয় তিনদিন যাবৎ। আমি একাই মক্কাতে, উনি ও ফোন করে বললেন মিয়াজী ভাই আপনি চলে আসেন এক সংগে নজরুল ভাই এর সাথে দেখা করব। আর শ্বশুরবাড়ির এরা কি শুরু করেছে আমাকে যেতে দিচ্ছেনা, আপনি আসলে এদেরেকে বুঝিয়ে শুনিয় নিয়ে যেতে পারবেন। সব মিলিয়ে চিন্তাভাবনা করে বললাম আচ্ছা আমি আসছি।
খানিক পরেই রওয়ানা হলাম জেদ্দার উদ্দেশ্য। টেক্সি ড্রাইভারকে যে জায়গারর কথা বলেছি সে অন্য জায়গায় নামিয়েছে। অনেকেই মক্কার টেক্সি ড্রাইভারদের ব্যাপারে সচেতন করে থাকে কিন্তু কিছুই করার নেই... নতুন বলে কথা। তবে সমস্যা হয়নি হাবিব ভাইকে ফোনে জানালাম আমি এই জায়গা আছি। উনি উমামার চাচাত মামা মানে হাবিব ভাইয়ের শালাকে সাথে নিয়ে চলে আসলেন গাড়ি নিয়ে। নিয়ে গেলেন শ্বশুরালয়।বাসায় পৌছাইতে সামনে চলে আসলো ফ্রেস জুস বিস্কুট কেক আরো কি কি মনে নেই।
নাস্তার কিছুক্ষণ পরে, হাবিব ভাইয়ের চাচা শ্বশুর নিয়ে গেলেন বাহিরে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে অনেক কিছুদূর দেখালেন শ্বশুর জামাইকে অনেকের সাথে পিরিচয় করালেন আমাকে উনার বন্ধু পিরিচয় দিচ্ছেন এদিকে আমার হিংসায় যে কেমন লাগছিল থাক বলব না! এরে মাঝে মাগরিবের সময় হয়েছে। মসজিদে নামাজে দাঁড়িয়ে দেখি হাবিব ভাইয়ের চাচা শ্বশুর ইমামতি করছে। দেখে থমকে গেলাম উনি ওখানে কয়েকটি কারখানার মালিক বাসাবাড়ি দেখে কেহু বলবে না উনি বাংলাদেশি। মনে হবে সৌদিয়ান শেখ। এক কথায় অনেক ভালো অবস্থান উনাদের।
নামাজের খনিক পরে হাবিব ভাইয়ের চাচা শ্বশুর আমাদের নিয়ে চললেন জেদ্দার উদ্দেশ্য। এদিকে আমাদের আটকে থাকা মনের কোণে দীর্ঘদিনের পোষিত স্বপ্নের এযে সত্যিই বাস্তবরূপ! অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল!চলে গেলাম আমরা দু'জনে সেই নজরুল ভাই এর দরবারে , সালাম , আলিংগন দিয়ে কথা শুরু হলো অনেক বিষয় নিয়ে। অবাক হলাম। আত্মীয় নয়, কিছু নয়। নেটে পরিচয় শুধু টেলিফোনে কয়েকএকবার কথা। অবশ্য উনি টেলিফোনের আলোচনাতেও আন্তরিকতার কোন কমতি ছিল না। অনেক মানুষ টেলিফোনে আন্তরিক মনে হলেও বাস্তবে কিছু ভিন্ন থাকে। কিন্তু নজরুল ভাইয়ের তুলনা উনি নিজেই। আমাদের আড্ডার মাঝখানে মিষ্টিভাসি এসে আলিংগন করে পরিচয় দিল জিন্নাহ ভাই। জিন্নাহ ভাইও আন্তরিকতার সাথে আড্ডায় যোগ দিলেন। এরি মধ্য নজরুল ভাই নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে নাস্তা করালেন। যেই সেই নাস্তা নয়-বাহারী নাস্তা সাথে ফ্রেস জুস। অল্প সময় হাতে থাকায় চলে আসতে হলো ঘন্টা দুয়েক পরে, গিফ্ট পেলাম দেশে কথা বলার জন্য মোবাইলে টাকা লোড করে দিলেন। অনেক কিছু, তার চাইতে আন্তরিকতায় সিক্ত আমরা দুইজন। নজরুল ভাই আর জিন্নাহ ভাই এর প্রতি।
নজরুল ভাই আর জিন্নাহ ভাইয়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম হাবিব ভাইয়ের শ্বশুরালয়। রাতের খাবারের ডাক পড়েছে রাত প্রায় একটায়। খেতে বসে আইটেম দেখে খালী চেয়ে চেয়ে দেখতে থাকলাম। যদি ভূল না হয় ১৫/১৮ আইটেম হবে। নতুন জামাই কে খাওয়াবে বলে একটা খাসী জবাই গরুর গোসত আর ভাজি, বর্তা, শাগ, এসব কয়েক আইটেম করে। মাছ ও কয়েক আইটেম সব শেষে প্রতিজনের জন্য একটা করে মাত্র মুরগী ফ্রাই।
একেবারে এলাহী কান্ডবান্ড। ভাবলাম ছবিতোলি কিন্তু তারা সামনে থাকায় উঠানো হল না। চাটগাঁও এর খানার তারিপ শুনেছি এই দিন বাস্তবতা পেলাম।
খাওয়া শেষকরে গেস্ট রুমে গিয়ে দেখি এই ফল ফলাদি হাজির আমাদের দুজনের জন্য। কেহো ছিলনা এখানে তাই ছবিতোলে রাখলাম...
চলবে ...
বিষয়: বিবিধ
১৩১৭ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন