মক্কা-মদিনার স্মৃতি : পর্ব-(১১)
লিখেছেন লিখেছেন আবু তাহের মিয়াজী ১২ মে, ২০১৬, ০২:২৫:৫৭ দুপুর
সাফা থেকে পৌছেগেলাম মারওয়া পাহাড়ে।সাফা পাহাড়ে দাড়িয়ে আবার কাবাঘরের দিকে তাকিয়ে দু হাত উপরে উঠায়ে সেই দোয়া গুলো পড়লাম, যা আমি সাফা পাহাড়ে পড়েছিলাম। এবং আবার হাটা শুরু করলাম সাফা পাহাড়ের দিকে। ওখানে এসে সেই আগের মতো দোয়া করলাম এবং ফিরে গেলাম মারওয়া পাহাড়ের দিকে। মাঝ খানে সবুজ বাতির স্থানে দৌড়াই। এই ভাবে আমি ৭বার ছাফা আর মারওয়ার মাঝে হাটলাম। ছাফা থেকে মারওয়া পৌছেছি ১বার হল। আবার মারওয়া থেকে ছাফা এসেছি ২বার হল। মানেঃ ৭নম্বরের হাটা গিয়ে শেষ হয়েছে মারওয়া পাহাড়ে।সাফা মারওয়াতে আমাদের দুই নাম্বার চক্কর চলছিল এরিমধ্য জোহরের নামাজের জামায়াতের ইকামত শুরু হয়েছে। আমরা চক্কর বন্ধকরে নামাজে দাঁড়িয়ে গেলাম। নামাজ শেষকরে আবার চক্কর শুরু করলাম।
সাফা থেকে মারওয়া যেতে তথা ৭বার চক্কর দেয়া কম পরিশ্রমের কাজ নয়। তাই ধীরে ধীরে হাটতে থাকলাম। হাটার সময় নানাবিধ দোয়া এবং কুরআন তেলাওয়াত করতে করতে চলে আসলাম সাফা। দু‘জনে আল্লাহর কাছে আবার দোয়া করলাম। আমি স্বরণ করেছি ইসলামী চিন্তাবিদ, দার্শনিক, বিজ্ঞানী যাদের নাম স্মরণে এসেছিলো তাদের আমি অন্তর থেকে দোয়া জানিয়েছি। মহান আল্লাহ তায়ালার হাবীব মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সাঃ ) এর উপর আমরা দুরূদ ও সালাই পাঠ করেছি। এবং ইসলামিক চিন্তাবিদদের আত্মার উপরেও শান্তি বর্ষিত চেয়েছি। হজরত আবু বকর (রাঃ ) হজরত আলী (রাঃ ), ইমাম হাসান ও ইমাম হোসাইন (রাঃ ), সাহারী হজরত আবু হুরাইরা (রাঃ ), বিবি খাদিজা (রাঃ ) ও হজরত আয়েশা (রাঃ ), নবী নন্দিনী খাতুনে জান্নাত মা ফাতেমা (রা.), এছাড়া পবিত্র কুরআনে যার নাম অসংখ্যবার এসেছে হজরত ঈসা (আঃ ) মাতা বিবি মরিয়ম (আঃ ), হজরত বেলাল (রাঃ ), আলবেরুনী, আল-জাবের, আলফেসানী, ইমাম গাজ্জালী (রঃভ), ইবনে সিনা, আল্লামা ইকবাল, ইমাম বোখারী, ইমাম আবু হানিফা (রঃ ), হজরত আব্দুল কাদের জিলানী (রঃ ), খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি (রঃ ), হজরত শাহজালাল (রঃ ) যিনি পারস্য থেকে ইসলামের শান্তির বার্তা নিয়ে পাহাড় জঙ্গল মরুভূমি পার হয়ে ৩৬০ জন সহচর নিয়ে সিলেটে এসে আস্তানা স্থাপন করেছিলেন। অঝোর ধারায় কেন জানি কান্না এলো। মনে পড়তে থাকল অতীতের অনেক ইতিহাস। ইসলামের ইতিহাসের পাতায় অংকিত সেসব ইতিহাস যখন স্মৃতির পাতায় তুলে আনি, তখন তো ভীষণ ইমোশনাল হয়ে যাই।
এখন আমাদের সায়ী-এর কাজ শেষ হয়েছে। আর মাত্র ১টা কাজ বাকী। তাহলেই শেষ হবে আমাদের পবিত্র উমরার সকল কারযক্রম।
বাকী কাজটি হল মাথা মুন্ডনঃ এবার আমরা মারওয়া পাহাড়ের গেইট দিয়ে বাহিরে চলে গেলাম এক সেলুনে। গিয়ে মাথা মুন্ডন না করে চুল ছোট করার বিধান আছে বিধায় ছোট করলাম। তবে মুণ্ডন করার মাঝে সওয়াব বেশী এই কথা ভেবে ভেবে এখনো পস্তাই।
আল হামদু লিল্লাহ। মাথা চুল ছোট করার মধ্য দিয়ে আমাদের উমরার সকল কাজ শেষ হল। এখন আমরা বাসায় যাবো আর খানাপিনার হোটেল খুঁজতে লাগলাম। এদিকে হাবিব ভাইয়ের শ্বশুরপক্ষ ফোন আর ফোন। আগেই কথা হয়েছে ওমরা শেষ হলেই নিয়ে যাবে শ্বশুরপক্ষ। সেই বিষয়ে পরে লিখবো। আর পেটের খিদায় দুজনে কাহিল। খানিক সামনে এগুতেই রাস্তার পাশে দাঁড়ান এক ভদ্রলোক কে জিজ্ঞেস করলাম রেস্টুরেন্ট কোথায়। নিয়ে গেলেন সরাসরি রেস্টুরেন্টে। ওইখান থেকে পার্সেল নিয়ে চলে গেলাম হোটেলে। রুমে গিয়ে ইহরামের পোষাক খোলে নিলাম। প্রেষ হয়ে সাধারণ পোষাক পরে খেতে খেতে আসরের সময় হয়ে গেলো। এখন আমার আর ইহরাম কালীন সময়ে নিষিদ্ধ সকল কাজ করতে বাধানিষেধ নেই।
খানিক পরে হাবিব ভাইয়ের মামা শ্বশুর গাড়ী নিয়ে হাজির নতুন জামাইআদর করবে বাসায় নিয়ে.....
বিষয়: বিবিধ
১৪৩৮ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জামাই এর সাথে থাকায় তবে ভাল আদর এর ভাগ পেয়েছেন!!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন