মক্কা-মদিনার : স্মৃতি পর্ব-(৪)

লিখেছেন লিখেছেন আবু তাহের মিয়াজী ০২ মে, ২০১৬, ১২:১৮:২২ দুপুর



এই ক্ষুদ্র জীবন চলার বাঁকে বাঁকে সকলেরই প্রিয় কিছু স্মরণীয় মুহূর্ত থাকে যা শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তির বাতিঘর হয়ে জ্বলজ্বল করে ওঠে আমোদী সূরে একান্ত নিরালায়। প্রতিক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে শুভদিন যেইমাত্র উঁকিঝুঁকি, সেইদিন হৃদয়ে সীমাহীন ভাবনার কলিগুলো ঊর্মিমালা সুর বইতে লাগলো। অন্তর জুড়ে বিরাজ করছিলো আশ্চর্য ধরণের এক অব্যক্ত ভাবনার। সারারাত দু’চোখে এক ফোঁটাও ঘুম এলো না। অজানা এক আনন্দে। আহ! কি চমৎার দিন আজ। আজ আমরা যাচ্ছি মহান মা'বুদের ঘর কাবার গিলাফ ধরে সব দাবি ও আবদার তাকে শোনাতে! আজ আমরা যাচ্ছি প্রিয়তম রাসূলের রওজা মোবারকে আবেগ ভরা ভালোবাসার সালাম দিতে! অভূতপূর্ব এক অনুভূতি!

সকল জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটিয়ে আমার সহযাত্রী হাবিব ভাইসহ জোহরের নামাজ এবং সাথে দু'রাকাত নফল নামাজ আদায় করে মহান মালিকের দরবারে একান্ত প্রাণের আকুতি মিনতি জানাই। হে আল্লাহ্‌ আমরা যেন পরোকালে প্রিয় নবী (সঃ) এর শাফায়াত ও আপনার দিদার লাভে ধন্য হতে পারি! ইয়া আল্লাহ, আমাদের এই ওমরা সফরকে নেয়ামতে ধন্য করুন! আমরা একমাত্র আপনার কাছে প্রার্থনা করি আপনিই আমাদের একমাত্র ভরসা! হে আল্লাহ আপনি অন্তর্যামী! আপনার কাছেই অন্তরের সকল চাওয়া পাওয়া প্রার্থনার আবেদন! আপনি আমাদের এই ওমরা সফরকে কবুল করুন! আমীন।

দুপুরের লাঞ্চ সেরে বাসে চেপে বসলাম।আল্লাহর ঘরের মেহমান হয়ে। কাতার ন্যাশনাল পেট্রোলপাম্প থেকে বাস ছেড়েছে সৌদিআরবের উদ্দেশ্য। বিশাল মরুভূমি ভেদ করে বিস্তৃত রাস্তা ধরে চলছে। চলতে চলতে আবু সামরা বর্ডার প্রান্তরে।

ইমিগ্রেশনের কাছে গিয়ে বাস থামলে আছরের নামাজ সেখানে আদায় করলাম। এরই মাঝে আরো কিছু প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করে নিলাম।

খানিক পরে ড্রাইভার গাড়ী নিয়ে ইমিগ্রেশনের লাইনে দাঁড়িয়ে সবার পাসপোর্ট নিয়ে ইমিগ্রেশন কাজ সেরে কাতার বর্ডার পার হয়ে সৌদিআরব।

বর্ডার ইমিগ্রেশনে দাঁড়ালে শুরু হলো অপেক্ষার পালা। প্রায় তিন ঘণ্টাযুক্ত সময় প্রতিক্ষার প্রহর গুনতে হল। তবুও হৃদয়ে কোনোরূপ কষ্ট অনুভব হচ্ছিল না। হৃদয় বাগানে আনন্দ স্রোতে দমকা হাওয়া মনকে করছিলো উতলা।

সৌদি ইমিগ্রেশন কাজ শেষ করা হলে চেকপোস্টে অনেক সময় লেগেছিল। তবে চেকপোস্টে এক মিশরীয় অবুজ বাচ্চা উপস্থিত সবার মুহুর্তকে অনেক আনন্দময় করে তুলেছিল। সৌদি চেকপোস্টে নিয়মমতো সবাইকে বাস থেকে নেমে যেতে হল। বাসের স্টোর থেকে প্যাসেঞ্জারদের ব্যাগগুলি নিচে নামিয়ে রাখতে হল। চেকপোস্টের অফিসারগণ এক এক গাড়ী চেক করছে কুকুর দিয়ে। যেইমাত্র আমাদের গাড়ী চেক করতে কুকুর গুলি আসছিল ঘেউঘেউ করে,সাথে সাথে ছোট্ট ছেলেটাও ও শুরু করে দিলো ঘেউঘেউ।যে সময় পর্যন্ত কুকুর গুলি ঘেউঘেউ করেছিল বাচ্চা ও সেই সময় পর্যন্ত ঘেউঘেউ করেছিল। পুলিশ ও হাসল আর উপস্থিত সবাই হাসতে হাসতে গাড়ীতে উঠে মহা আনন্দে সফর শুরু করলো মক্কার উদ্দেশ্য।

চলবে......

বিষয়: বিবিধ

১১৫৯ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

367773
০২ মে ২০১৬ দুপুর ০২:২৮
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আবুধাবী থেকে সৌদি যাওয়ার পথেও আপনার মত আমাদেরও একই ধরনের পদ্ধতি মোকাবেলা করতে হয়, তবে সময়টা অনেক বেশী লেগে যায়। এর চেয়ে আর কষ্টকর কোন জিনিষ মনে হয় এই ভ্রমনে নাই। অনেক ধন্যবাদ
০৩ মে ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:১৫
305266
আবু তাহের মিয়াজী লিখেছেন : জি ভাইজান, পদ্ধতি একি। কষ্ট করে পড়ার জন্য আপনাকে ও অনেক ধন্যবাদ।
367808
০২ মে ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:৫৩
কুয়েত থেকে লিখেছেন : টিক এভাবেই আমি আরো আমার প্রিয় ১১জন ভাই সহ প্রথম ১৯৮৯ সালে ওমরার জন্য কুয়েত থেকে রওয়ানা হই সে প্রথম অনুবুতিটাই অন্যরকম। দোয়া করি আল্লাহ আপনাদের সফর সফল করুন ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের জন্যও দোয়া করবেন
০৩ মে ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:১৭
305267
আবু তাহের মিয়াজী লিখেছেন : আপনার দোয়া মহান আল্লাহ্‌ কবুল করুন। আমীন। সাথে আপনাকে ও অনেক ধন্যবাদান্তে ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন ভাইজান
367812
০২ মে ২০১৬ রাত ০৯:০৬
শেখের পোলা লিখেছেন : সাথে আমিও আছি।
০৩ মে ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:২০
305269
আবু তাহের মিয়াজী লিখেছেন : ছোট ভাইদের সাথে শ্রদ্ধেয় ভাইয়েরা থাকলে মনে সাহস বাড়ে। তাই সাথে থাকার জন্য লাল গোলাপের রক্তিম শুভেচ্ছান্তে শুভেচ্ছা জানবেন ভাইজান।
367829
০২ মে ২০১৬ রাত ১০:৫৭
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
সেই রাতটি যেন আমার জিবনেও আসে দুয়া করবেন।
০৩ মে ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:২২
305270
আবু তাহের মিয়াজী লিখেছেন : সেই রাতটি আপনার জীবনে বারবার যেন আসে, সেই কামনা নিরবধি।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File