মক্কা-মদিনার : স্মৃতি পর্ব-(২)
লিখেছেন লিখেছেন আবু তাহের মিয়াজী ২৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১০:২৬:৫৬ রাত
ভ্রমন যদি হয় মক্কা মদিনা নিজের চোখে দেখার আশায় কাবা শরীফে সালাত আদায় করার আশায় রাসুল (স)-এর রওজা জেয়ারত করার জন্য। এর চেয়ে সৌভাগ্য আর কি হতে পারে?
ব্লগের কল্যাণে হাবিব ভাইয়ের সাথে পরিচয় আস্তে আস্তে আত্মার আত্মীয়, একদিন কথায় কথায় ওমরাহ যাবার আলোচনা।
আলোচনায় মে মাস ঠিক করা হল, ঠিক করলে তো আর হয় না। পাসপোর্ট ভিসা প্রসেসিং করতে হবে। কয়েক ট্রাভেল এজেন্সীতে যোগাযোগ করা হলে সবার একটাই প্রশ্ন আপনারা কোন দেশী? জবাবে বাংলাদেশী হলে অন্য একজনের পাসপোর্ট জামানত রেখে যেতে হবে।
এই আইন কাতারে প্রতিটি ট্রাভেল এজেন্সী শুধুমাত্র বাংলাদেশীদের জন্য করেছে। কেন জানেন? আমরা বাংলাদেশী বলে কথা। আমাদের দেশের কিছুকিছু প্রবাসী ওমরাহ্ ভিসায় সৌদিআরব গিয়ে পালিয়ে কাতারে আর ফেরত আসেনা। নিয়ম হচ্ছে যেই ট্রাভেল এজেন্সী থেকে যে কয়জন ওমরাহ্ করতে যাবে সেই কয়জন (ইমেগ্র্যাশন) হিসাব করে ফেরত আনতে হবে। অন্যথায় ট্রাভেল এজেন্সীকে ছয় হাজার কাতারী রিয়েল জরিমানা গুনতে হয়। সেই জন্য অন্য একজনের পাসপোর্ট জামানত রাখতে হয়।তবে যেই প্রবাসীরা এই কাজ করে থাকেন, তারা বেশীরভাগ হচ্ছেন দালালের খপ্পরে পড়ে বেশী টাকাপয়সা খরচ করে দেশ থেকে প্রবাশে এসেছেন এবং আমার জানা মতে এটাই মুল কারণ এবং তারা ভাবেন এখান থেকে সউদি আরবে সুযোগ সুবিধা বেশী কিংবা সেখানে তাদের আত্মীয়স্বজন আছেন তাদের মাধ্যমে কাজের ব্যবস্থা হলে আয়রোজগার বেশী হবে। দেশ থেকে বেকার হয়ে ঘোরার চেয়ে বিদেশে এসে যদি কিছু অর্থ উপার্জন করা যায়, তাহলে সুন্দর একটা ভবিস্যৎ গড়া যাবে এই আশায় বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার বেকার যুবক এসব দালালের মাধ্যমে বিদেশে পাড়ি জমায়।
এই দালালী প্রথা শুধু মাত্র বাংলাদেশীরা করে থাকে। বিশ্বের আর কোণ দেশের মানুষেরা আদম ব্যাপারীর কাজ করেনা। সেই এক লম্বা কথা এই বিষয়ে পরে লিখবো ইন শা আল্লাহ্।
আমাদের দুজনের জন্য অন্যজনের পাসপোর্ট জামানত রাখতে হয় নাই।কারন কাতার জীবনে আপনজন আছেন আত্মার আত্মীয় আছেন সুহৃদয়বান ভাই আছেন তিনি হচ্ছেন সুদক্ষ সুযোগ্য নজরুল ভাই। নজরুল ভাইকে ফোন করলে বলে দিলেন পাসপোর্ট আর দু'কপি ছবি নিয়ে চলে আসবেন। হাবিব ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করে চলে গেলাম এজেন্সীতে। হাবিব ভাই আসতে দেরি হচ্ছিল জ্যামে পড়েছেন। এই দিকে নজরুল ভাইয়ে অফিসকক্ষে বসে মজাদার নাস্তা আর সুস্বাদু চা খেয়ে সামান্য কথাবার্তা বলে দুজনে বের হই। আর নাস্তার ফাঁকে অফিসে কয়েকজনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন অনেক বড় করে। আসলে আমি কিন্তু এতো বড় না। নজরুল ভাই কিন্তু অনেক বিজি থাকেন। অনেক কাজ হাতে থাকে। কিছু সময় থাকাকালেই দেখলাম অনেক কাজ সেরে ফেলেছেন। এরিমধ্য হাবিব ভাই হাজির। নজরুল ভাই আমাদের দু'জনকে সাথে নিয়ে এজেন্সিতে বলে দিলেন দু'জনের পাসপোর্ট আর ছবি রাখেন ওমরাহ্ যাবে। এদিকে ওমরাহ্ ভিসার অপেক্ষা করছি। অপেক্ষার দোলাচলে থাকতে থাকতে একদিন জানতে পারলাম আমাদের বহুল প্রতিক্ষিত ওমরাহ ভিসা হয়েছে। তারিখটি সম্ভবত ১৬/১৭মে ২০১৪। ভিসা তো পাওয়া গেল।
চলবে...
প্রথম পর্ব
বিষয়: বিবিধ
১৩১৬ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন