আরবসাগর তীরে ভ্রমন
লিখেছেন লিখেছেন আবু তাহের মিয়াজী ১৭ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:১০:১৩ দুপুর
এই দীর্ঘ প্রবাস জীবনে কাতারে কিছু জায়গা ঘুরে দেখার সুযোগ হয়েছে ।ভ্রমণ আমার খুব ভালো লাগে তাই সবার মাঝে তা জানাতে চাই।তবে সবার উপরে ভালোবাসি প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ।
আরবসাগর তীরে ভ্রমন। কাতার আল খোর বিচ সীমাহীন ভাবনার কলিগুলো দোলা দিচ্ছিল মনের দক্ষিণা হাওয়ায়। আজ সকাল থেকে কেন যেন মনের মণিকোঠায় বিরহ যন্ত্রণা আর হতাসা অনুভব করছি। রাতেও ঠিকমতো ঘুম আসছিলনা। ঘড়ির কাটা দেখে দেখে সময়মত ডিউটিতে চলে আসি। তাও ভালো লাগছে না আজ। কিছুক্ষণ পরে কলিগ আইয়ুব বড় কাপে এক কাপ চা নিয়ে হাজির। চায়ের কাপ হাতে নিয়ে চুমু দিতেছি এমন সময় বাহিরে তাকিয়ে দেখি বিশাল আকাশটি ও আজ মেঘাচ্ছন্ন। বৈশাখী হাওয়া ও বইছে। মরুর দেশে এমন পরিবেশ খুব একটা মিলেনা। ভাবলাম এই সুন্দর বসন্তরঙে একটা ভ্রমণ করে আসি।
যেই কথা সেই কাজ, ড্রাইভার সাইদুল ভাইকে বললাম চলেন ঘুরে আসি এক কথায় রাজি! এদিকে খাইরুল আর তৌফীক ও সামনে আগ বাড়িয়ে এলো। তারা দু'জন ও যাবে। তাদেরকে ও সাথে নিয়ে পিচ ঢালা পথ মাড়িয়ে গাড়ি চলছে আরবসাগরের তীরে। গল্পগুজব হাসাহাসি করতে করতে পৌঁছে গেলাম সৌন্দর্যের লীলাভূমি সাগর তীরে উচ্ছ্বসিত হয়ে।
সমুদ্র তীরে পৌঁছে মনমাতানো উচ্ছ্বাসিত আমোদী ছোঁয়ার সুর বইতে লাগলো। গাড়ী থেকে নামতে ই এমন ঝড়-তুফান, যেন খড়কুটোর নেয় আমাদের ও উড়িয়ে নিয়ে যাবে। ভ্রমনে আসার সময় বসন্তঋতু মনে করেই চলে আসা! যাহোক নিজেকে সামলে সামনে এগিয়ে চলছে আমাদের উচ্ছ্বাসিত ভ্রমন পিপাসিত চারজনের টিম। খানিকটা সামনে এগুতে স্টিলের একটা ব্রিজ। ব্রিজের দুইপাশ ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য স্প্রিট বোর্ড। স্প্রিট বোর্ড গুলি সাধারণত কাতারিরা সমুদ্রপথ ভ্রমণ করে থাকে। আবার অনেক কাতারি বোর্ড গুলি গাড়ির পিছনে বেধে নিয়ে যায় তাদের বাড়ির সামনে রেখে দেয়। কথায় আছেনা! টাকার নৌকা পাহাড় দিয়ে চলে। আর কিছু সংখ্যক বোর্ড ব্যবহার হয় ফিসারি সমুদ্রে যাওয়ার সময় নিয়ে যায়।যেন কোণ বিপদআপদ আসলে জীবন রক্ষা করতে পারে।
ব্রিজ পেরিয়ে সামনে এগুতে-ই নজরে পড়লো মনকাড়া এক শিপ। এতো চমৎকার শিপ! এরোপ্লেনের মতো। ভাবলাম উপরে উঠা যায় কিনা? বিধিবাম সাধল শিপটি কাছে নেই খানিক দূরে। তবুও নাছোড় বান্দা উঠবই। সাইদুল ভাইয়ে সহযোগীতায় কাঁপতে কাঁপতে মোটা রশি বেয়ে উঠেই গেলাম। আলহামদুলিল্লাহ্ এইবার অন্তরের গভীর অনুসন্ধানী চোখ উৎসুক দৃষ্টি মেলে তাকিয়ে থাকি বিশাল এই সমুদ্রকূলে তন্ময় হয়ে। ঢেউয়ের পর ঢেউ উত্তাল ঢেউ। এই যেন উজান ভাটার জীবন, বিশাল বিশাল ঢেউগুলো ছন্দ তুলে আবার মিলে যাচ্ছে সাগর বক্ষে।
কেউবা টার্মিনালে বসে বড়শি দিয়ে রোমাঞ্চিত হয়ে মাছ ধরছে। কেউবা মনের আনন্দে ঘুরাঘুরি করে ছবি তুলছে। তারই মাঝে আপনজনের কাছ থেকে দূরে থাকা হৃদয়ের ব্যথা, প্রবাসের একাকীত্ব সাগরের ঢেউয়ের সাথে জীবনের ক্লান্তি ভূলে থাকার প্রয়াস খুঁজে পাই।আর অন্তর চোখে খুঁজে পাই তৃষিত আত্মার সুনিপুণ কারিগরের অসীম সীমাহীন ভাবনার দরিয়ায় পরিতুষ্টি।
বিষয়: বিবিধ
২২৮০ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আজকেও ঘুরে আসলাম।
প্রবাসে ব্যস্ততা আর ব্যস্ততা। এই ব্যস্ততাযুক্ত সময়ে একটু খানি সুযোগ পেলে কে না চায় দূরে কোথায় হারিয়ে যেতে। তাই বলে এই নয় যে পথ হারিয়ে ফেলা। বাস্তবিক অর্থে কর্মব্যস্ত প্রবাস জীবনে অবসর বলতে কোন কথা নেই। কর্মব্যস্ত
প্রবাসীরাও চায় ক্লান্তি শ্রান্তি দূর করে নিজের মতো করে কাটাতে ও বেড়াতে। অনেক চিন্তাভাবনা করে জরুরী একটা কাজের সুযোগ খুঁজে বের করলাম। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কিছুসময় সোনায় সোহাগার মতো করে কাতারের দোহা কর্নেসে প্রকৃতির দুর্দান্ত হাওয়া চোখে মুখে লাগিয়ে প্রশান্তির ঢেকুর তুলে হৃদয় রাঙিয়ে চলে আসলাম।
ছবিটা বুঝতে পারছি না । Human Bulb এর মত মনে হচ্ছে । ম্যাক্সিমাম ছবিই স্পীড বোট এর এবং তীরের কাছে । এই একটা ছবিতে মনে হয়েছে ক্রুজ শিপে করে সাগরের দিকে গিয়েছেন ।
অনেক ভাল লাগল আপনাদের ভ্রমন কাহিনী ধন্যবাদ ভাইয়া ।
প্রবাসীরাও চায় ক্লান্তি শ্রান্তি দূর করে নিজের মতো করে কাটাতে ও বেড়াতে। অনেক চিন্তাভাবনা করে জরুরী একটা কাজের সুযোগ খুঁজে বের করলাম। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কিছুসময় সোনায় সোহাগার মতো করে কাতারের দোহা কর্নেসে প্রকৃতির দুর্দান্ত হাওয়া চোখে মুখে লাগিয়ে প্রশান্তির ঢেকুর তুলে হৃদয় রাঙিয়ে চলে আসলাম।
আজকের ঘুরাঘুরি। আপুজি পড়ার জন্য শুভকামনা।
প্রবাসীরাও চায় ক্লান্তি শ্রান্তি দূর করে নিজের মতো করে কাটাতে ও বেড়াতে। অনেক চিন্তাভাবনা করে জরুরী একটা কাজের সুযোগ খুঁজে বের করলাম। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কিছুসময় সোনায় সোহাগার মতো করে কাতারের দোহা কর্নেসে প্রকৃতির দুর্দান্ত হাওয়া চোখে মুখে লাগিয়ে প্রশান্তির ঢেকুর তুলে হৃদয় রাঙিয়ে চলে আসলাম।
সেইদিন বলেছি, আসবো ঘুরবো দেখবো এই ভেজালে আমি নেই..
আমি কিন্তু লেখক না। আমি অতি নগণ্য একজন পাঠক।
এর পরেও আপনার ভালো লাগায় আমি ধন্য এবং সামনে কিছু লিখার সাহস পেলাম। আশাকরি দোয়াতে এই অধম কে শামিল রাখবেন। জাযাকাল্লাহু খায়রান।
মন্তব্য করতে লগইন করুন