আহ! এটাই বুঝি প্রবাসীদের জীবন।
লিখেছেন লিখেছেন আবু তাহের মিয়াজী ১৩ এপ্রিল, ২০১৬, ০৮:০৭:১৫ রাত
আপনি হাজার দায়িত্ব বুকে নিয়ে পাড়ি জমিয়েছেন প্রবাসে? অভাবের সংসারকে ক্ষণে ক্ষণে বুঝতে শিখেছেন? প্রথম দায়িত্ব নিয়েছেন দুঃখের সংসারে সুখের আলো দেখাবার দায়িত্ব? দীর্ঘ ১৫/১৬ বছর প্রবাসে কাটিয়ে দিয়েছেন সংসারের ঘাটি টানতে টানতে?এক কথায় সংসারের সুখের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন নির্লজ্জ অসহায় হয়ে প্রবাসের মাটিতে?
তাহলে শুনুন, সংসার জীবনের অভাব অনটন ঘুছানোর দায়ভার বা চেষ্টা করে একটু শান্তি ফিরাতে সচেষ্ট হন তাহলে-ই আপনার ব্যাক্তি জীবনের জন্য সবচেয়ে বোকামি।আর একসাথের সংসার হলেও পরিবারের সকল সদস্য ছোট বেলা থেকে একমন মানসিকতায় বড় হয়নি। কারো একটু সংসারের অভাব ঘুছানোর প্রতি টান বেশি কারো একটু কম।কেউ একটু উদাসি,কেউ অবহেলায় কাটায়।এটাই স্বাভাবিক।কিন্তু?? আপনি যদি একটু টান ভালবাসা দরদি ব্যক্তি হন তাহলে, ভবিষ্যত জীবনে অন্ধকার, অভিশাপ,ব্যার্থতা, তুচ্ছ তাচ্ছিল্য গ্রহনকরা বা সহ্য করার জন্য প্রস্তুত?
আপনি সংসারের সুখের পিছনে ছুটতে ছুটতে কখন যে ৩০/৩২ বসন্ত চলে গেলো বুঝতে-ই পারেননি। যৌবনের বাতাস এসে বার বার মনে করে দিলেও যৌবনের সুখের চায়া আঁচ করতে সুযোগ পাননি। প্রবাসে প্রথম পাড়িতে দীর্ঘ ৫/৬ বছর পার করে দিলেন সংসারের ঘাটি টানতে টানতে।একবার নড়েচড়ে ভাবলেন! দেশে গিয়ে একজন মনের মানুষ খুঁজে দুঃখকষ্ট ভাগাভাগি করে নিবেন। যেই কথা সেই কাজ!
দেশে গিয়ে পাত্রী পছন্দকরে পরিবারপরিজনকে জানালেন। বিয়ের দিনতারিখ ঠিকঠাক করলেন। পরিবার থেকে আপনাকে বিয়ের খরচের একটা লিস্ট হাতে ধরিয়ে দেবে। আপনি যতো-ই বলেননা কেন! আমি প্রবাস জীবনে যতো টাকাকড়ি কামিয়েছি সবিত আপনাদের কাছে পাঠিয়েছি। আমার কাছে কোণ টাকাকড়ি নেই! পরিবার থেকে উত্তর আসবে কোণ টাকাকড়ি আমাদের কাছে নেই। এই বলে সাথে সাথে আপনাকে ছেড়ে সবাই প্রত্যাখ্যান করে চলে যাবে।প্রিয় পরিবারপরিজনের এমন কথা শুনে আপনি অবাক হয়ে যাবেন। মনে হবে আকাশটা ভেঙে মাথার উপর পড়ল।
অথচ আপনি ছোট বেলা থেকে সংসারের উন্নতির জন্য প্রানপন চেষ্টা করেছেন, ভাইবোনদের লেখাপড়ার খরচের জন্য, বিদেশ কিংবা দেশে কোন কাজের জন্য চাকরিবাকরি দেয়ার জন্য আর্থিক ব্যাবস্থা করেছেন। বোনদেরকে বিয়েশাদী দিয়েছেন। বাবা-মাকে নুন্ন্যতম সাধ্যমত ভাল খাবারের চেষ্টা করেছেন। সবার চিকিৎসা সেবাযত্ন করেছেন হাজারো দুঃখ বেদনা সহ্য করেছেন।বিদেশের মাটিতে টাকা-পয়সা রুুজি করে কখনো বিলাসিতা করেননি। মনে চাইলেও একটু ভালদামি কাপড় কিনতে বিবেকে বাধা দিয়েছে। অনেক সময় মনেরগহিনে পিড়াপীড়ি করেছিল ভালো একটা রেস্টুরেন্টে খেতে, দেশের আপন জনদের কথা চিন্তাকরে (তবে এগুলা আপনার অবশ্যকরণীয়) ঈদ কি জানিস কখনো উপলদ্ধি করতে পারেননি।আপনার সুখ-আনন্দ সব চোখের জলে বিসর্জন দিয়েছেন পরিবােরের একটুকর শান্তির জন্য। তখন আপনার এই কথা বলে কোণ লাভ হবে না শুধুমাত্র ফেলফেল করে চোখেমুখে অশ্রুকণা ঝরানো ছাড়া......
বিষয়: বিবিধ
১৬২৮ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এতকিছুর পরও যদি সামান্য নিজের জন্য সঞ্চয় করে বাবা মা ভাই বোন জানতে পারলে এক মুহুর্তেই দুশমন বানিয়ে দেবে। বদ দোয়া দিয়ে জাহান্নামে পাঠিয়ে দেবে। আত্মীয় স্বজনদের নিকট কান্নাকাটি করে সবাই প্রবাসী অসহায় ব্যক্তিটিকে দুশমন করে ছাড়বে।
আহ্! এটাই বুঝি প্রবাসীদের জীবন।
আর আপনার ( আহ! এটাই বুঝি প্রবাসীদের জীবন।) কথাটি শিরনাম দিয়েছি।
ভালো থাকবেন নিরবধি।
শোকরিয়া জানবেন শ্রদ্ধেয় ভাইজান।
এক সময় আমাকেও তেমন মনে করতো তারপর নিজেকে একটু বুঝতে শিখেছি কিন্তু অনেক পরে ধন্যবাদ লেখককে
ধন্যবাদ জানবেন ভাইজান।
মন্তব্য করতে লগইন করুন