কাতার প্রবাসী বাংলাদেশীদের জমকালো সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার উৎসব |
লিখেছেন লিখেছেন আবু তাহের মিয়াজী ০৪ জানুয়ারি, ২০১৫, ১২:৩৯:২৭ দুপুর
কাতার প্রবাসী বাংলাদেশীদের অতি প্রিয় সংগঠ বিকিউএসপি উদ্যোগে প্রতিবারের মত এবারও ০২জানুয়ারী ২০১৫ইং রোজ শুক্রবার কাতারের দোহা সবচেয়ে বর্ণাঢ্য ও বৃহৎ হল ফানার মিলনায়তনে হয়ে গেল এক জমকালো সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার উৎসব |
সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার অনুষ্ঠান করায় প্রবাসীদের সূবর্নসুযোগ, আর সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে জমকালো সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার উৎসবে মেতে উঠে প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
বিকেল ০৩টায় অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রবাসী বাংলাদেশীরা নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই কর্মব্যস্ত লোকগুলো সকল কাজ আনজাম দিয়ে অনুষ্ঠানে যোগদান করে আনন্দ উপভোগ করার জন্য। অনুষ্ঠান শুরুর আগেই আসণগুলো কানায় কানায় ভরে উঠে ফানার মিলনায়তন। উপস্হিতিরা বসার চেয়ার না পেয়ে প্লোরে বসে পড়তে বাধ্য হয়। শিশু, কিশোর যুবক, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে সব বয়সের পুরুষ-মহিলা যোগদান করে অনুষ্ঠানে। যথা সময়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
সভাপতিত্ব করেন প্রবাসীদের অতি প্রিয় জনাব রশীদ চৌধুরী ,সাথে ছিলেন জুবের আহমদ চৌধুরী, পরিচালনা করেন মাওঃ আনোয়ারুল ইসলাম। বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন বিশিষ্ট লেখক রেজাউল করিম। জনাব ইঞ্জিনিয়ার কামারুল আহসান মিয়া ভাইসহ আরো কয়েকজন।
এটি ছিল একটি প্রতিযোগিতা মূলক অনুষ্ঠান। এই প্যাকেজ অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল কোরআন তেলায়াত,ইসলামী সংগীত, কবিতা আবৃতি, কৌতুক, স্বরচিত গান ও নাটক। আর আল হেরা শিল্পী গোষ্ঠীর সঙ্গীত পরিবেশনা সকল দর্শককে মাতিয়ে রাখে। আল হেরা সাহিত্য সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী কাতারে একঝাক শিল্পী তৈরী করতে সক্ষম হয়েছে। সর্বত্র এই শিল্পীদের সুনাম শোনা যায়। এমন কি কাতারে বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও এই বাংলাভাষী শিল্পীদের বাংলা গান গাইতে শোনা যায়। এতে একদিকে কাতারে বাংলাদেশীদের সুনাম বৃদ্ধি পাচ্ছে অপর দিকে এটিকে বাংলা ভাষার বিজয় বলেও উল্লেখ করা যায়। যা সম্পূর্ণ আল হেরা সাহিত্য সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর কৃতিত্ব।
সভাপতি বক্তব্যে বললেন।সংস্কৃতি ব্যতিত কোন সভ্য জাতির বিকাশ ঘটতে পারে না। সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়েই একটি সভ্য জাতির বিকাশ ঘটে।এই প্রতিযোগিরা গান, কৌতুক আর নাটক নিয়েই ব্যস্ত নয়। সাহিত্য চর্চায়ও রয়েছে এদের ভূমিকা। প্রতিটি প্রতি যোগিদেরকে কিভাবে সৎ যোগ্য মানুষ তৈরি করা যায় বিকিউএসপি সেই কাজই করে যাচ্ছে। এই ভাবে সাহিত্য ও সংস্কৃতি দুটিই চর্চা হতে থাকে এবং এর মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করতে থাকে নতুন নতুন প্রতি যোগি।
সভাপতি আরো বলেন একমাত্র ইসলামই পারে মানবতার মুক্তি দিতে। মানুষের জৈবিক চাহিদার পাশাপাশি মনের খোরাক দিতে হয়। তা না হলে অন্তর মরে যায়। আর সেই মনের খোরাক হলো সংস্কৃতি। এ সংস্কৃতি চর্চা, শ্রবণ, দর্শন সবই মানবজীবনে চলার পথে আত্মার প্রশান্তি জোগায়। তবে এ সংস্কৃতি চর্চা কিন্তু গতানুগতিক হলে চলবে না। এর একটি দিকনির্দেশনা রয়েছে, যা প্রদান করেছে ইসলাম। অর্থাৎ কেউ যদি এ ইসলামী সংস্কৃতিকে মনেপ্রাণে ধারণ করে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে অগ্রসর হয়, ফলস্বরূপ সে পাবে কাজে-কর্মে বরকত এবং অনাবিল প্রশান্তি। ইসলামী সংস্কৃতিকে আমরা দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি কাজেই ব্যবহার করতে পারি। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) আদেশ-নিষেধকে নিজের জীবনের লক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা। এসবই সংস্কৃতি চর্চার অংশ। আমরা যদি জীবনের সর্বশেষ নিঃশ্বাস অবধি ইসলামী সংস্কৃতিকে ধারণ করতে পারি তাহলেই পুরস্কারস্বরূপ আমাদের জন্য রয়েছে ইহকালীন ও পরকালীন শান্তি।
সবশেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি জনাব রশিদ চৌধুরী ।পুরস্কার বিতরণ পর্ব শেষে হালকা নাস্তা পর্ব শুরু হয়। আর হালকা নাস্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। রাত ৮.৫০টা । সর্বশেষে এক বুক আনন্দ উল্লাস নিয়ে সকলে ছুটে চলে নিজ নিজ গন্তব্যে।
প্রবাসে কর্ম ব্যস্ততার মাঝে এই ধরনের অনুষ্ঠান সবাইকে শত কষ্ট ক্লান্তি আর স্বজনদের ছেড়ে দুরে থাকার বেদনা ক্ষণিকের জন্য হলেও ভুলিয়ে রাখে এবং আনন্দ সাগরে অবগান করাতে সক্ষম হয়।
বিষয়: বিবিধ
১৩০৯ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এটা কি জামায়াত-শিবিরের কোন আয়োজন ছিল নাকি ?
মন্তব্য করতে লগইন করুন