Rose Roseকাতার প্রবাসীদের এক জমকালো সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার উৎসব Rose Rose

লিখেছেন লিখেছেন আবু তাহের মিয়াজী ০৮ জানুয়ারি, ২০১৩, ০২:০৯:২৪ রাত



সভাপতি জুবের আহমদ চৌধুরী

হিম হিম শীতের বাতাস। তবুও সুস্থ সংস্কৃতির চেতনার মানুষগুলো থেমে থাকেনি। এগিয়ে এসেছে সুন্দর মনন শীলতার বিকাশে।কাতারের সবচেয়ে বর্ণাঢ্য ও বৃহৎ হল ফানার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হল । সংস্কৃতি ব্যতিত কোন সভ্য জাতির বিকাশ ঘটতে পারে না। সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়েই একটি সভ্য জাতির বিকাশ ঘটে। তাই প্রবাসী বাংলাদেশীরাও এই সংস্কৃতি চর্চা থেকে পিছিয়ে নেই। সুস্থ ধারার সংস্কৃতি চর্চার জন্য কাতার প্রবাসীরা গঠন করে” বিকিউএসপি বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার ।

এই বিকিউএসপি উদ্যোগে বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। বিশেষ করে প্রতি বছর একবার প্রতিযোগীতা মূলক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। এতে প্রবাসীরা সংস্কৃতি চর্চার প্রতি আগ্রহী হয় এবং প্রবাস জীবনে কর্মব্যস্ততা থেকে মুক্ত হয়ে একটু আনন্দ উপভোগ করে থাকে।



বিকেল চারটায়টায় অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই কর্মব্যস্ত লোকগুলো সকল কাজ আনজাম দিয়ে অনুষ্ঠানে যোগদান করে একটু আনন্দ উপভোগ করার জন্য।

প্রতিবারের মত এবারও গত ৪জানুয়ারী ২০১৩ইং রোজ শুক্রবার কাতারের সবচেয়ে বর্ণাঢ্য ও বৃহৎ হল ফানার মিলনায়তনে হয়ে গেল এক জমকালো সাংস্কৃতিক উৎসব। বিকেল চাটায়টায় অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই কর্মব্যস্ত লোকগুলো সকল কাজ আনজাম দিয়ে অনুষ্ঠানে যোগদান করে একটু আনন্দ উপভোগ করার জন্য। কানায় কানায় ভরে উঠে ফানার মিলনায়তন। শিশু, কিশোর যুবক, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে সব বয়সের পুরুষ/মহিলা যোগদান করে অনুষ্ঠানে। যথা সময়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। সভাপতিত্ব করেন জুবের আহমদ চৌধুরী, পরিচালনা করেন হাফেজ আনোয়ারুল ইসলাম। বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন সোনার বাংলাদেশ ব্লগের বিশিষ্ট লেখক রেজাউল করিম ভাইসহ আরো কয়েকজন।



সুললিত কন্ঠে দেশের গান আল হেরা শিল্পী গোষ্ঠী।



ইসলামী সংগীত আল হেরা শিল্পী গোষ্ঠী।

এটি ছিল একটি প্রতিযোগিতা মূলক অনুষ্ঠান। এই প্যাকেজ অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল কোরআন তেলায়াত,ইসলামী সংগীত, কবিতা আবৃতি, কৌতুক, স্বরচিত গান ও নাটক। যতই সময় বাড়তে থাকে অনুষ্ঠান ততই উপভোগ্য হতে থাকে। প্রতিটি বিষয় দর্শকদের খুব আনন্দ দিতে থাকে। আর আল হেরা শিল্পী গোষ্ঠীর সঙ্গীত পরিবেশনা সকল দর্শককে মাতিয়ে রাখে। আল হেরা সাহিত্য সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী কাতারে একঝাক শিল্পী তৈরী করতে সক্ষম হয়েছে। সর্বত্র এই শিল্পীদের সুনাম শোনা যায়। এমন কি কাতারে বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও এই বাংলাভাষী শিল্পীদের বাংলা গান গাইতে শোনা যায়। এতে একদিকে কাতারে বাংলাদেশীদের সুনাম বৃদ্ধি পাচ্ছে অপর দিকে এটিকে বাংলা ভাষার বিজয় বলেও উল্লেখ করা যায়। যা সম্পূর্ণ আল হেরা সাহিত্য সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর কৃতিত্ব।অনুষ্ঠানটি কেন্দ্র করে ফানারকে সাজিয়ে ছিল বড় জাক জোমক ভাবে।

একক নাটক মইন উদ্দিন আল হেরা শিল্পী গোষ্ঠী



নাটক আল হেরা শিল্পী গোষ্ঠী

ইতিমধ্যে মাগরিবের নামাজের বিরতী হয়ে যায়। কাতার নগরীতে সন্ধ্যা নেমে আসে। বৈদ্যুতিক লাইটের আলোতে আলোকিত হয়ে উঠে গোটা দোহা সিটি, মসজিদের সুউচ্চ মিনার থেকে মোয়াজ্জিনের সুমধুর আজানের ধ্বনি ভেসে আসছে। সকল দোকন পাট, মিল ফ্যাক্টরী, কল কারখানার , কর্ম ব্যস্ত মানুষগুলো সবাই মসজিদ পানে ছুটছে।নামজের পর আবার জমজমাট হয়ে উঠলো অনুষ্ঠান স্থল। কৌতুক, গান আর নাটক অভিনেতারা সকল দর্শক শ্রোতদের আনন্দ সাগরে ভাসাতে লাগলো। অনেকে এই আনন্দকে স্থায়ী করার জন্য দৃশ্য গুলো মোবাইলে ভিডিও করতে লাগলো।



অত্যন্ত সুন্দর সুললিত কন্ঠে শিশুরা সংগীত পরিবেশন করেন।

প্রতিযোগিতার মধ্যে ছিল ক্বেরাত , ইসলামি সংগীত, নির্ধারিত বক্তৃতা ,মৌখিক প্রশ্নোত্তর , ও লিখিত প্রশ্নোত্তর।

বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি জুবের আহমেদ চৌধুরী ।এই প্রতি যুগিরা গান, কৌতুক আর নাটক নিয়েই ব্যস্ত নয়। সাহিত্য চর্চায়ও রয়েছে এদের ভূমিকা। প্রতিটি প্রতি যোগিদেরকে কিভাবে সৎ যোগ্য মানুষ তেরি করা যায় বিকিউএসপি সেই কাজই করে যাচ্ছে। এই ভাবে সাহিত্য ও সংস্কৃতি দুটিই চর্চা হতে থাকে এবং এর মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করতে থাকে নতুন নতুন প্রতি জুগি।

পুরস্কার বিতরণ পর্ব শেষে হালকা নাস্তা পর্ব শুরু হয়। আর হালকা নাস্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। রাত ৯টা । সর্ব শেষে এক বুক আনন্দ উল্লাস নিয়ে সকলে ছুটে চলে নিজ নিজ গন্তব্যে। প্রবাসে কর্ম ব্যস্ততার মাঝে এই ধরনের অনুষ্ঠান সবাইকে শত কষ্ট ক্লান্তি আর স্বজনদের ছেড়ে দুরে থাকার বেদনা ক্ষণিকের জন্য হলেও ভুলিয়ে রাখে এবং আনন্দ সাগরে অবগান করাতে সক্ষম হয়।

বিষয়: সাহিত্য

১৩৬০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File