Good Luck Good Luckরমযান ও ঈদের ভাবনা Good Luck Good Luck

লিখেছেন লিখেছেন আবু তাহের মিয়াজী ২১ জুলাই, ২০১৩, ০৪:৩৩:৫৪ বিকাল



চলছে রমজান মাস। আসছে ঈদ আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে আছে কত হাজারো চিত্র, আমরা যদি প্রত্যেকে অন্তত একজন অসহায় কে সাহায্য করি,তাহলে কিইবা আসে যায়, তাইনা !আমার আপনার সামান্য দানে ওরা একটু সুখ খুঁজে পায়...আসুন না মাহে রমজানে একটু চেষ্টা করে দেখিই না...

দশের লাঠি একের বোঝা,

আমরাতো ভাই জানি,

কেমন হবে যদি মোরা,

একটা লাঠি আনি!

দয়া ও দান-সদকার মাস রমজান : সারাদিন সিয়াম পালন করার পর একজন মুমিন, একজন মুসলমান বুঝতে পারে ক্ষুধার কী জ্বালা। যে সমস্ত বনী আদম অভাবের কারণে একবেলা, আধ বেলা বা কোনো কোনো দিন উপোস করে কাটায় তাদের ক্ষুধার যন্ত্রণা সাওম পালনকারীর বুঝতে কষ্ট হয় না। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে সিয়াম পালনের মাধ্যমে দারিদ্র্যের যন্ত্রণা কী তা উপলব্ধি করতে শেখান।রমজান দয়া ও দান-সদকার মাস, করুণার মাস। রমজানকে রহমত, ক্ষমা ও মুক্তির মাস বলে হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে। হাদিসে এসেছে । আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, ‘রাসূলুল্লাহ (সা) এমনিতেই সর্বাধিক দানকারী ছিলেন। কিন্তু তিনি রমজানে জিবরাইলের (আ) সাথে সাক্ষাতের পর প্রবাহমান বাতাসের মতো উন্মুক্ত হস্ত ও অধিকতর দাতা হয়ে যেতেন।’ (সহীহ বুখারী)



কুরআন মুজীদে আল্লাহ বলেন। আত্মীয়কে তার অধিকার দাও এবং মিসকীন ও মুসাফিরকেও তাদের অধিকার দাও৷ (সূরা বনী ইসরাঈল-২৬)এ আয়াতে আমাদেরকে তিনটি উপদেশ দেয়া হয়েছে।এ তিনটি উপদেশের উদ্দেশ্য হচ্ছে, মানুষ নিজের উপার্জন ও ধন - দৌলত শুধুমাত্র ...নিজের জন্যই নির্ধারিত করে নেবে না বরং ন্যায়সংগতভাবে ও ভারসাম্য সহকারে নিজের প্রয়োজন পূর্ণ করার পর নিজের আত্মীয় - স্বজন ও অন্যান্য অভাবী লোকদের অধিকার আদায় করবে ৷ সমাজ জীবনে সাহায্য - সহযোগিতা, সহানুভূতি এবং অন্যের অধিকার জানা ও তা আদায় করার প্রবণতা সক্রিয় ও সঞ্চারিত থাকতে হবে ৷ প্রত্যেক আত্মীয় অন্য আত্মীয়ের সাহায্যকারী এবং প্রত্যেক সমর্থ ব্যক্তি নিজের আশপাশের অভাবী মানুষদের সাহায্যকারী হতে হবে ৷ একজন মুসাফির যে খানেই যাবে নিজেকে অতিথি বৎসল লোকদের মধ্যেই দেখতে পাবে ৷আমাদর সমাজের অধিকারের ধারণা অনেক বেশী বাড়াতে হবে যে, প্রত্যেক ব্যক্তি যাদের মধ্যে অবস্থান করে নিজের ব্যক্তি - সত্তা ও ধন- সম্পদের ওপর তাদের সবার অধিকার অনুভব করতে হবে ৷ তাদের সাহায্য করার সময় এ ধারণা নিয়েই সাহায্য করতে হবে যে, আমি তাদের অধিকার আদায় করছি, তাদেরকে আমি অনুগ্রহ করছিনা ৷ আমরা গরীব দেরকে সাহায্য করতে অক্ষম হলে তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিব এবং আল্লাহর বান্দাদের খিদমত করার যোগ্যতা অর্জন করার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করব।



শহরের/গ্রামে এক শ্রেণীর মানুষের থাকে অবর্ণনীয় ক্ষুধার যন্ত্রণা ও কষ্ট.. । আমাদের চারপাশে চোঁখ দিলেই দেখতে পাই অনেক অসহায় মানুষ যারা খেতে পায় না। শান্তি মত ঘুমাতে পারেনা। একমুঠো খাবারের আশায় মানুষের দোয়ারে দোয়ারে ঘুরে এবং অনেকে লাথি খেয়ে ফিরে এসে কেদে কেদে নিজেকে অভিশাপ দেয়। আমরা চাইলেই তাদের জন্য কিছু করতে পারি।

শুধু দরকার তাদের জন্য কিছু করার মানসিকতা। রাজনৈতিক নেতাদের দেখা যায় ইফতারি বিতরণ করতে । বিভিন্ন সমাজ সেবী প্রতিষ্টান গরীবদের মাঝে যাকাতের বস্ত্র বিতরণ করে। আমরা যে যেখানে /এলাকায় আছি, আমরাকি পারিনা হাতটাকে বাড়িয়েদিতে?



আর অভাবীদের কথা ভেবে হলেও কেউ খাবার অপচয় করবেন না- আমাদের দেশে অভিজাত শ্রেণীর এক বেলার আহারের পেছনে খরচ আমাদের সাধারণ মানুষের মত কয়েক টাকা নয়, তা কয়েক শত কিংবা ক্ষেত্র বিশেষে কয়েক হাজার! আর পার্টি হলে তো কথাই নেই। বর্তমানে কোন কোন পরিবারের প্রতি বেলার খাবার সরবরাহ করে অনেক তথাকথিত দামী ও অভিজাত রেস্টুরেন্ট। আর অভিজাত শ্রেণীর খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে প্লেটে খাবার রেখে দেয়া বা নষ্ট করা যেন এখন অনেকটাই ফ্যাশন বা আভিজাত্যের প্রতীকে পরিনত হয়েছে। এদের মাত্র এক জনের এক বেলার নষ্ট করা খাবারের টাকা দিয়ে অসংখ্য অসহায় শিশুর আহারের ব্যবস্থা করা যেত। আর মহানবী (স.) এর সুন্নাত হচ্ছে খাবার নষ্ট না করা। এমনি আহার গ্রহণের পর আমাদের প্রিয় রসূলুল্লাহ (স. ) এর প্লেট আলাদা করা যেত।



আসুন তাদের জন্য এই রমজানের মাসে কি করা যায় তার পরিকল্পনা করি। আমাদের মাঝে অনেকে আছেন যারা এই সব অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন। আমাদের চার পাসে অসহায় তথা ক্ষুধার্ত মানুষের কথা চিন্তা করে আমরা যদি শুধু খাবারের অপচয় না করে টাকাটাও ওদের জন্য জাতীয় ভাবে বরাদ্দ করার মানসিকতা অর্জন করতে পারি তাহলে এসব গরীব দুঃখী মানুষের খাদ্যসহ অন্যান্য মৌলিক চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে বলে আমার বিশ্বাস।

বিষয়: বিবিধ

৬১৪৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File