সূরা আস-সদ এর কয়েকটি আয়াত
লিখেছেন লিখেছেন আবু সাইফ ১৩ আগস্ট, ২০১৬, ০৮:৩৩:৪১ রাত
সূরা আস-সদ এর কয়েকটি আয়াত
=========================
৪৫) আর আমার বান্দা ইবরাহীম, ইসহাক ও ইয়াকূবের কথা স্মরণ করো৷ তারা ছিল বড়ই কর্মশক্তির অধিকারী ও বিচক্ষণ
৪৬) আমি একটি নির্ভেজাল গুণের ভিত্তিতে তাদেরকে নির্বাচিত করেছিলাম এবং তা ছিল পরলোকের স্মরণ৷(*১)
৪৭) নিশ্চিতভাবে আমার কাছে তারা বিশিষ্ট সৎলোক হিসেবে গণ্য৷
৪৮) আর ইসমাঈল, আল ইয়াসা’ ও যুল কিফ্ল-এর কথা স্মরণ করা৷ এরা সবাই সৎলোকদের অন্তরভূক্ত ছিল৷
৪৯) এ ছিল একটি স্মরণ৷ (এখন শোনো) মুত্তাকীদের জন্য নিশ্চিতভাবেই রয়েছে উত্তম আবাস্ত
৫০) চিরন্তন জান্নাত, যার দরোজাগুলো খোলা থাকবে তাদের জন্য৷
৫১) সেখানে তারা বসে থাকবে হেলান দিয়ে, বহুবিধ ফলমূল ও পানীয়ের ফরমাশ করতে থাকবে৷
৫২) এবং তাদের কাছে থাকবে লজ্জাবতী কম বয়সী স্ত্রীরা৷
৫৩) এসব এমন জিনিস যেগুলো হিসেবের দিন দেবার জন্য তোমাদের কাছে অংগীকার করা হচ্ছে৷
৫৪) এ হচ্ছে আমার রিযিক, যা কখনো শেষ হবে না৷
৫৫) এতো হচ্ছে মুত্তাকীদের পরিণাম আর বিদ্রোহীদের জন্য রয়েছে নিকৃষ্টতম আবাস
৫৬) জাহান্নাম, যেখানে তারা দগ্ধীভূত হবে, সেটি বড়ই খারাপ আবাস৷
৫৭) এ হচ্ছে তাদের জন্য, কাজেই তারা স্বাদ আস্বাদন করুক ফুটন্ত পানির, পুঁজের
৫৮) ও এ ধরনের অন্যান্য তিক্ততার৷
৫৯) (নিজেদের অনুসারীদের জাহান্নামের দিকে আসতে দেখে তারা পরস্পর বলাবলি করবে) “এ একটি বাহিনী তোমাদের কাছে ঢুকে চলে আসছে, এদের জন্য কোন স্বাগত সম্ভাষণ নেই, এরা আগুনে ঝলসিত হবে৷”
৬০) তারা তাদেরকে জবাব দেবে, “না, বরং তোমরাই ঝলসিত হচ্ছো, কোন অভিনন্দন নেই তোমাদের জন্য তোমরাই তো আমাদের পূর্বে এ পরিণাম এনেছো, কেমন নিকৃষ্ট এ আবাস!”
৬১) তারপর তারা বলবে, “হে আমাদের রব! যে ব্যক্তি আমাদের এ পরিণতিতে পৌঁছুবার ব্যবস্থা করেছে তাকে দোজখে দ্বিগুণ শাস্তি দাও৷”
৬২) আর তারা পরস্পর বলাবলি করবে, কি ব্যাপার, আমরা তাদেরকে কোথাও দেখছি না, যাদেরকে আমরা দুনিয়ায় খারাপ মনে করতাম? (*২)
৬৩) আমরা কি অযথা তাদেরকে বিদ্রূপের পাত্র বানিয়ে নিয়েছিলাম অথবা তারা কোথাও দৃষ্টি অগোচরে আছে?”
৬৪) অবশ্যই একথা সত্য, দোজখবাসীদের মধ্যে এসব বিবাদ হবে৷
৬৫) হে নবী! এদেরকে বলো, “আমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র৷ আল্লাহ ছাড়া কোন প্রকৃত মাবুদ নেই৷ তিনি একক, সবার ওপর আধিপত্যশীল৷
৬৬) আকাশ ও পৃথিবীর মালিক এবং এ দু’য়ের মধ্যে অবস্থানকারী সমস্ত জিনিসের মালিক, পরাক্রমশালী ও ক্ষমাশীল৷”
(*১) [[ অর্থাৎ তাঁদের যাবতীয় সাফল্যের মূল কারণ ছিল এই যে , তাঁদের মধ্যে বৈষয়িক স্বার্থলাভের আকাংখা ও বৈষয়িক স্বার্থপূজার সামান্যতম গন্ধও ছিল না। তাঁদের সমস্ত চিন্তা ও প্রচেষ্টা ছিল আখেরাতের জন্য। তাঁরা নিজেরাও আখেরাতের কথা স্মরণ করতেন এবং অন্যদেরকেও স্মরণ করিয়ে দিতেন। তাই আল্লাহ তাঁদেরকে দু'টি মর্যাদা দান করেছেন। বৈষয়িক স্বার্থ চিন্তায় ব্যাপৃত লোকদের ভাগ্যে কখনো এটা ঘটেনি। এ প্রসংগে এ সূক্ষ্ম বিষয়টিও দৃষ্টি সমক্ষে থাকা উচিত যে , এখানে আল্লাহ আখেরাতের জন্য কেবলমাত্র " আদদার " (সেই ঘর বা আসল ঘর ) শব্দ ব্যবহার করেছেন । এর মাধ্যমে এখানে এ সত্যটি বুঝানোই উদ্দেশ্য যে , এ দুনিয়া আদতে মানুষের ঘর নয় বরং এটি নিছক একটি অতিক্রম করার জায়গা এবং একটি মুসাফিরখানা মাত্র । এখান থেকে মানুষের সুসজ্জিত কারার চিন্তা করে সে-ই দুরদৃষ্টির অধিকারী এবং আল্লাহর কাছে তাকে অবশষ্যই পছন্দনীয় মানুষ হওয়া উচিত। অন্যদিকে যে ব্যক্তি এ মুসাফিরখানায় নিজের সামান্য কয়েক দিনের অবস্থানস্থলকে সুসজ্জিত করার জন্য এমনসব কাজ করে যার ফলে আখেরাতের আসল ঘর তার জন্য বিরাণ হয়ে যায় , তার বুদ্ধি ভ্রষ্ট হয়ে গেছে এবং স্বাভাবিকভাবেই এমন ব্যক্তিকে আল্লাহ পছন্দ করতে পারেন না। ]]
(*২) [[এখানে এমন মু'মিনদের কথা বলা হয়েছে , যাদেরকে এ কাফেররা দুনিয়ায় খারাপ ভাবতো। এর অর্থ হচ্ছে , তারা অবাক হয়ে চারদিকে দেখতে থাকবে। ভাবতে থাকবে , এ জাহান্নামে তো আমরা ও আমাদের নেতারা সবাই আছি কিন্তু দুনিয়ায় আমরা যাদের দুর্নাম গাইতাম এবং আল্লাহ , রসূল , আখেরাতের কথা বলার কারণে আমাদের মজলিসে যাদেরকে বিদ্রূপ করা হতো তাদের নাম নিশানাও তো এখানে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। ]]
বিষয়: বিবিধ
১৬১০ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন