এরদোগানের "আমার চাওয়া দু’টি, 'দ্বীন' এবং 'ওয়াতান'-" এবং শিবিরের বিজয়দিবস উদযাপন
লিখেছেন লিখেছেন আবু সাইফ ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৫:১৯:২৮ বিকাল
শিবিরের বিজয়দিবস উদযাপন নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন!
জাতীয়তাবাদ ও ইসলামের সাংঘর্ষিক সম্পর্কের বিষয়টিও উত্থাপিত হয়েছে!
এমন কি শিবির এখন "ইসলাম" ছেড়ে "জাতীয়তাবাদ"এর সৈনিক হয়ে গেছে - এমন কথাও শোনা গেছে!!
কিন্তু -
আরব নিয়ে রসূলﷺ এর উক্তি এবং "আরব জাতীয়তাবাদ" এর যেমন ফারাক্ব, বাংলাদেশে "জাতীয়তাবাদ" এবং শিবিরের "দেশপ্রেম" এর ফারাক্বটাও তেমনি!
"দেশপ্রেম ঈমানের অংগ" এটি হাদীসে রাসূলﷺ নয়, কিন্তু দেশপ্রেমের গুরুত্বও ইসলাম অস্বীকার করেনি!
তাইতো দেখা যায়, হিজরতের পরে সাহাবায়ে (রাঃ) কিরামের কেউ কেউ জন্মস্থান মক্কা নিয়ে অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী শোকগাঁথা ও কবিতা লিখেছেন, আবৃতি করেছেন! রসূলﷺ কাউকে মন্দ বলেননি!!
দেশপ্রেম ও ইসলামের সমন্বয়ে নিচের এ কবিতাটি অত্যন্ত প্রাসংগিক!
যে কবিতার জন্য তুরষ্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান জেলে গিয়েছিলেন
সেনাবাহিনীর জন্য দোয়া
- জিয়া গোকাল্প
১
হাতে হাতিয়ার, অন্তরে ঈমান
আমার চাওয়া দু’টি, দ্বীন এবং ওয়াতান
আমার ঘর সেনা ক্যাম্প,
আমার নেতা মহান সুলতান
সুলতানকে রক্ষা করো হে ইয়া রব
তার হায়াত দীর্ঘায়িত করো হে রব
২
আমাদের পথ গাজীর, শেষ ইচ্ছা শাহাদাত
আমাদের ধর্ম সততার সাথে সেবা করা
ওয়াতান আমাদের মা, বাবা আমাদের মিল্লাত
ওয়াতানকে সমৃদ্ধ করো হে রব
মিল্লাতকে সুখি করো হে রব
৩
তোমার পতাকা তাওহিদের, আমার পতাকা হেলাল
একটি সবুজ, একটি অন্যটির পরিপূর্ণ
ইসলামের ব্যথায় ব্যথিত করো,
দুশমন থেকে প্রতিশোধ নেয়ার তাওফিক দাও
ইসলামকে রক্ষা করো হে রব
দুশমনদের ধ্বংস করো হে রব
৪
যুদ্ধের ময়দানে দাও সাহসী বীর ও সেনাপতি
যে দ্বীন এবং দেশের জন্য শহীদ হবে
যে হবে অগ্নিশিখা, যুদ্ধের ময়দানে থাকবে শেষ পর্যন্ত
শহীদদের কবুল করো হে রব
পরিবারদের দুর্বল হতে দিয়ো না হে রব
৫
কমান্ডার, অফিসার আমাদের পিতা
সার্জেন্ট, ওমবাস আমাদের নেটওয়ার্ক
শৃঙ্খলা এবং সম্মান আমাদের কানুন
সেনাবাহিনীকে শক্তি দাও হে রব
পতাকা সুউচ্চ রাখো হে রব
৬
মিনার আমাদের বেয়োনেট, গম্বুজ হেলমেট
মসজিদ আমাদের ব্যারাক,
মোমেনরা আমাদের সৈন্য
আমরা দ্বীনি যুদ্ধের জন্য অপেক্ষায়
আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর !
আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর !!
তুর্কী থেকে ভাষান্তর : নেয়ামত উল্লাহ মাসুদ, ইস্তাম্বুল থেকে (অন্য দিগন্ত)
বিষয়: বিবিধ
১৫০০ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জাতিয়তাবাদ আর স্বদেশিকতায় পার্থক্য আছে। আমরা যেখানে একক উম্মাহ প্রতিষ্ঠা করতে পারি নাই সেখানে জাতিয়তাবাদ এর উগ্র বিরোধিতা সাজেনা।
যথার্থ বলেছেন!!
জাতিয়তাবাদ আর স্বদেশিকতায় পার্থক্য ِঅনেকেই বুঝতে ও মানতে চান না!!
জাযাকাল্লাহ..
জাযাকাল্লাহ..
ইসলাম প্রতিটি মানবিক আবেগকে সম্মান করে। যদি না সেখানে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল-বিরোধী কার্যক্রম যুক্ত হয়।
এরদোগান তাঁর স্বপ্ন পূরণ করছেন। আমাদের স্বপ্ন কবে পূরণ হবে?
এরদোগান তাঁর স্বপ্ন পূরন করছেন? সিরিয়ান আড়াই লক্ষ মানুষ মেরে? ইসরাইলের উপর তুরুস্কের নির্ভরতা বাড়িয়ে? কুর্দীদের বিরুদ্ধে কার্ফু জারি করে? ইরাকে ট্যান্ক পাঠিয়ে? হামাসকে তার্কিতে অবাঞ্চিত ঘোষনা করে? ৩ বিলিয়নের ইয়োরোর বিনিময়ে সিরিয়ান উদ্ভাস্তুদের ক্যাম্পে বন্দী রেখে? -------
আল্লাহু আকবর - বাংলাদেশে ইসলামের নামে কেউ যেন অমন অন্যায় করতে না পারে - এটাই আমার প্রার্থনা - কারন ইসলামের নামে এমন লজ্জা মুসলিমদের জন্য বিয়ার করা কষ্টকর।
"এরদোগান তাঁর স্বপ্ন পূরণ করছেন।"- নয়, বরং বলা যায়, স্বপ্ন পূরণের পথে অনেকদূর এগিয়েছেন!!
"সাদাচোখে" যা দেখা যায় তা প্রকৃত অবস্থা থেকে ভিন্নতর, তাই ওটা নিয়ে চিন্তিত হবার কারণ নেই!
বিরূপ সমালোচনা হয়নি- এমন কোন ব্যক্তি পৃথিবীতে কেউ কখনো ছিলেন বলে আমার জানা নেই!!
তাছাড়া, কোন মানুষই ভুলের উর্ধে নয়!! তাই বলে কারো একটা ভুল অন্য ভালো কাজকে বাতিল করেনা! বরং ভালো কাজই ভুলের গুনাহ মিটিয়ে দেয়!!
জাযাকুমুল্লাহ..
এটা করলে আওয়ামী লীগ আর চেতনা নিয়ে ব্যবসা করে সুবিধা করতে পারত না ।
বলি কি এজন্যই তো আজো নামের 'হতভাগা' টাইটেলটা অপরিবর্তনীয় রয়েই গেল। আর ইসলামের প্রকাশ্য শত্রুদের প্রো-পিক ব্যবহার করলে এর চাইতে ভালো কিছু আশা করা যায় না।
জামায়াত নেতারা তো সেদিন (ভারতের সহায়তায়) স্বাধীনতা নয় এ নীতিতে অটল ছিলেন,কারণ তা হলে তাঁরা তাঁদের দিব্যদৃষ্টিতে দেখতে পেয়েছিলেন তা হলে ভারত একদিন বাংলাদেশকে গ্রাস করে নিজের পেটে ঢুকিয়ে নিবে। আজ স্বাধীনতার সোল-এজেন্ট আওয়ামীরা দেশটাকে নিজ হাতে ওদের পেটে ঢুকিয়ে দেবার পাঁয়তারা করছে তাও যদি 'হতভাগা'-দের চেতনার বিভ্রম না কাটে তো এদেশবাসীর কপালে যে শেষ পর্যন্ত ভারতের গোলামী করাটাই লিখা আছে.....
অন্যায়কারী তাহলে কারা, জামায়াত নেতা না কি কুত্তালীগ???
বাংলাদেশের মানুষ চেয়েছিল জামায়াতীদেরকে বুকে টেনে নিতে । কিন্তু দুধ কলা দিয়ে পুষলেও সাপ সাপই থাকে ।
তাই এসব জামায়াতীদের প্রতি আর কোন সিমপ্যাথী নয় । হাসুবু সঠিক কাজটিই করছেন । আমি তো মনে করি এদের কোন বিচার প্রক্রিয়াতেই আনা উচিত না , ২৮.১০.০৬ এর মত সাইজ করা উচিত ।
- এর পরেও কি মনে করেন পরকালে আপনারা আল্লাহর পাকড়াও থেকে বেঁচে যাবেন ?
জামায়াত নেতারা যদি এতই দূরদর্শী হয়ে থাকে তাহলে তত্ত্বাবধায়কের ফর্মুলা আওয়ামী লীগের হাতে তুলে দিল কেন ?
বিজ্ঞজনের বিতর্ক শিক্ষণীয় ও উপভোগ্য-
জাযাকুমুল্লাহ...
আমাকে ভাইয়া ডেকে "ধন্য" করেছেন, আবার "বাদ" দিতে চান কেন
জাযাকিল্লাহ..
আবু সাইফ ভাই, আমার মনে হয়না - আপনার এই রেফারেন্স এর 'তাইতো দেখা যায়, হিজরতের পরে সাহাবায়ে (রাঃ) কিরামের কেউ কেউ জন্মস্থান মক্কা নিয়ে অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী শোকগাঁথা ও কবিতা লিখেছেন, আবৃতি করেছেন! রসূলﷺ কাউকে মন্দ বলেননি'!!
আলোকে জাতীয়তাবাদ কিংবা নির্দিষ্ট বাউন্ডারী /বর্ডার সমৃদ্ধ অধুনা দেশ এর প্রতি লয়াল্টি, গমনাগমনে পাসপোর্ট ভিসা যুক্ত কোন দেশের সার্বভৌমত্ব ইসলামে বৈধতা পায়। এ দিয়ে যা প্রমানিত হয় - জন্মভূমি ও শৈশব কৈশরের স্মৃতি বিজড়িত ভূমিকে স্মরন করে কবিতা আবৃতি কিংবা গল্প গুজবে ইসলাম বাঁধ সাধে না।
বরং কোরান ও হাদীস এই মর্মেই ইন্ডিকেইট করছেঃ সার্বভৌম ভূখন্ডগত জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস ও অনুগত্য - এক প্রকারের শির্ক। এ জাতীয় বিশ্বাস পোষন ও বাস্তবায়ন এ কাজ করা মানে মানুষের স্বাভাবিক মাইগ্রেশান রাইটস্ ও ন্যাচারাল মেকানজমকে বাঁধাগ্রস্থ করা।
ব্যাক্তিগতভাবে, জামায়াত ও শিবির স্যেকুলার দেশের, স্যেকুলার পলিটিক্যাল এনটিটি হিসাবে আর সব গনতান্ত্রিক দলের ন্যায় - যা ইচ্ছা তাই করতে পারে। তারা তাদের প্রয়োজনে ইসলামের শিক্ষাকে, ইসলামের কৌশলকে, ইসলামের নীতিমালাকে - আর সব দলের মত করে 'পিক এ্যান্ড চ্যুজ' - এর ন্যায় নিতে পারে। এতে কোন সমস্যা নেই। অন্ততঃ আমি তাতে কোন সমস্যা দেখি না।
সমস্যা হয় তখন ই - যখন জামায়াত কিংবা শিবির - ইসলামের শত্রুর চোখ রাংগানীর কারনে, ইসলামের শত্রুর প্রতারনায় প্রতারিত হয়ে, কিংবা স্যেকুলার শিক্ষা ও যুক্তির আলোকে করা - কাজ গুলোকে ইসলাম বলার চেষ্টা করে। কোরান ও হাদীসকে অনাহুদ টেনে এনে জোর করে বুঝাবার চেষ্টা করে এটা ইসলামিক, এটা ইসলামিক হেকমাহ, এটা ইসলামিক কৌশল, এটা সলফে সালেহিন এর সুন্নাহ ইত্যাদি।
সো জামায়াত ও শিবিরের নেতা কর্মী বৃন্দ যদি - দয়া করে মুসলমান হিসাবে, ইসলাম প্রেমী হিসাবে, আখেরাতমুখী মানুষ হিসাবে - নূন্যতম এই কাজটি করে, তথা - নিজেদের স্যেকুলার শিক্ষা ও ভাবনা প্রসুত করা কাজ, প্রতারনার কারনে করা কাজ কিংবা না জেনে করা কোন কাজকে - ইসলামীকিকরন না করেন - তবে নিঃসন্দেহে জামায়াত কিংবা শিবিরের নামে কেউ ইসলামকে অপবাদ দিতে যাবে না।
আশা করি আমার কথায় আপনি মনে কষ্ট নিবেন না। আশা করি আমি আমার সেন্সটি বুঝাতে পেরেছি। দয়া করে ভাববেন না আমি জামায়াত শিবিরের প্রতি কোন বিদ্বেষ পোষন হেতু কিংবা আকিদাগত কোন কারনে এমনটি বলেছি।
আপনার দীর্ঘ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
রাজনৈতিক তথা রাষ্ট্রসংক্রান্ত বিষয়গুলো একেকটা প্রিজমের মত, আপনি যে এঙ্গেলে দেখবেন তেমন রঙ পাবেন!
এমন অনেক বিষয় আছে যে বিষয় জ্ঞানীদের পর্যায়ে বিতর্ক ও আলোচনা চলতে পারে যুগ যুগ ধরে, অথচ সেটা সাধারণ মানুষর পর্যায়ে উচ্চারণযোগ্যও নয়! কারণ এতে বিশৃঙ্খলা বাড়ে এবং অশিক্ষিত/অল্পজ্ঞানী মানুষেরা বিভ্রান্ত হয়ে বেদিশা হয়ে যায়!
সীমানাহীন মুক্তবিশ্বের যে ধারণা সেটি অতীতে ছিল! কিন্তু ভবিষ্যতে এমন অবস্থা ইসলামী রাষ্ট্রের বিস্তৃতির মাধ্যমেই কেবল সম্ভব, অন্য কোনভাবে নয়!
এখন কথা হলো ইসলামী রাষ্ট্র কোন প্রক্রিয়ায় অস্তিত্বলাভ করবে!!
এটা নিয়ে বিশ্বের শীর্ষ উলামায়ে কিরামের একক কোন মত নেই! তাই বলা চলে যে এটি চিরন্তন বহুমুখী উন্মুক্ত বিষয়, স্থান-কাল ভেদে অতীতের বা বর্তমানের যেকোন প্রক্রিয়া বা নবউদ্ভাবনযোগ্য অপর কোন প্রক্রিয়াতেও হতে পারে!
মানুষের(দলের) কিছু বিষয় এমন যা বাইরে থেকে দেখেই তার নিয়ত ও অন্তর্নিহিত পরিকল্পনা ও নীতিমালা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞানলাভ সম্ভব নয়, বরং সংশ্লিষ্ট পর্যায়ের ব্যক্তিদের সাথে সুনির্দিষ্টভাবে আলোচনার বিষয়! এতে পরস্পরের চিন্তা ও কর্মকৌশলের ত্রুটি সংশাধনের পথটি সহজ হয় এবং বেঠিক ধারণার আশংকামুক্ত থাকা যায়!
আমার সব কথায় আপনার একমত হওয়াটাও জরুরী নয়!!
শুকরিয়া!! জাযাকাল্লাহ!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন