"ইবনে সউদের চরিত্র: এক ঈগল যে কখনো ডানা মেলেনি আকাশে"
লিখেছেন লিখেছেন আবু সাইফ ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১১:৫২:৪৬ রাত
***********
সিরিয়ার আযাদী আন্দোলনের মশহুর নেতা আমীল শকীব আরসালান বাদশাহর সংগে সাক্ষাৎ করেন।
ইবনে সউদ আমার পরিচয় করিয়ে দেন এই ভাষায়ঃ ‘এ হচ্ছে মুহাম্মদ আসাদ, আমার পুত্র, অদ্য ফিরে এসেছে দক্ষিণাঞ্চলগুলি থেকে। ও আমার বেদুঈনের মধ্যে সফর করতে ভালোবাসে’।
আমীল শাকীব কেবল একজন রাজনৈতিক নেতাই ছিলেন না, তাঁর আগ্রহ ছিলো বহুমুখী এবং তিনি ছিলেন একজন মস্ত বড়ো পণ্ডিত। তিনি যখন শুনলেন আমি একজন ইউরোপীয় এবং ইসলাম কবুল করেছি, সংগে সংগেই তিনি উৎসুক হয়ে উঠলেন আমার অভিজ্ঞতা জানার জন্য।
আমি তাঁর নিকট বর্ণনা করি দক্ষিণাঞ্চলের সেই অভিজ্ঞতার কথা, যেখানে আমার আগে আর কোন ইউরোপীয় কখনো সফর করেনি। কৃষিক্ষেত্রে সেই অঞ্চলটির বিপুল সম্ভাবনা, তার পানি সম্পদ এবং তার উর্বর মৃত্তিকা আমার কাছে মনে হয়েছিলো অত্যন্ত আশাপ্রদ এব্ং এই বর্ণনা প্রসংগে আমি বাদশাহকে লক্ষ্য করে বলিঃ
-‘হে ইমাম, আমি এ ব্যাপারে খুবই নিশ্চিত যে, গোটা হেজাজে প্রচুর গম সরবরাহ করার জন্য ওয়াদি বিশা সহজেই হয়ে উঠতে পারে একটি শস্য-ভাণ্ডার, যদি এলাকাটিকে বৈজ্ঞানিক পন্হায় জরিপ ও উন্নত করা হয়’।
আমার এই কথায় বাদশাহ উৎকর্ণ হয়ে উঠলেন,কারণ হেজাজের জন্য গম আমদানি করতে গিয়ে দেশের রাজস্বের একটা মোটা অংশই খরচা হয়ে যাচ্চে আর রাজস্বের ঘাটতি সবসময়ই ইবনে সউদের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে আছে।
-‘এভাবে ওয়াদি বিশাকে উন্নত করতে কতোদিন লাগবে?’ তিনি আমাকে প্রশ্ন করেন।
আমি বিশেষজ্ঞ নই, কাজেই কোন পরিষ্কার জওয়াব দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব হলো না। আমি পরামর্শ দিই- বিদেশী কারিগরী বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিশন গঠন করা হোক, যার কাজ হবে অঞ্চলটিকে জরিপ করা এবং উন্নয়নের জন্য বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা পেশ করা। আমি সাহস করে বললাম, এলাকাটি থেকে পুরা ফসল পেতে লাগবে বড় জোর পাঁচ থেকে দশ বছর।
-‘দশ বছর’! –বিস্ময় প্রকাশ করেন ইবনে সউদ,
‘দশ বছর তো অনেক দীর্ঘ সময়! আমরা বেদুঈনেরা কেবল একটি জিনিস জানিঃ যা কিছু আমরা হাতে পাই, তাই আমরা মুখে পুরি এবং আহার করি। দশ বছর পরের জন্য পরিকল্পনা করা, এ যে আমাদের জন্য অত্যন্ত দীর্ঘ ব্যাপার!’
এই বিস্ময়কর মন্তব্যে আমীর শাকীব হা করে স্থির দৃষ্টিতে তাকালেন আমার দিকে, যেন তিনি তাঁর কান দু’টিকে বিশ্বাস করতে পারছেন না; আর এর জবাবে আমিও তাঁর দিকে তাকাই স্থির বিস্ফরিত দৃষ্টিতে….
আর সে সময়ই আমি নিজেকে এই প্রশ্ন করতে শুরু করিঃ ইবনে সউদ কি একজন মহৎ মানুষ যাঁকে আরাম- আয়েশ ও বাদশাহী সরিয়ে নিয়েছে মহত্ত্ব থেকে, অথবা তিনি কি কেবলই একজন প্রচণ্ড সাহসী ও খুবই চালাক ব্যক্তি, যিনি নিজের ব্যক্তিগত ক্ষমতা ছাড়া কিছুই চান না?
আমার পক্ষে আজ পর্যন্ত এ প্রশ্নের একটা সন্তোষজনক জওয়াব দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, যদিও তাঁকে আমি জানি বহু বছর ধরে আর ভালোভাবেই জানি, তবু ইবনে সউদের চরিত্রের একটা দিক আজো আমার কাছে অবোধ্যই রয়ে গেছে।
ব্যাপার এ নয় যে, তিনি মনের ভাব অন্যের নিকট থেকে কোন না কোনভোবে গোপন রাখতে অভ্যস্ত; তিনি নিজের সম্বন্ধে কথা বলেন খোলাখুলি এবং প্রায়ই বর্ণনা করেন নিজের অভিজ্ঞতার কথা; কিন্তু তাঁর চরিত্রের এতোগুলি দিক রয়েছে যে, তা সহজে বোঝা কঠিন এবং তাঁর সরলতার যে চেহারা বাইরে থেকে দেখা যায় তার আড়ালে গোপন রয়েছে সমুদ্রের মতোই বিক্ষুব্ধ একটি হৃদয় এবং মেজাজ-মর্জি ও আভ্যন্তরীণ স্ববিরোধিতার দিক দিয়ে যা সমুদ্রের মতোই ঐশ্বর্যশালী।
তাঁর ব্যক্তিগত কর্তৃত্ব বিপুল; কিন্তু তা যতো না নির্ভর করে বাস্তব ক্ষমতার উপর তার চাইতে বেশি নির্ভর করে তাঁর চরিত্রের শক্তির উপর। কথাবার্তায় এবং ভাবভংগিতে তাঁর মধ্যে আহমিকার লেশমাত্র নেই। তাঁর খাঁটি গনতান্ত্রিক মন তাঁকে সাহায্য করে, ময়লা ছেঁড়া তালি দেওয়া কাপড়-চোপড় পরে যে বেদুঈনেরা আসে তাদের সংগে আলাপ- আলোচনা করতে, যেনো তিনি তাদেরই একজন। আর তাঁর এই মন থেকেই তিনি সামর্থ্য পেয়েছিলেন, তাঁকে তাঁর প্রথম নাম ‘আবদুল আজীজ’ বলে সম্বোধন করবে- ওদের এই অধিকার দেওয়ার।
পক্ষান্তরে, তিনি উচ্ছপদস্থ আমলাদের প্রতিও হয়ে উঠতে পারেন রূঢ় এবং ঘৃণাপ্রবণ, যখন তিনি তাদের মধ্যে লক্ষ্য করেন দাস মনোভাব, তিনি ঘৃণা করেন সকল রকম শরাফতির ভান।
মক্কার একটি ঘটনার কথা আমার মনে পড়ছে। শাহী মহলে আমরা খানা খাচ্ছি, নযদের সবচেয়ে অভিজাত পরিবারগুলির অন্যতম এক পরিবারের সর্দারের নাসিকা কুঞ্চিত হলো সমাগত কোন কোন নযদীর অমার্জিত বেদুঈনী’ আচরণে। ওরা উল্লাসের সংগে বড়ো বড়ো মুঠা-ভরা ভাত গিলছিলো গোগ্রাসে; নিজের সুক্ষ্ম রুচিবোধ প্রমাণ করার জন্য মক্কার সেই অভিজাতটি তাঁর খানা আঙুলের ডগা দিয়ে তুলে তুলে যখন খাচ্ছিলেন, তখন হঠাৎ শোনা গেলো বাদশাহর আওয়াজঃ
‘তোমরা রুচিবান লোকেরা তোমাদের খাবার নিয়ে খেলা করো এতো সাবধানতার সংগেঃ এটা কি এ জন্য যে তোমরা তোমাদের আঙুল দিয়ে ময়লা ঘাটতে অভ্যস্ত? আমরা নযদের লোকেরা আমাদের হাতকে ভয় করি না- আমাদের হাত পাক-সাফ পরিষ্কার এবং সে কারণে আমরা খাই তৃপ্তির সংগে এবং মুঠামুঠা করে’।
কখনো কখনো, যখন তিনি একেবারেই আরামে গা ঢেলে দিয়ে আছেন, স্মিত হাসি খেলা করে ইবনে সউদের মুখের উপর এবং তাঁর মুখমণ্ডলের সৌন্দর্যের উপর তা ছড়িয়ে দেয় প্রায় আধ্যাত্মিক এক বৈশিষ্ট্য।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ইবনে সউদ যে গোঁড়া ওয়াহাবী বিধান মেনে চলেন সে বিধানে সংগীত গর্হিত বলে গণ্য না হলে সংগীতের মাধ্যমেই তিনি প্রকাশ করতেন নিজেকে।
কিন্তু আসলে তিনি তাঁর সংগীতধর্মিতার পরিচয় দিয়ে থাকেন তাঁর ছোট্ট কবিতাগুলিতে, তাঁর অভিজ্ঞতার বর্ণাঢ্য বর্ণনাগুলিতে এবং তাঁর যুদ্ধ এবং প্রেমের গানগুলিতে, যা ছড়িয়ে পড়েছে সমগ্র নযদে, যা পুরুষেরা গায় মরু বিয়াবানের মধ্য দিয়ে উটের পিঠে চলতে চলতে এবং রমনীরা গায় তাদের নিজ নিজ ঘরের নির্জনতায়।
তাঁর রোজকার জীবন বাদশাহী দায়িত্বের উপযোগী যে নিয়মিত এবং নমনীয় ছন্দ অনুসরণ করে চলে তাতেই ঘটে তাঁর সংগীতধর্মিতার অভিব্যক্তি। জুলিয়াস সিজারের মতোই এক সংগে এবং একই সময়ে অনেক কটি চিন্তার সূত্র অনুধাবন করার সামর্থ্য তাঁর রয়েছে উচ্চ পর্যায়ের এবং তিনি তা করতে পারেন- যে তীব্রতার সংগে তিনি প্রতিটি সমস্যা মুকাবিলা করেন তা বিন্দুমাত্র ক্ষুণ্ন না করে,
আর এই বৈশিষ্ট্যপূর্ণ সহজাত গুণের জন্যই তিনি পারেন বিভ্রান্তির মধ্যে না পড়ে অথবা অতিরিক্ত পরিশ্রমের দরুন ভেংগে না পড়ে তাঁর বিশাল রাজ্যের সকল বিষয় ব্যক্তিগতভাবে পরিচালনা করতে এবং তাঁর পরও সময় করে নিতে এবং আগ্রহ বাঁচিয়ে রাখতে- রমনীর সাহচর্য নিয়ে এতো ব্যয়বহুল বিলাসিতায় মগ্ন হতে।
তাঁর অনুভূতির সূক্ষ্মতা অনেক সময় প্রায় ভৌতিক, লোমহর্ষক। যে-সব লোকের সংগে তাঁর কারবার, তাদের মনের গতিবিধির একেবারে মর্মস্থলে পৌঁছুবার একটি প্রায় অব্যর্থ সহজাত অন্তদৃষ্টি রয়েছৈ তাঁর- প্রায়ই যেমন আমি নিজে প্রত্যক্ষ্য করবার সুযোগ পেয়েছি- মানুষ কথায় ব্যক্ত করার আগেই মানুষের চিন্তা বা মনের ভাব তিনি বুঝতে পারেন এবং কোন মানুষ কামরায় প্রবেশ করার সংগে সংগেই তাঁর প্রতি সেই মানুষটির মনোভাব তিনি টের পেয়ে যান বলে মনে হয়।
এই ক্ষমতার জন্যই ইবনে সউদের পক্ষে সম্ভব হয়েছে তাঁর জীবন নাশের কয়েকটি অতি সুপরিকল্পিত চেষ্টাকে বানচাল করে দিতে এবং রাজনৈতিক বিষয়ের অকুস্থলে বসেই সৌভাগ্যজনক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে।
যে-সব গুণের বদৌলতে একটি মানুষ মহৎ হতে পারে তার অনেকগুলিই রয়েছে ইবনে সউদের; কিন্তু মহত্ত্ব অর্জনের জন্য কোন সত্যিকার চেষ্টা তিনি কোনদিনই করেননি।
মেজাজের দিক দিয়ে অন্তর্মুখী না হওয়ায় তাঁর যুক্তিভিত্তিক বিচার-শক্তি প্রয়োগের বিপুল ক্ষমতা রয়েছে, একেবারে জ্বলজ্যান্ত সব ভূল-ক্রটির মুকাবিলায় তিনি নিজে যে সঠিক পথে আছেন এ বিষয়ে আত্মপ্রত্যয় সৃষ্টির। আর তাই তিনি সহজেই এড়িয়ে যান সকল প্রকার আত্মবিচার। তাঁকে যারা ঘিরে থাকে- তাঁর সভাসদেরা এবং তাঁর দাক্ষিণ্যের উপর নির্ভরশীল অসংখ্য কৃপাভিক্ষুক- নিশ্চয়ই তারা তাঁর এই দুর্ভাগ্যজনক প্রবণতাকে রুখবার জন্য কিছুই করেনি।
তাঁর তারুণ্যের বছরগুলিতে যখন মনে হয়েছিলো তিনি উত্তেজনা জাগানো স্বপ্নের স্বাপ্নিক, সেই সময়ের বিপুল প্রতিশ্রুতিকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে তিনি হয়তো নিজের অজ্ঞাতেই উচ্চ স্বরগ্রামে বাঁধা একটি জাতির মনকে ভেঙে দিয়েছেন, যে জাতি আগ্রহী ছিলো তাঁকে আল্লাহ-প্রেরিত একজন নেতা বলে ভাবতে।
তাঁর কাছে ওদের প্রত্যাশা এতো বেশি ছিলো যে, ওদের পক্ষে নির্বিকারচিত্তে হতাশাকে মেনে নেওয়া কঠিন; নযদের বাসিন্দাদের মধ্যে যারা সর্বোত্তম তাদের অনেকেই আজকাল অত্যন্ত তিক্ত ভাষায় কথা বলে, তাদের মতে, তাদের বিশ্বাসের প্রতি যে বেওফাই করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে।
আমি কখনো ভূলবো না আমি যে দুর্দশা ও নৈরাশ্যের রূপ দেখেছিলাম আামার এক নযদী দোস্তের মুখে, যিনি এককালে ছিলেন ইবনে সউদের নেতৃত্বে অতি তীব্র বিশ্বাসী এবং বাদশাহর শাহী জিন্দেগীর সবচেয়ে কঠিন বছরগুলিতে বাদশাহর সংগী ছিলেন সুখে-দুঃখে, বিপদে-আপদে, যখন তিনি বাদশাহ সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে একদিন আমাকে বলেনঃ
-‘সেই প্রথমদিকের বছরগুলিতে, আমরা যখন ইবনে সউদের সংগে উট হাঁকিয়ে অভিযানে বেরিয়েছিলাম ইবনে রশিদের বিরুদ্ধে এবং
আমরা যখন ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ- ‘আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই’- এই বাণীখচিত ঝাণ্ডার নিচে উট হাঁকিয়ে বের হয়ে পড়েছিলাম ইসলামের প্রতি সেই বিশ্বাসঘাতক শরীফ হোসেনের বিরুদ্ধে,
তখন আমাদের মনে হয়েছিলো ইবনে সউদ এক নতুন মূসা, যিনি তাঁর কওমকে জাহিলিয়াত এবং অবক্ষয়ের বন্ধুন থেকে মুক্ত করে নিয়ে যাবেন প্রতিশ্রুত ইসলামের ভূমিতে।
কিন্তু তিনি যখন তাঁর কওম এবং তাঁর ভবিষ্যতকে ভুলে গিয়ে কায়েম হয়ে বসলেন তাঁর নবার্জিত আরাম-আয়েশ এবং বিলাসিতা নিয়ে, আমরা ভয়ে শিউরে উঠে দেখতে পেলাম,ইনি এক ফেরাউন…’।
অবশ্য আমার দোস্ত ইবনে সউদের নিন্দাভাষণের বেলায় ছিলেন অতি.. অতিমাত্রায় রূঢ়, এমনকি অবিচারী; কারণ তিনি ফেরাউন নন, জালিম নন; তিনি একজন দয়ালূ মানুষ এবং আমার কোন সন্দেহ নেই যে, তিনি তাঁর কওমকে ভালোবাসেন।
কিন্তু তাই বলে তিনি মূসাও নন। তাঁর ব্যর্থতা বরং এখানেই যে, তাঁর কওম তাঁকে যতো মহৎ বলে কল্পনা করেছিলো সে মহত্ত্বে তিনি পৌঁছুতে পারেননি- এবং যৌবনের তুর্যধ্বনির অনুসরণ করলে তিনি সম্ভবত যা হতে পারতেন তা তিনি হতে পারেননি। তাঁর তুলনা এক ঈগল যে কখনো ডানা মেলেনি আকাশে।
তিনি অনেক… অনেক বড়ো আকারে, কেবল একজন মহানুভব গোত্র- প্রধানই রয়ে গেছেন….।
[এই বইটি সম্পূর্ণ হবার (১৯৩৫) কিছুকাল পরেই ইবনে সউদ ৭৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন এবং তাঁর ইন্তেকালের সংগে সংগে আরবীয় ইতিহাসে একটি যুগের অবসান ঘটে। তাঁর সংগে যখন শেষবার ১৯৫১ ইংরেজির শরৎকালে দেখা করি (পাকিস্তান সরকারের পক্ষে সউদি আরবে একটি সরকারী সফর উপলক্ষে) তখন আমার মনে হয়েছিলো, শেষপর্যন্ত তিনি তার জীবনের মর্মান্তিক অপচয় সম্বন্ধে সজাগ হয়ে উঠেছেন।
এককালে তাঁর যে মুখমণ্ডল ছিলো এতোটা দৃঢ় এবং জীবন্ত, তাই হয়ে উঠেছিলেঅ তিক্ততাব্যঞ্জক এবৃং নিস্পৃহ। তিনি নিজের সম্পর্কে কথা বলেছিলেন- মনে হলো, তিনি যেনো এমন কিছু সম্পর্কে কথা বলছেন, ইতিমধ্যেই যার মৃত্যু হয়েছে এবং যাকে কবরও দেওয়া হয়ে গেছে, যাকে আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়!]
===========
সূত্র: মক্কার পথ (The Road of Mecca)
আল্লামা মুহাম্মদ আসাদ
শাহেদ আলী অনুদিত
=================
বিষয়: বিবিধ
১৪২৭ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
'মক্কার পথ' বইটির সম্পর্কে অনেক আলোচনা শুনি,পড়া হয়নি এখনও।
কিছু অংশ পড়ার সুযোগ করে দেয়ায় ধন্যবাদ ও জাযাকাল্লাহ!
আরেক প্রিন্স নাকি আমেরিকান মডেল কাম আইডল কিম কার্দাসিয়ানের পাছা দেখার জন্য সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয় করেছেন !
এই ধরনের একটি বই থেকে উদ্ধৃতি তুলে আনার জন্য আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।
মন ছুঁয়ে গেলো কথাটি -তাঁর তুলনা এক ঈগল যে কখনো ডানা মেলেনি আকাশে।
তবু মনে হলো ঈগলের বুদ্ধিদীপ্ততার দাবী এটাই যে সে পুরো আকাশের পুংখানুপুখ খোঁজ রাখবে!
আমি হয়তো ভাবার্থ ধরতে পারছি না!
আবারো শুকরিয়া!
তাঁর যোগ্যতা ছিল ঈগলের মত, সুযোগও ছিল পূরো আকাশের খবর রাখার,
কিন্তু তিনি দৃষ্টি আবদ্ধ রেখেছিলেন ভাগাড়ের এক মরা ঊটের উপর!!
উম্মাহর জন্য অনেক কিছুই করা সম্ভব ছিল, কিন্তু করেননি!!
"অনেক কথা যাও যে বলে-
কোন কথা না বলি-... "
বলছে "ব্লকড"
এমন হবার প্রশ্নই ওঠেনা!
আপনার দিক থেকে সম্পাদককে জানান,
আমিও জানাই!
মন্তব্য করতে লগইন করুন