Good Luck কপি-পেস্ট Rose কবুল হজ্ব!!! Good Luck লিখেছেন ম শওকত ৩০ অক্টোবর ২০১১

লিখেছেন লিখেছেন আবু সাইফ ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৩:৩৪:১৪ রাত

Good Luck কপি-পেস্ট Rose কবুল হজ্ব!!! Good Luck

লিখেছেন ম শওকত ৩০ অক্টোবর ২০১১





কবুল হজ্ব!!!

লিখেছেন ম শওকত ৩০ অক্টোবর ২০১১



দুই ছেলে হজ্বে যাবে তাই নিয়ে মাহবুব সওদাগরের বাড়ী খুব ব্যস্ত। নুতন বিয়ে ওদের। এখনি সময় হজ্ব করার, পরে বাচ্চাকাচ্চা হয়ে গেলে কঠিন হয়ে পড়বে। লোকে মনে করে হজ্বটা বুড়ো বয়সের ব্যাপার - বড্ড ভুল ধারণা কারণ হজ্বে খুবই শারীরিক পরিশ্রম হয়। বড়ো ছেলে ছোটাছুটি করে যোগাড়যন্ত্র করছে কিন্তু ছোটকে নিয়ে মহাসমস্যা। ছোটবেলা থেকেই তার রহস্যের শেষ নেই, তার রঙ্গরসের পাল্লায় পড়ে চিরকাল সবাই অস্থির। বাবা প্রস্তুতির কথা জিজ্ঞেস করলেই সে বলে -

“হচ্ছে বাবা হচ্ছে, চিন্তা কোরনা। এ বছর যাদের হজ্ব কবুল হবে তাদের মধ্যে আমারাও থাকব ইনশাআল্লাহ্”।

বাবা আশ্বস্ত হন কিন্তু ছোটবৌ হয়না। তার বাবাও হজ্ব করেছে, সে জানে হজ্বে যেতে হলে কি হুলুস্থুল আয়োজন করতে হয়, কতো জায়গায় কতো ছোটাছুটি করতে হয়। সে দিব্যি দেখতে পাচ্ছে স্বামী তার মহা আরামে গা’ এলিয়ে আছে, যোগাড়যন্ত্রের কোন খবরই নেই। জিজ্ঞেস করলেই হেসে বলে –“আমারটা আমি করছি - তুমি তোমারটা গুছিয়ে নাও তো, শেষে তোমার জন্য দেরি না হয়”। বৌ ত্রস্তে এটা ওটা গোছায় কিন্তু মনে গেঁথেই থাকে সন্দেহটা। তার ওপর সেদিন স্বামী মাহবুব সওদাগরের কাছ থেকে হজ্বের নাম করে আরো এক লাখ টাকা চেয়ে নিল।

কেন নিল?

তারপর একদিন বড় চলে গেল হজ্বের ক্যাম্পে বৌয়ের হাত ধরে। বাবা ছোটকে জিজ্ঞেস করলেন -

“তোর হজ্ব-ক্যাম্প, ফ্লাইট, এসবের কিছুই তো বললি না”।

ছোট হেসে বলে - ‘‘ক্যাম্পে কেন যাব। বাড়ি থেকে সোজা হজ্বে যাব - ব্যবস্থা সবই হচ্ছে - তুমি নিশ্চিন্ত থাকো তো বাবা’’।

বাবা নিশ্চিন্ত হলেন, ছেলে তাঁর জীবনে কখনো মিথ্যে বলেনি। যাবার দিন এল। রওনা হবার সময় বাবা বুকে জড়িয়ে দোয়া করলেন, মা অশ্রুসিক্ত চোখে ছেলে-বৌয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে কি বললেন বোঝা গেল না। গাড়ির ড্রাইভার ডিগ্গির মধ্যে স্যুটকেস পুরে দরজা খুলে দাঁড়িয়ে আছে। মা’কে জড়িয়ে ধরে কপালে ছোট্ট একটা চুমু খেয়ে ছোট বলল -

“মা, দশদিন পর ফিরব। দোয়া করো আর শুটকি রান্না করে রেখো”।

বাবা অবাক হলেন – “দশদিন পর ফিরবি?’’

“ফিরব বাবা, কথা দিচ্ছি হজ্ব করেই ফিরব। ঠাট্টা নয় বাবা - সত্যি বলছি”।

বৌয়ের কানে গেল কথাটা। সে জানে দশদিনে হজ্ব করে ফেরা যায় না। কিন্তু সে এ-ও জানে স্বামী যে দৃঢ় আত্মবিশ্বাসে কথাটা বলেছে নিশ্চিন্ত হয়েই বলেছে। যা সে বলেছে তা করবে। কিন্তু কি করে করবে?

পেছনের সিটে বসল দু’জন - গাড়ী চলা শুরু করলে সে স্বামীর কানে কানে জিজ্ঞেস করে,

“আমরা কোথায় যাচ্ছি গো? হ্যাঁ?’’

“কোথায় আবার, হজ্বে যাচ্ছি”।

“এভাবে কেউ হজ্বে যায়? আসলে কোথায় যাচ্ছি সত্যি করে বলোনা !’’

ছোট হেসে বলে - ‘‘হজ্বেই যাচ্ছি। সবুর করো, একটু পরেই দেখতে পাবে”।

বৌ খুব সবুর করল। তারপর আর পারল না। একটু পরেই বলল -

“বাবার কাছ থেকে এক লাখ টাকা বেশী নিলে কেন?’’

ছোট আবারও হেসে বলল - ‘‘সবুর করো, একটু পরে সেটাও দেখতে পাবে”।

বৌ আবারও খুব সবুর করল। গাড়ী এসে দাঁড়াল বাস ষ্টেশনে। বৌ বলল -

“এ তো বাস ষ্টেশন” !

“হ্যাঁ - বাস ষ্টেশনই তো”।

“বাসে করে হজ্বে যাচ্ছি?’’

“হ্যাঁ। পথে কিছু কষ্ট করতে হবে - পারবে তো?’’

“আমরা হজ্বে যাচ্ছি না। বাসে করে কেউ হজ্বে যায় না। সবাইকে এভাবে ঠকালে”?

“কাউকে ঠকাইনি। এ বছর যাদের হজ্ব কবুল হবে তাদের মধ্যে আমারাও থাকব ইনশা আল্লাহ্। ওখানে গিয়ে বলবে লাব্বায়েক্”।

“মানে কি?’’

“লাব্বায়েক মানে হল আমি হাজির। অর্থাৎ হে আল্লাহ, তুমি ডেকেছ, এই যে আমি হাজির হয়েছি”।

ড্রাইভার ডিগ্গি থেকে বাসে তুলে দিল স্যুটকেসগুলো, মৃদুহেসে বলল -

“আপনেরে হাজার সালাম সার। আপনেরে হাজার হাজার সালাম সার। অ্যামতেই ধীরে ধীরে মুসলমানের চৌক্ষু খুইলা দিব আল্লায়”।

ছোট গম্ভীর স্বরে বলল - ‘‘সব রওনা হয়ে গেছে ঠিকমতো? পরের এক লাখ টাকারটাও?’’

“হ সার। শ্যাষের চালান নিজের হাতে রওনা করাইয়া দিছি পরশু”।

এসব শুনে রমণীয় কৌতুহলের চাপে বৌয়ের অজ্ঞান হবার অবস্থা কিন্তু স্বামীকে মনে হচ্ছে অচেনা। ওই বুকে কি এক অস্থির ঝড় চলছে তা তার চোখ দেখলে বোঝা যায়। তার সদা দুরন্ত কৌতুকময় চোখ দুটো এখন যেন ফ্রেমে বাঁধা ঝড়ের ছবি। বাস চলা শুরু করলে বৌ বলল -

“কোথায় যাচ্ছি আমরা?’’

“রংপুর”।

“রং - পু – র”? আঁৎকে উঠল বৌ, - ‘‘রংপুর কেন? ওখানে তো আমদের কেউ নেই !!’’

স্বামী শক্ত করে চেপে ধরল বৌয়ের হাত। গভীর নিঃশ্বাসে শুধু বলল - ‘‘আমার হাত ধরে থাকো’’।

এবার বৌয়ের হাতও আঁকড়ে ধরল স্বামীর হাত, বুঝল কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে যা আগে কখনো ঘটেনি। বাস চলছে সাভার পার হয়ে। স্বামী হাতের ব্যাগ খুলে বের করল কিছু খবরের কাগজ - একটা একটা করে খুলছে আর সেই সাথে শক্ত দৃঢ় হয়ে আসছে তার চিবুক, ঠোঁটে শক্ত হয়ে চেপে বসছে ঠোঁট। বার বার করে একটার পর একটা কাগজের কি যেন খবর পড়ছে ছবি দেখছে আর ঘন হয়ে আসছে তার নিঃশ্বাস।

দুপুরে রংপুরে বাস থেকে নেমে ঘটঘটে বেবিট্যাক্সীতে গ্রামের পথ। বিকেলে দুর গ্রামের কাছাকাছি আসতেই কানে এল জনতার হৈ হৈ। কাছে এসে বৌ দেখল দাঁড়িয়ে আছে চাল-ডাল-আলু-পেঁয়াজ ভর্তি তিনটে ট্রাক। ভয়ংকর মঙ্গা দুর্ভিক্ষ চলছে উত্তরবঙ্গে, ক্ষুধার দাউ দাউ আগুনে পুড়ে যাচ্ছে কোটি মানুষ। শুকিয়ে যাওয়া অশ্রু চোখে লুটিয়ে ঘুমিয়ে আছে হাড্ডিসার শিশুকন্যা, হাড্ডিসার বালক। চারদিকে অনাহার জর্জরিত নিরুপায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, নিরুপায় যুবক। অন্য এক ভয়ংকর আতংকে আতংকিত ক্ষুধার্ত যুবতি। গত মঙ্গায় শুধু দু’টো নুন-ভাতের জন্য নোংরা ফড়িয়ার বিছানার দুঃসহ স্মৃতি আবার তার সামনে কালনাগিনীর ছোবল তুলে এদিক ওদিক দুলছে। খবরের কাগজে সেসব পড়ছে আর ছবি দেখছে দেশের মানুষ কিন্তু চিনতে পারছে না। সরকারও চিনতে পারছে না। ওরা এ দেশের নয়। ওরা পরিত্যক্ত, ওদের কেউ নেই।

পলকের জন্য টলে উঠল বৌয়ের মাথার ভেতর।

কিন্তু এখন জনতার ক্ষুধিত আর্তনাদ বদলে হয়েছে উৎসবের চীৎকার। ট্রাকের ওপর থেকে তরুণ-কিশোরের দল মহা উৎসাহে ক্ষুধার্ত লোকজনের মধ্যে বিতরণ করছে চাল-ডাল আলু-লবণ তেল। ওড়নাটা কোমরে আচ্ছা করে পেঁচিয়ে ট্রাকের ওপরে দাঁড়িয়ে তাদের নেত্রীত্ব দিচ্ছে মাতবরের মেয়ে ফারহানা পিনু, গ্রামের বুড়োবাচ্চা সবার আপুমণি। তার মায়াময় চেহারায় বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে।

বৌ মুগ্ধ চোখে দেখল মানুষের আনন্দ, তারপর দুষ্টুমি করে বলল ঃ-

“ও !! হজ্বের টাকায় দান-ধ্যান হচ্ছে তাহলে?’’

“দান?’’ চকচক করে উঠল স্বামীর দু’চোখ - ‘‘কিসের দান? কাকে দান? আশরাফুল মাখলুকাত ওরা, আপাততঃ একটু কষ্টে পড়েছে।

আমিতো শুধু উপহার দিচ্ছি, মানুষের প্রতি মানুষের উপহার”।

মুগ্ধ বৌয়ের মুখ ফসকে বেরিয়ে এল - ‘‘তুমি একটা ফেরেশ্‌তা !’’

“না। আমি ফেরেশ্‌তার চেয়েও বড়, আমি বনি আদম। কোরাণ পড়ে দেখ, সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত ৬১”।

তারপর সে তার সেই পুরোন পরিচিত দুষ্টুমিভরা চোখে বললঃ-

“আসলে কি জানো? ব্যবসায়ীর ছেলে তো আমি - উপহারের নামে আমি আসলে ব্যবসা করছি। ধারের ব্যবসা - শ্‌শ্‌শ্‌শ্ ........কাউকে বোলনা

যেন!’’

“ধারের ব্যবসা? এই দুর্ভিক্ষের দেশে?

বিষ্ময়ে বৌয়ের কথা আটকে গেল গলায়। বাক্‌চাতুরীতে আর দুষ্টুমিতে স্বামী তার অনন্য, কিন্তু একের পর এক এত বিস্ময়ের ধাক্কা সে আর সামলাতে পারছে না।

“কিসের ধার? কাকে ধার ?’’

“বুঝলে না? আল্লাহকে ধার দিচ্ছি, প্রচুর লাভ হবে বৌ !’’

“আল্লাহকে ধার দিচ্ছ ? তওবা তওবা !’’

“তওবা মানে? আল্লাহ নিজেই তো মানুষকে ডেকে ডেকে ধার চাচ্ছেন “!

“আল্লাহ মানুষকে ডেকে ডেকে ধার চাচ্ছেন ? তওবা তওবা !’’

“কিসের তওবা ? খুলে দেখ কোরাণ শরীফ - ‘‘এমন কে আছে যে আল্লাহকে দেবে উত্তম কর্জ, আর আল্লাহ তাকে দ্বিগুন বহুগুন বেশী করে দেবেন - সুরা বাকারা আয়াত ২৪৫”।

“কি আশ্চর্য্য !! এই দুর্ভিক্ষের সময়ে কেউ এ আয়াতের কথা দেশের সবাইকে বলে না কেন?’’

“বলা দরকার, রেডিয়ো-টিভি খবরের কাগজ সব জায়গায় বলা দরকার। ঢাকায় ফিরে পড়ে দেখো সুরা মুয্‌যাম্মিল ২০, আত্ তাগাবুন ১৭

আর আল্ হাদীদ ১১। ‘‘আল্লাহকে উত্তম ঋণ দাও....যদি তোমরা আল্লাহকে উত্তম ঋণ দাও তিনি তোমাদের জন্য তা দ্বিগুন করে দেবেন।

....... কে সেই ব্যক্তি যে আল্লাহ-কে উত্তম ধার দেবে, এরপর তিনি তা বহুগুনে বৃদ্ধি করবেন, এবং তার জন্যে রয়েছে সম্মানিত

পুরষ্কার”। এই দশ ট্রাকের ধার দিচ্ছি, রোজ হাশরে বিশ ট্রাকেরও বেশী সওয়াব পাব। তার সবটাই তোমাকে দিয়ে দেব যাও!’’

হেসে ফেলল বৌ, মনে মনে স্বামীগর্বে আবার গরবিনী হল সে। স্বামী চলে ট্রাকের কাছে। ছুটে এল মাতবর আর ইমাম - অনেক কথা হল তাদের মধ্যে। বৌ মুগ্ধ চোখে দেখতে লাগল মানুষের আনন্দ। ক্ষুধার্তের মুখে অন্ন তুলে দেবার মতো আনন্দ আছে? ক্ষুধার্তের মুখে অন্ন তুলে দেবার মতো ইবাদত আছে? দিগ†š— তখন সুর্য্য ডুবুডুবু, মন্দ মন্থরে সন্ধ্যা নামছে। ঝোপের ডালে উড়োউড়ি করছে একটা ফড়িং, মাটিতে ঘোরাঘুরি করছে নামহীন দু’টো পোকা আর পাশ দিয়ে ছুটে যাচ্ছে একদল পিঁপড়ে। কি যেন কি নিয়ে ওরা সবাই খুব ব্যস্ত।

ওদের কেউ কি কখনো না খেয়ে তিলে তিলে মরেছে ?

চমক ভাঙ্গল যখন স্বামী এসে বলল -

“জানো, আমার দেখাদেখি অন্যেরাও কিছু পাঠাচ্ছে”।

“আমার কিছু গয়না আছে। তা থেকে কিছু নাহয়........’’

“গুড ! আমি চাই আমার বৌ বাচ্চাদের কোলে বসিয়ে হাত দিয়ে মুখে তুলে খাওয়াবে, আর আমি ছবি তুলব”।

“তা খাওয়াব, কিন্তু ছবি তুলবে না”।

“আশ্চর্য্য !! ছবি তুলবে না, কেমনধারা মেয়েমানুষ তো তুমি !’’

“এসব ছবি তারাই তোলে যারা পত্রিকায় ছাপায় প্রচারের জন্য”.

“তথাস্তু, ছবি ক্যানসেল, - প্রচারের জঞ্জাল আমাদের দরকার নেই। শোন। মন দিয়ে শোন”।

বৌ মন দিয়ে শুনল, অশরীরী এক দৃঢ়কণ্ঠে স্বামী তার ফিসফিস করে উঠল -

“আমাদের বাড়িতে এককণা দানা থাকা পর্য্যন্ত মানুষের বাচ্চাকে না খেয়ে মরতে দেব না আমি’’।

গভীর মমতায় বৌ বলল - ‘‘এত অস্থির হয়ো না, নিজেকে এত কষ্ট দিয়ো না। মঙ্গা চিরদিন থাকবে না। মানুষ আবার উঠে দাঁড়াবে, ফসল ফলাবে, বৌ বাচ্চা নিয়ে ভালই থাকবে। তখন আমরা মক্কা-মদীনায় হজ্ব করতে যাব”।

“নিশ্চয়ই। হজ্বের তো বিকল্প নেই, সামনে বছর হজ্ব-এর বুকিং আমি দিয়েই এসেছি”।

স্বামী দৃঢ়পদে চলে গেল ট্রাকের কাছে। সামনে ধু ধু খরা বন্ধ্যা জমি - ওপরে অবারিত আকাশ। বৌ কল্পনায় দেখল এয়ারপোর্টে সাদা কাপড়ে মাথা কামানো হাজার হাজার আনন্দিত হজ্বযাত্রী হুড়োহুড়ি করে প্লেনে উঠছে আর বুকভরা তৃপ্তিতে বলছে ‘‘শুকুর আল্ হামদুলিল্লাহ”!! ওদিকে দুরে দাঁড়িয়ে ছোট্ট দু’টো ক্ষুধার্ত ভাই-বোন হাত ধরাধরি করে করুণ চোখে তা দেখছে।

ভাইটা আস্তে করে বলল - ‘‘বড় হইয়া ত’রে হজে লইয়া যামু”।

দ্বিধাগ্রস্ত ছোট্ট বোনটা কি যেন ভাবল। তারপর ফিসফিস করে যেন নিজেকেই প্রশ্ন করল - “ওইহানে ভাত আছে”?

আবারও পলকের জন্য বৌয়ের মাথাটা টলে উঠল।

মায়াময় গ্রামবাংলার হরিৎ-সোনালী কোলাজের আঁচলপ্রা†š— ধীরে নামছে গ্রামবাংলার মায়াময় সন্ধ্যা। চমক ভাঙ্গল যখন পেছন থেকে স্বামী এসে তার পাশে দাঁড়াল। বৌ চোখ তুলে দেখল স্বামীর দু’চোখে জ্বলছে হাজার জোনাকি। সেই চোখ বৌয়ের দু’চোখে গেঁথে স্বামী বলল -

“জানো, নবীজি বলেছেন যার প্রতিবেশী না খেয়ে থাকে সে মুসলমান নয়। যে মুসলমানই নয় তার আবার হজ্ব কি? চলো আমরা আগে মুসলমান হই। ’’

বৌ-এর হাত ছেড়ে সে সোজা হয়ে থমকে দাঁড়াল। পুরো নিঃশ্বাসটা বুকের ভেতরে টেনে একটু আটকে নিল যেন। তারপর দু’হাত সোজা ওপরে তুলে আকাশের দিকে মুখ তুলে সর্বশক্তিতে চীৎকার করে উঠল - ‘‘লাব্বায়েক........!’’

সেই ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হয়ে ভেতর থেকে কাঁপিয়ে দিল বৌয়ের শরীর, দু’চোখ থেকে অঝোর অশ্রুর সাথে অস্ফুটকণ্ঠে তারও মুখ দিয়ে বেরিয়ে এল - ‘‘লাব্বায়েক! লাব্বায়েক!!’’

সুদুর পশ্চিমে দিগন্তবিস্তৃত মরুকেন্দ্রে কাবা শরীফের চারধারে তখন জলদমন্দ্রে ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হচ্ছে লক্ষ কণ্ঠের আকুতি - ‘‘লাব্বায়েক........!!!’’

[লেখক ওয়ার্ল্ড মুসলিম কংগ্রেস-এর উপদেষ্টা বোর্ড-এর সদস্য, দ্বীন রিসার্চ সেন্টার, হল্যাণ্ড-এর রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট, আমেরিকান ইসলামিক লিডারশিপ কোয়ালিশন-এর সদস্য, ফ্রিমুসলিম কোয়ালিশন-এর ক্যানাডা-প্রতিনিধি এবং মুসলিম ক্যানাডিয়ান কংগ্রেস-এর প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ও ডিরেক্টর অফ শারিয়া ল।]

বিষয়: বিবিধ

১১৬৭ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

305524
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৫:৪৭
শেখের পোলা লিখেছেন : আমরা কি এমন হতে পারিনা? আসুন লবাই কিছু কিছু চেষ্টা করি৷ ধন্যবাদ৷
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১০:৫২
247437
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

পঠন ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ- জাযাকাল্লাহ

বাকি কথা আট নং মন্তব্যে
305530
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৮:৪৪
আওণ রাহ'বার লিখেছেন : নানা ভাই পড়লে কয়টা চক্কেট দেবেন?
আগে দামাদামি হোক তাড়পর পড়ি?
Love Struck Love Struck Love Struck Love Struck Tongue Tongue Surprised Surprised Thumbs Up Thumbs Up Thumbs Up Thumbs Up Loser Loser Loser Time Out Time Out Time Out Time Out Time Out Time Out Time Out
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১০:৫৩
247438
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

পঠন ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ- জাযাকাল্লাহ

বাকি কথা আট নং মন্তব্যে

[[চক্কেটের মেশিন বানাতে অর্ডার দেবার জন্য মানুষ খুঁজছি]
305533
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ১০:১৬
হতভাগা লিখেছেন : বাবার টাকা , তাই খরচ করে পুন্য লাভ করছে ।

নিজে কামাই করে এরকম করতে পারতো না ।

হাজী মহসীনের যে দানশীলতার কথা আমরা জানতে পারি সে টাকা তার নিজের না । তা ছিল তার বোন/বোন জামাইয়ের।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১০:৫৪
247439
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..
আপনার তথ্য সঠিক- তারপরেও কথা থাকে.


পঠন ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ- জাযাকাল্লাহ

বাকি কথা আট নং মন্তব্যে
305546
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ১২:০০
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : তুলনাটি খুবই নিন্মমানের। হজ্জ এর প্রচ্ছন্ন বিরোধিতা আছে এই লিখায়।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১০:৫৪
247440
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

পঠন ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ- জাযাকাল্লাহ

বাকি কথা আট নং মন্তব্যে
305557
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০১:০০
মোতাহারুল ইসলাম লিখেছেন : হজ্ব হজ্বই হজ্ব ফরয হলে দান-খয়রাত করে হজ্বের ছওয়াব হাসিল করা যায়, কুরান-সুন্নাহ মোতাবেক এমন বর্ণনা শুনিনি। এটা প্রথম আলো চ্যানেল আই মার্কা প্রচারনা হলো। এর মধ্যে প্রচ্ছন্ন নিও-মুতাজিলার আলামত দেখতে পাওয়া যায়।
305567
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০৩:৫৯
আবু জান্নাত লিখেছেন : মন্তব্য করতে অক্ষম হলাম। জানি না আসলে কি বুঝাতে চাচ্ছেন।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১০:৫৪
247441
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

পঠন ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ- জাযাকাল্লাহ

বাকি কথা আট নং মন্তব্যে
305676
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১২:৫৩
মাটিরলাঠি লিখেছেন :
কিছুই বুঝিনাই। ফরজ ফরজই।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১০:৫৪
247442
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

পঠন ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ- জাযাকাল্লাহ

বাকি কথা আট নং মন্তব্যে
305828
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১০:৫১
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

লেখাটি আমি সামনে এনেছি শুধু পাঠকবৃন্দের প্রতিক্রিয়া ও জ্ঞানীজনের মতামত দেখতে ও জানতে !

এটি একটি গল্প এবং এর বিভিন্নমুখী বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন হতে পারে!

কিন্তু-
লেখক একেবারে ফেলনা কেউ নন বলেই লেখাটি অধিকতর বিশ্লেষণের দাবী রাখে-

-হজ্জ এর প্রচ্ছন্ন বিরোধিতা
-প্রচ্ছন্ন নিও-মুতাজিলার আলামত
-প্রথম আলো চ্যানেল আই মার্কা প্রচারনা
- ...
ইত্যাকার সকল দৃষ্টিকোন থেকেই

যদিও লেখক বলেছেন-


মঙ্গা চিরদিন থাকবে না।
মানুষ আবার উঠে দাঁড়াবে, ফসল ফলাবে,
বৌ বাচ্চা নিয়ে ভালই থাকবে।
তখন আমরা মক্কা-মদীনায় হজ্ব করতে যাব”।



“নিশ্চয়ই। হজ্বের তো বিকল্প নেই, সামনে বছর হজ্ব-এর বুকিং আমি দিয়েই এসেছি”।



“আল্লাহ মানুষকে ডেকে ডেকে ধার চাচ্ছেন ? ’’

‘‘এমন কে আছে যে আল্লাহকে দেবে উত্তম কর্জ, আর আল্লাহ তাকে দ্বিগুন বহুগুন বেশী করে দেবেন - সুরা বাকারা আয়াত ২৪৫”।

“কি আশ্চর্য্য !! এই দুর্ভিক্ষের সময়ে কেউ এ আয়াতের কথা দেশের সবাইকে বলে না কেন?’’

“আমাদের বাড়িতে এককণা দানা থাকা পর্য্যন্ত মানুষের বাচ্চাকে না খেয়ে মরতে দেব না আমি’’
“জানো, নবীজিﷺ বলেছেন যার প্রতিবেশী না খেয়ে থাকে সে মুসলমান নয়। যে মুসলমানই নয় তার আবার হজ্ব কি? চলো আমরা আগে মুসলমান হই। ’’

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৮:৫৯
247469
হতভাগা লিখেছেন : বললেন যে আট নং মন্তব্যে বলেছেন । কি বলেছেন শুধু নিজেরই লেখা গুলো আবার শেড দিয়ে পেস্ট করা ছাড়া ?

নিজের কামাই করা সম্পদ কেউ কি এরকম দান করে ?

বিদ্রোহী কবিও শুনেছি দান করতেন , তবে তা অন্যের কাছ থেকে ধার করে ।
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০০
247545
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

আমার প্রচেষ্টা আপনাদের নজরটা অন্য জায়গায় নেবার!

যাক গে, নাছোড়বান্দা আপনি-
আপনার কথার জবাব দেখছি না দিলেই নয়-

আব্দুর রহমান বিন আওফের ব্যাপারেও কি আপনার একই অভিমত ? ? ?
তিনি তো রিক্ত হয়েই হিজরত করে মদীনায় এসেছিলেন!
305948
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০০
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

আমার প্রচেষ্টা আপনাদের নজরটা অন্য জায়গায় নেবার!

যাক গে, নাছোড়বান্দা আপনি-
আপনার কথার জবাব দেখছি না দিলেই নয়-

আব্দুর রহমান বিন আওফের ব্যাপারেও কি আপনার একই অভিমত ? ? ?
তিনি তো রিক্ত হয়েই হিজরত করে মদীনায় এসেছিলেন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File