**বিষম চক্রঃ বাঁচার উপায় কী!!** ]
লিখেছেন লিখেছেন আবু সাইফ ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৫:৫৮:০৩ বিকাল
] **বিষম চক্রঃ বাঁচার উপায় কী!!** ^^
আমার বয়সটা পঞ্চাশের ঘাট পেরিয়েছে বহুদিন আগে, ষাটের মঞ্জিলের চূড়া বুঝি ঐ দেখা যায়! ডাক্তারসাহেব বললেন নিয়ম মেনে চলতে! কথাটা শুনে একটু রাগ হলো মনে মনে-
“সুনির্দিষ্ট নিয়ম না মেনে চলা”র নিয়মটা কখনো লংঘণ করেছি, এমন অভিযোগ কেউ করতে পারবেনা! তবু কিনা এই আমাকেই নিয়ম মেনে চলার নসীহত শুনতে হলো!
যাক গে, সময় নাকি খুব বেয়াড়া শাসক- হয়তো বাংলাদেশেই তার কোন এক আদিপুরুষের নিবাস ছিল! এখন ইচ্ছে হোক বা না হোক, অন্ততঃ কয়েকদিন একটু জ্বী-হুজুর করাই ভালো! তাই ডাক্তারসাহেবের হুকুম তামিলে লেগে গেলাম! আর বিষম চক্রের ফাঁদে পড়লাম তখনি!
ডাক্তারসাহেবের অভিমত ও পরামর্শগুলো ছিল মোটামুটি এরকম-
-শরীরের ওজন কমাতে হবে! এখন যা আছে তা যদিও বড়মাপের বিপদজনক নয়, কিন্তু বিপদ হতে কতক্ষণ! তাই এটাকে কমিয়ে আনতে হবে বিপদসীমার নিচে!
-প্রেসার বাড়তে পারে- এমন সবকিছু থেকে দূরে থাকতে হবে! তাই ঘুম কম হওয়া চলবেনা!
-খাওয়া-দাওয়ায় বেহিসেবী হওয়াও যাবেনা- বিশেষ কিছু পদ তো একেবারেই এড়িয়ে চলতে হবে! মানে পদ পরিমান দুটোই কমাতে হবে! (মরণের আগেই মরার দশা আর কি!)
-ডায়াবেটিসের কোন লক্ষণ এখনো নেই বটে, কিন্তু দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা, শারীরিক পরিশ্রম না করা- এসব কারণে বিনা নোটিশেই ডায়াবেটিস এসে য়েতে পারে য়েকোন দিন! তাই শারীরিক পরিশ্রম বাড়াতে হবে! (মানুষের আরাম দেখলে ডাক্তারের কষ্ট বা হিংসা হয় কিনা কে জানে!)
যাঁরা আমাকে চিনেন তাঁরাতো জানেন যে আমার খাদ্যতালিকায় হালাল কিছুই বাদ নেই!
আর পরিমানের কথা বলতেও আমার লজ্জা নেই-
দ্য স্লেভ এর ব্লগে কিছুটা ধারণা পাওয়া যেতে পারে!
যদিও তাঁর সাথে আমার কখনো সাক্ষাত বা একত্রে খাওয়া হয়নি- তবে তাঁর পোস্ট পড়ে বুঝেছি যে, খাবার টেবিলে তাঁর সাথে বসার জন্য আমি হয়তো আনফিট হবোনা!
আমার পেটে ক্ষুধার ভাব থাকলে পড়ায় মন বসেনা, পড়লেও মনে থাকেনা, কাজে ভুল হয়, মেজাজে ঊষ্ণতা অনুভব করি, এমনকি ঘুমও আসতে চায়না!
অথচ আমার বিছানায় পিঠ লাগানোর পর দু-মিনিট পার করা দুঃসাধ্য!
আর চুপিচুপি বলি- আমার আত্মীয়-স্বজনরা যত কারণে আমাকে আদর-মহব্বত করেন তার মধ্যে এটাও বোধহয় অন্যতম যে, আমাকে খাইয়ে তাঁরা খাওয়ানোর যে আনন্দটা পান তেমনটা সচরাচর মেলেনা!
যাহোক, একান্ত বাধ্যগত রোগীর মত শুরু করে দিলাম ডাক্তারসাহেবের পরামর্শের অনুশীলন! ^^
শারীরিক পরিশ্রম বাড়ালাম! ঝেড়ে হাঁটা আর ফ্রী-হ্যান্ড ব্যায়াম মিলিয়ে আধাঘন্টা মত! আর শুরু করলাম দিনের বেলা সুযোগমত বিশ-ত্রিশ মিনিট ঘুম!
মাস পেরিয়েছে মনে হয়, কতটা উন্নতি হলো দেখা দরকার! শুরুতেই ওজনটা মাপতে গেলাম- হায় সব্বোনাশ!!
নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে! মাত্র দু-কেজি বেড়েছে!
কী, ভাবছেন ভুল বলছি! মোটেও নয়!! তাহলে কাহিনীটা ভেংগেই বলি-
হাঁটা আর ব্যায়াম করায় ক্ষিদে বেড়েছে,
খাওয়া কমাতে চাইলেও আসলে বেড়ে গেছে নিজের অজান্তেই- যদিও ক্ষিদে রেখেই খাওয়া ছেড়েছি!
আর দিনের বেলার বাড়তি ঘুম ওজন বাড়াতে টনিকের কাজ করেছে!
এখন আপনারাই বলুন- আমার কী করা উচিত!! ?
আমি নিজে কিন্তু একটা উপায় বের করেছি-
-আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কারো উপর কোন মুসিবত আসতে পারেনা!
-প্রত্যেকের মৃত্যুর সময়টা জন্মের আগেই নির্ধারণ করা আছে- এর এক মুহুর্তও আগে-পিছে হবে না!!
সুতরাং............
-বেশীদিন বেঁচে থাকার চেষ্টা করেও লাভ নেই, তাই মরণটা যেন ভালোভাবে সম্মানের সাথে হয়, সে চেষ্টা করাই উত্তম!
-মরতেই হবে যখন, শহীদি মরণ যেন হয়!! এর চেয়ে সম্মানের ও সুখের মরণ আর হয়না!! >-
-শহীদ হই বা না হই- ইচ্ছেটাই যথেষ্ট, যদি তাতে ভেজাল না থাকে!
তাই……….
-ব্যায়ামের সময়টা এমন কাজে লাগাবো যেন শহীদ হবার পথটা সহজ হয়! এজন্য আলকুরআনের দাওয়াত নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে যাওয়াটাই সর্বোত্তম!
-প্রতিরাতের হাফ-মরণ(ঘুম)এর আগে সাইয়্যেদুল ইস্তিগফারের সাবান দিয়ে অশ্রুর লোনাপানিতে গোসলটা সেরে নেয়া!
-আর দিনের ঘুমটা কাজে লাগাবো শেষ রাতের বিশেষ কাজের পরিমানটা আরো বাড়িয়ে দিতে!! এটা মরণের পরের জীবনটাকে সুখী করতে সহায়ক হবে নিশ্চিত!!
কেমন হলো পরিকল্পনাটা!!
পরামর্শ ও দোয়ার হাতটা বাড়াতে কার্পণ্য করবেননা যেন!!
সৌর নববর্ষের শুভেচ্ছা সবাইকে-ঈদ হোক প্রতিদিন!!
বিষয়: বিবিধ
২১০৮ বার পঠিত, ২১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কিন্তু চোখে পড়লোনা কোথাও!!
আসফিনকে নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন বুঝি? সিরিজটা বেশ উপভোগ করেছি!
আল্লাহতায়ালা আপনার কলমে/হাতে বিশেষ কিছু দান করুন
ভীষন লাগলো তাই ধন্যবাদ
এই নিন আপনার প্রিয় হাতুড়ি
@হারিকেন : আর শহীদ হওয়া- সে তো অতূলনীয় সৌভাগ্যের ব্যাপার!!
ভালো থাকুন, দোয়া করবেন!
কিন্তু
দোয়াই তো আমাদের হাতিয়ার-
যেমন সংগ্রামের ময়দানে
তেমনি সৌহার্দের অঙ্গনেও
তাই তো "হারিকেন" হাতে "আওন" খুঁজতে থাকি..
[অন্যদের নাম বললামনা]
ঠিক না কিন্তু আবু সাইফ ভাই।
[যেগুলো এড়িয়ে চলা উচিত সেগুলো বাদ দিতে তো চাই-ই, কিন্তু নিজের আওতায় থাকেনা যে! পরিবেশই বাধ্য করে!]
মন্তব্য ও পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ
খেতে ভুলবেন না.......
আর কলা খেতে যত মজাই হোক-
কেউ খেতে বললে কার-ই বা ভালো লাগে
তবে আপনার কথা আলাদা
জাযাকাল্লাহ খাইর..
মন্তব্য করতে লগইন করুন