হ্যাপী বার্থ ডে
লিখেছেন লিখেছেন আবু সাইফ ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৭:৫৭:০৩ সন্ধ্যা
হ্যাপী বার্থ ডে
হ্যাপী বার্থ ডে টু ইউ. . .
"শুভ জন্মদিন"
""শুভ জন্মদিন এর শুভেচ্ছা" "
কত যে রকমারি শব্দে ও ইমোতে "জন্মদিন এর শুভেচ্ছা" "
এতো এতো শুভেচ্ছা পেতে কার না ভালো লাগে!!
আমারও আর খু-উ-ব ভালো লাগছে!!
(চুপিচুপি বলি- ভালো লাগুক বা না-ই লাগুক, খু-উ-ব ভালো লাগছে বলাটাই নিয়ম! আর এমনটা বলা সুন্দরও বটে!)
তবে আমার কিন্তু সত্যিসত্যিই খু-উ-ব ভালো লাগছে!! জন্মদিন হোক বা না হোক, অসংখ্য মানুষের শুভেচ্ছা ও দোয়া তো পাওয়া যায়, এটা এক্কেবারে নগদ লাভ!!
এতো এতো কাছের দূরের মানুষের এতো এতো দোয়া-শুভেচ্ছার জন্য লাখো-কোটি শুকরিয়া জানাই!
আর সেই সুবাদে আমার জন্মদিনের কথা তো কিছু বলতেই হয়!
আমার জন্মদিনটা যে কতটা বিশেষ দিন ছিল তা আমার পক্ষে হিসেব করে বলা অসম্ভব! আর সে তারিখটা নিয়ে এতো কথা আছে যে বলতে গেলে সাত কাহন হবে! সেদিকে যাবার সাহস একদমই নেই!
?
(তাই বলে আমাকে ভীরু ভাববেন না যেন, আমি কিন্তু মোটেই ভীরু নই! দশ-বিশ-পঞ্চাশজনের অন্যায়ের মোকাবিলায় একাই কথা বলতে পারি!! ছোট্টবেলায় যেমনটা ছিলাম, এখনো তেমনটাই আছি!! তবে একথা আমার মিসেসকে বলবেননা যেন- তাহলে খবর হয়ে যাবে! উনি ব্লগ পড়েননা- তাই রক্ষে!!)
আমার জন্ম হয়েছিল নানীর বাড়িতে, দিনটা ছিল... না থাক, ওটা লুকানোই থাক! সপ্তাহের ঐ বারটা আমার নানীরবাড়ির কাছাকাছি কোন হাটবার ছিলনা! বাজার তো আরো অনেক দূরে! তাই মসল্লা দিয়ে বিশেষভাবে বানানো যে গুড় সারাবছর ঘরে থাকতো তাই দিয়ে উপস্থিত সবাইকে নগদে মিষ্টিমুখ করানো হয়েছিল!
ওদিকে দাদারবাড়িটা ছিল একদম হাটের সাথে লাগানো, মাঝে আর কোন বাড়ি বা অন্য কারো জমি বা ক্ষেতও ছিলনা! আমার জন্মের সুখবরটা বেয়াইকে দিতে নানাজান নিজেই চলে গেলেন! বাড়ির পাশের হাট থেকে রসগোল্লা নিলেন আচ্ছামত- য়েন গাঁয়ের সবাইকে বিলানো যায়! তারপর তো দু-বেয়াই মিলে মহা-খুশীতে আকিকার পরিকল্পনা করে ফেললেন!
এই যা! কথায় কথায় কোথা থেকে কোথায় চলে গেছি! সেসব ঘটনার কথা আরেকদিনের জন্য তোলা থাক, আজ শুধু জন্মদিনের কথাই বলি!
^^
আমার জন্মের দিনটা আম্মা মনে রেখেছিলেন, কিন্তু লিখে রাখেননি! বলতেন প্রথম ছেলেকে হারানোর পাহাড়-ভাংগা সোকার পর পাওয়া ছেলের জন্মতারিখ দিন লিখে রাখতে হয় তবে আমি কেমন মা! এর পরে তো আর কথা চলেনা!
আব্বা কিন্তু তারিখটা লিখে রেখেছিলেন তাঁর পকেট-সাইজ কুরআন শরীফের মলাটের শেষের ভিতর পাতায়! বারসহ বাংলা, হিজরী ও ইংরেজি তারিখ- সেই কুরআনশরীফটা উত্তরাধিকারসূত্রে এখন আমার দখলে!
আমার দাদাও একই কায়দায় তারিখটা লিখে রেখেছিলেন তাঁর হিসাবের খাতায়, যেটাতে জমির ফসলের উশরের হিসাব সের-ছটাকসহ লিখতেন! এখন কয়জনে আর তেমনভাবে ফসলের উশরের হিসাব রাখে! আর কয়জনেই বা আদায় করে!!
আমার সেবাযত্ন সবচেয়ে বেশী করতেন দাদার বাড়িতে বড়ফুফু আর নানার বাড়িতে নানী! আদরের গভীরতায় তাঁরাও আমার জন্মের দিনতারিখটা খুব ভালো করেই মনে রেখেছিলেন!
ঐ যে বললাম- ভীরু ছিলাম না- তাই শিক্ষা জীবন কর্মজীবন সবই ছন্নছাড়া! তিনটা প্রাইমারী, তিনটা হাইস্কুল আর তিনটা কলেজ ডিংগিয়ে তবে ভার্সিটির দেখা পাই- কিন্তু সে ভার্সিটিও আমাকে ধরে রাখতে পারেনি!!
আর ঐসব স্কুলবদলের সময় প্রতিবারই আমার নতুন একটা জন্মতারিখ পেতাম! এমনকি ক্লাশ নাইনে বোর্ড রেজিস্ট্রেশনের পর যে স্কুলবদল তাতেও রেহাই মিলেনি! ফলে এসএসসির ফলাফল স্থগিত! সবাই মিস্টি খায় আর বিলায়, আর আমি হা-করে থাকি চৈত্রের পাখির মত- কখন পাবো রেজাল্ট!!!
তবে জোর গলায় বলতাম- আমি সেন্টারে তো ফার্স্ট হবোই, বেশী কিছুও হতে পারি!! ) )
আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষকবৃন্দ আমাকে একথা বলতে উতসাহিত করতেন! এবং বন্ধুরাও!! প্রায় দেড়মাস পরে যখন রেজাল্ট পেলাম তখন একথার জন্য লজ্জিত হতে হয়নি- আলহামদুলিল্লাহ! >-
প্রত্যেকবার জন্মতারিখ বদলের একেকটা কাহিনী আছে- সেসব আজ নয়!!
তো আসল কথায় আসি- আমার জন্মতারিখ অ-নে-ক, এর মধ্য থেকে টীচারদেরগুলো বাদ দিলেও একহালির বেশী হাতে থাকে- এগুলোর কোনটাই উপেক্ষা করতে পারিনা!!
তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি- প্রতিদিনই আমার জন্মদিন!!
তবে সর্বশেষ সার্টিফিকেটের তারিখটাই অফিসিয়ালী ব্যবহার করি!!
শুভ জন্মদিন!! সবাইকে আবারো লাখো-কোটি শুভেচ্ছা!! ফী আমানিল্লাহ!!
বিষয়: বিবিধ
১৬৪২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন