মোল্লাফাইজেশন অফ এ নেশন

লিখেছেন লিখেছেন জুলিয়া ১২ জুন, ২০১৩, ০৩:১৮:১১ দুপুর



বাংলাদেশে ধর্মীয় মৌলবাদীদের নিয়ে আমি অনেক শঙ্কিত। এ ব্যাপারটি আমি বহুবার বহু জায়গায় বলে বেড়াই। এটা বলার যথেষ্ট কারণও আছে। চোখের সামনে অনেক কিছুই দেখতে হচ্ছে এখন। যা আমাদের অন্ধ ধর্মবিশ্বাস থেকে হাজির হয়। সেই উনিশ শতকে যখন সতীদাহ প্রথা বন্ধ হলো আরও নানা ধর্মীয় গোড়ামি বন্ধ হলো, সে ইতিহাস হয়ত আমাদেরকে আলো দেখতে শিখাতেই পারে। কিন্তু ধীরে ধীরে সে আলো আবার অন্ধকারের দিকেই যাচ্ছে।

গতকাল একটি বিয়ের দাওয়াতে গিয়েছিলাম। নিজের আপন মামাত বোনের বিয়ে। ছেলে পক্ষকে সবাই বলছে "হুজুর ফ্যামিলি"। তা হুজুর ফ্যামিলির অবস্থাটা একটু বর্ণনা করা প্রয়োজন। আগত বরপক্ষের অতিথীদের মধ্যে পঞ্চাশভাগ সাচ্চা মুসলমান। দাড়ি, টুপি যেমন আছে তেমনি নেকাবসহ বোরখাও আছে।

নেকাবসহ বোরখাধারিরা ছবি তুলছেন না। ক্যামেরাম্যান সামনে গেলেই চিল্লা-পাল্লা শুরু করছেন। নেকাব উঠিয়ে সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় মিস্টিমুখও তারা করলেন না। বেশ অবাকই হতে হলো।

আরও অবাক হলাম খেতে বসে। তিনজন বোরখাওয়ালি কোনমতেই খেতে বসবেন না। এই নিয়ে একটা ছোটখাট জটলা হলো। কেন তারা খেতে বসবেন না? কারণ মেয়েদের জন্য আলাদা পর্দা দিয়ে খাবার ব্যবস্থা করা হয়নি। দ্বিতীয়ত, নেকাব পড়ে তো আর খাওয়া যায় না। খেতে হলে নেকাবকে সাময়িক বিরতি দিতে হবে। আর এই সুযোগে যদি কোন ছেলে তাদের দেখে ফেলে? এই সমস্যার সমাধান করা হলো, একটি টেবিলে তাদের উল্টো করে বসিয়ে আর উল্টোপাশেও বসানো হলো কিছু মেয়েকে। তাহলে আপাতত আর সমস্যা থাকে না। এমন যখন অবস্থা আমার এক মামা তখন খুবই বিরক্ত হয়ে বললেন, "অনুষ্ঠানে আসতে পারছে, একসাথে খাইতে বসতে পারবে না কেন"?

কোন ছেলে যদিচ তাহাদের মুখখানা দেখিয়াও ফেলিত, আমার মনে হয় তাদের কাছে এটা "সেক্স" এর মত অপরাধই বোধ হইবে। তা যাহোক, সেই বোরখাওয়ালিদের মধ্যে একজন ছিলেন বয়স্কা। দেখে মনে হলো ষাটের উর্ধ্বে হবে বয়স! তাঁকে ধরাধরি করে তারই মেয়েরা এধার ওধার নিচ্ছেন। এমন সময় আমার এক মামাত ভাই বয়স যার অনূর্ধ্ব ১৪ হবে, তাঁর পাশের একটি সিটে মহিলাকে বসাতে তাঁর মেয়েরা উদ্ধত হলো। ওমা! মহিলা বসলেন না। ষাট বৎসর বয়স্ক মহিলাকে জিজ্ঞাসা করা যায় না। তাই তাঁর মেয়েদের জিজ্ঞাসা করলাম, এখানে বসলে সমস্যা কি? তেনারা অন্যদিকে তাকিয়ে উত্তর করিলেন, আমাদের আম্মা কোন পুরুষের পাশে বসেন না। তখন আমার অনূর্ধ্ব ১৪ বতসরের ভাইটির দিকে তাকিয়ে তাহার পৌরষত্য খুজতে লাগলাম।

সে কথা ভাবতেও আমার অবাক লাগে। আমার কাছে মনে হলো এরা আসলে মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত, অসুস্থ। আমাদের ধর্মীয় মোল্লারা হয়ত চান যে মেয়েরা এমন হয়ে থাকুক। তাহলে তারা নিজে থেকেই শিক্ষা বন্ধ করে দিবে, কাজ করা বন্ধ করে দিবে, ঘরের মধ্যে একটি কোণে বসে বসে স্বামীই ঈশ্বর বলে একমাত্র তারই খেদমত করবে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এমন উদ্ভট জিনিস আমি ২০১২ সাল থেকেই প্রায় বিয়েতেই দেখে আসছি। আমার মনে হয় আমাদের অন্ধত্বের পরিমাণ দিনকে দিন বাড়ছে। সেই সাথে বাড়ছে এমন লোকের সংখ্যা যারা ধর্মের নামে এসবকে গ্রিন সিগ্ন্যাল দিয়ে যাচ্ছেন। তাদেরকে আমরা আদর করে ডাকি বুদ্ধিজীবী।

বিষয়: বিবিধ

২৪৮৭ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

299229
০৪ জানুয়ারি ২০১৫ বিকাল ০৪:৩৩
মিরন লিখেছেন : আগে মনের আবরন জরুরি, হেজাব, নেকাপ আর বোরকা মানুষের মনের পবিত্রতা আনতে পারেনা,
320750
১৮ মে ২০১৫ দুপুর ১২:৪৮
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : এটা হিজাব নিয়া বাড়াবাড়ি ছাড়া আর কিছুইনা, তাবলিগেরা তাদের পরিবারকে এমন করেই রাখে।
320771
১৮ মে ২০১৫ দুপুর ০১:৩৮
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : মেয়েদেরজীবনে একবার কেলেঙ্কারী হয়ে গেলে সে আর সমাজে চলেনা, হোক সেটা ইচ্ছাকৃত ভাবে অথবা অনিচ্ছাকৃত ভাবে, কারণ মেয়েরা হচ্ছে কাচের গ্লাসের মত, যেটা একবার ভেংগে গেলে দ্বিতীয় বার কোন কাজে আসেনা!! কলংকিত জীবনের গ্লানি মৃত্যুর আগ মুহূর্ত্ব পর্যন্ত বহন করতে হয়।

আজকের যুগের নাস্তিক্যবাদী হলুদ মিডিয়া নারী জাতীকে ভোগ্যপণ্যে রুপান্তরিত করেছে। আধুনিকতার নামে কৌশলে ইজ্জত হরণ করতেছে! স্বাধীনতার নামে নারী সমাজকে উলংগ করে রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছে।ক্রমান্বয়ে নারীদের কে জাহিলিয়াতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, যেখানে কন্যা সন্তানদেরকে জীবন্ত কবর দেওয়া হত। জাহেলিয়াতের যুগে কন্যাসন্তানদের অন্তত দুনিয়াতে আসার সুযোগ দেওয়া হত, কিন্তু বর্তমানে আধুনিক জাহেলিয়াতের যুগে মাতৃগর্ভের মধ্যেই কন্যা সন্তানদেরকে হত্যা করা হচ্ছে, দুনিয়াতে আসার সুযোগ টুকুও দেওয়া হচ্ছেনা!!!

সন্মানীত বোনেরা, তোমাদের কে আল্লাহ এতবেশি সন্মানীত করেছেন যে, তোমাদেরকে শুধু স্বামী ও পিতার সম্পত্তিতে অধিকারী বানিয়ে ক্ষান্ত হননি বরং আল্লাহ জান্নাত তোমাদের পায়ের নিচে ঘোষনা করে দিয়েছেন। ইসলাম নারীদের যে বিপুল মর্যাদা ও অধিকার দিয়েছে তা যদি তারা পুরোপুরিভাবে বুঝতে পারতো, তাহলে হয়তো তারা সেই অধিকার ও মর্যাদা আদায় করার জন্য আন্দোলন করতো! হে আপুরা, তোমরা তো আমার মায়ের জাতি, তোমরা কি চাওনা সমাজের সকল মানুষ তোমাদেরকে সন্মান করুক???

সুতরাং আপুদের অনুরোধ করবো, দয়া করে ইসলামকে পরিপূর্ণ ভাবে বুজার ও মেনেচলার চেষ্টা করুন। হিজাব কে মন থেকেই কবুল করুন, আপনার নিরাপত্তার জন্য হিজাবই যথেষ্ট।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File