ভ্রান্ত ‍মুদ্রানীতির যাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছেন প্রবাসীরা

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ লোকমান ২৪ এপ্রিল, ২০১৬, ০৫:০০:০৬ বিকাল

আমরা প্রবাসীরা চোখ বন্ধ করে প্রবাসের ঘানি টেনেই চলেছি। খবরও রাখিনা যে, আমাদেরকে কীভাবে ঠকানো হচ্ছে। রেমিটেন্স রসিদগুলো ফাইলবন্দি করতে গিয়ে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের একটি রসিদ এবং চলতি (২০১৬) সালের মার্চ মাসের একটি রসিদ দেখে খুবই বিস্মিত হলাম। বিস্ময়ের কারণ হলো; ২০১৩ সালে প্রতি AED এর বিপরীতে পেয়েছিলাম ২১.৫২ টাকা আর তিন বছর পর এসে পাচ্ছি ২১.৩৫ টাকা।

বিগত তিন বছরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রায় সবগুলো পণ্য এবং সেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে। বেড়েছে গ্যাস ও বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে ঘর ভাড়া, শিক্ষা, চিকিৎসা, যাতায়াত এবং নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রবা সামগ্রীর দাম। সে অনুপাতে বেড়েছে মানুষের মজুরী ও বেতন। অথচ নিজেদের সুখ বিসর্জন দিয়ে প্রবাসে পড়ে থাকা মানুষগুলোর অর্জিত অর্থের হচ্ছে অবমূল্যায়ন।

প্রবাসী শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির হার খুবই নগণ্য। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বেতন বাড়ার চেয়ে কমার প্রবণতাই বেশী। বিভিন্ন কোম্পানী সুযোগ পেলেই অন্য দেশ থেকে তুলনামূলক সস্তায় শ্রমিক এনে পুরানো শ্রমিকদেরকে হয় কম বেতনে চাকুরী করতে বাধ্য করছেন না হয় ছাঁটাই করছেন। তার উপর দেশীয় ভ্রান্ত মুদ্রানীতির যাঁতাকল!

সাধরণ অর্থে ইউএস ডলারের বিপরীতে দেশীয় টাকা কম পাওয়া তথা দেশীয় মুদ্রা ডলারের কাছাকাছি অবস্থানকে মুদ্রার তেজী ভাব বলা হয়। সহজ কথায় ডলারের বিনিময়ে বেশী টাকা পাওয়াটা দেশীয় মুদ্রার ‘বে-ইজ্জতি’ হয়েছে মনে করেন অর্থনীতিবিদগণ।

অর্থনীতিবিদদের সাথে এখানে দ্বিমত করার কোন সুযোগ থাকতো না, যদি দেশে কোন মুদ্রাস্ফীতি না ঘটতো। যে দেশে মুদ্রাস্ফীতি নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপার, সেখানে প্রবাসীদের সর্বনাশ করে দেশীয় মুদ্রার ইজ্জত রক্ষার কোন মানে হয় না।

অতএব প্রবাসীদেরকে বাংলাদেশের সাথে হালনাগাদ রাখার জন্য প্রতিটি স্থানীয় মুদ্রাস্ফীতির সাথে সাথে সে আলোকে ঘোষণা দিয়ে ডলারের সাথে টাকার পূনর্মূল্যায়ন করা হোক। এতে শুধু প্রবাসীরা লাভবান হবেন তাই নয়, রফতানী আয়ও বৃদ্ধি পাবে। মুদ্রাস্ফীতির কারণে বাজারমূল্য এমনিতেই বৃদ্ধিপায়, সুতরাং আমদানী খরছ কিছুটা বাড়লেও তা খুব বেশী প্রভাব পড়ার কথা নয়।

বিষয়: বিবিধ

১৪৬৩ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

366940
২৪ এপ্রিল ২০১৬ বিকাল ০৫:০৯
কুয়েত থেকে লিখেছেন : সবার সব কিছু বাড়ে বাড়েনা শুধূ প্রবাসিদের কিছুই না ইজ্জত সম্মান না বেতন বোনাস না অন্যকিছু। আসলে প্রবাসিবাই বড়ই অসহায়। ভালো লাগলো লেখাটি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
২৫ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ১১:৩৮
304530
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : নিঃশব্দে প্রবাসীদেরকে ঠকানো হচ্ছে সবদিক দিয়ে। আসলে আমাদের আত্ম চিৎকার অরন্যে রোদন ছাড়া আর কিছুই নয়, কে শুনবে কার কথা?
366945
২৪ এপ্রিল ২০১৬ বিকাল ০৫:৪২
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম প্রিয় ভাই, আপনি লক্ষ লক্ষ প্রবাসীর মনের কথাটাই বলেছেন। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
২৫ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ১১:৪০
304531
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : প্রবাসীদেরকে নিয়ে গলাবাজি করা হয় টকসো’তে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়না।
366955
২৪ এপ্রিল ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:৪৭
আবু জান্নাত লিখেছেন : একবার আন্দালিব রাহমান পার্থ বলেছিলেন, বিমানবন্দনে ভি.আই.পি সংবর্ধনা একমাত্র প্রবাসীদেরই পাওয়া উচিৎ, যারা দেশের টাকা বিদেশে উড়িয়ে এসেছেন তাদের জন্য নয়।

সত্যিই প্রবাসীদের জন্য কারো মায়া দরদ নেই, না সরকারের, না পরিবারের, সবাই শুধু একটাই চায়, বেশি করে টাকা পাঠাও।

বিশ্লষণমূলক পোষ্টির জন্য ধন্যবাদ
২৫ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ১১:৪৩
304532
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : জ্বি ভাই, কে একজন বলেছিলেন প্রবাসীরা যেন ফার্মের মুরগী। ডিমের জন্য যেমন ফার্মের মুরগীর কদর তেমনি টাকার জন্যই প্রবাসীদের কদর।
366986
২৪ এপ্রিল ২০১৬ রাত ১০:০৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : মুদ্রাস্ফিতি কিন্তু এই মুল্য বৃদ্ধির জন্য দায়ি। সেটা কম থাকাই বাঞ্ছনিয়। বর্তমানে মুদ্রাস্ফিতি সত্বেয় বৈদেশিক মুদ্রার মুল্য কমে যাওয়র কারন হচ্ছে চাহিদার অভাব।দেশে শিল্পায়ন নাই তাই বিশেষ আমদানিও নাই কিছু ভোগ্যপন্য ও বিলাসদ্রব্য ছাড়া।
২৫ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ১১:৫৪
304534
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : ঠিক বলেছেন ভাই। তবে প্রবাসীদের অর্থের সঠিক মূল্যায়নের জন্য বাজার মূল্যের সাথে বৈদেশীক মুদ্রা বিনিময় সমন্বয় করা উচিৎ। বিভিন্ন দেশ এভাবে করে থাকে।
367980
০৪ মে ২০১৬ সন্ধ্যা ০৬:৪৭
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : আপনাকে প্রবাস বন্ধু উপাধিতে ভুষিত করা হোক। না হলে আমিই ঘোষণা করব!
১২ মে ২০১৬ রাত ০৮:৪৩
306173
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : ধন্যবাদ মাছুম ভাই।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File