জন্মদিন বিড়ম্বনা এবং কিছু কথা-

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ লোকমান ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৫:৫০:৪৬ বিকাল

জন্মদিন পালন করার কোন ইচ্ছা কখনো ছিলনা আমার এবং করিও না। ইদানিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে বন্ধুরা জেনেযায় কার জন্মুদিন কখন। সে-সুবাদে অনেক বন্ধু শুভেচ্ছা জানিয়ে ইনবক্স করে থাকেন। আমার বেলায়ও গতকাল ঘটেছিল তেমন একটি ব্যপার। অনেক বন্ধু দোয়া এবং শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ফেবু ইনবক্সে। সময় স্বল্পতার কারণে সব বন্ধুদেরকে যথাস্থানে জবাব দিতে পারিনি বলে দুঃখীত। সকল শুভাকাঙ্খি বন্ধুদের জন্য রইলো আন্তরীক দোয়া-শুভকামনা এবং ধন্যবাদ।

মানতেই হবে, ইসলামী শরী’য়াতে জন্ম ‍ও মৃত্যু দিবস পালনের কোন রেওয়াজ নেই। থাকলেতো আল্লার রাসূল (সাঃ) এবং সাহাবায়ে কেরামগণের(রাঃ) জন্ম-মৃত্যু দিবস পালনের বিষয়টি সহীহ হাদীস শরীফে উল্লেখ থাকতো।

তথাপি আলেম নামধারী কিছু ধান্ধাবাজ ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞ লোকদেরকে জড়ো করে আল্লাহর রসূল এবং বিভিন্ন পীর-ফকীরের জন্ম-মৃত্যু দিবস পালন করে সওয়াবের আশায়। এমনকি এসব অনুষ্ঠাণ উপলক্ষে যেসব খানা-খাদ্যের আয়োজন করা হয় তাও খায় শুধু সওয়াবের নিয়্যতে নয়, এর উপরে আছে রোগ বালাই থেকে মুক্তি পাওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন আশা পূরণ হওয়ার নিয়্যতে। নিঃসন্ধেহে এসব কাজ বিদয়াত শুধু নয়, শিরকও।

এখন প্রশ্ন হলো- আমরা সাধারণত কারো জন্মের দিনটি জানার পর তাকে শুভেচ্ছা জানাই, এই শুভেচ্ছা জানানোটাকি মস্তবড় বিদয়াত এবং এজন্য গোনাহগার হতে হবে? আমি কিন্তু মোটেই তা মনে করি না। কারণ এটি সওয়াবের উদ্দেশ্যে করা হয়না, শুধুমাত্র সৌজন্যতার খাতিরে করা হয়। এটিকে মোবাহ বলা যায়, যার কোন গোনাহ-সওয়াব নেই। কিন্তু আমাদের কিছু নূতন দীক্ষা প্রাপ্ত মুসলিম বন্ধু শুধু শুভেচ্ছা জানানোর বিষয়টিও মহা অপরাধ এবং মারাত্মক গোনাহের কাজ মনে করে ‘জাত গেলো’ বলে শুধু নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান নয়, অধিকন্তু ফতোয়া দিয়ে বসেন বিভিন্ন স্কলারের রেফারেন্স দিয়ে।

শুধু জন্ম দিনের হাই-হ্যালো নয়, দুনিয়াতে বহু মোবাহ প্রচলিত রয়েছে যা মুসলমান স্কলারগণ মেনে নিয়েছেন। যেমন ফুটবল সহ নানা রকম খেলা ধূলা। কেউ কি বলতে পারবেন এসবে সওয়াবের ব্যপার রয়েছে? মোটেই না। আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এবং সাহাবায়ে কেরামের (রাঃ) কেউ কোনদিন বিমানে চড়েননি এমন কি আধুনিক যানবাহনেও নয়। আমরা যারা এসব ব্যবহার করি তারা কি বিদয়াত করি? মোটেই না, কারণ তা সওয়াবের নিয়্যতে করা হয় না।

সুতরাং যা শিরক-বেদয়াত এবং গোনাহের কাজ নয় এমন কিছু রীতি রেওয়াজকেও গোনাহের দিকে ঠেলে দেয়া উচিৎ নয়।

পরিশেষে বন্ধুদেরকে আবারও ধন্যবাদ, স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্য যে, আল্লাহর পক্ষ থেকে বরাদ্ধকৃত হায়াতের আরো একটি ধাপ অতিক্রম করে এলাম। জানিনা আর কতদিনের হায়াত বরাদ্ধ আছে। বাকী জীবনটাতে যেন অতীতের সকল গোনাহ খাতা মা’ফ করে নিতে পারি- আল্লাহর নিকট এ তাওফিক কামনা করছি।

বিষয়: বিবিধ

২০২৫ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

343083
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:২৭
আবূসামীহা লিখেছেন : এটা ঠিক যে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানো কোন সরাসরি বিদআত নয়। কিন্তু আগ্রহ উদ্দীপনা নিয়ে করা হয় তা মুসলমানদের উৎসবগুলোকে ছাড়িয়ে যায়। আমাকে কেউ উইশ করলে আমিও একটূ বিড়ম্বনায় পড়ি। তবে এটা আমাদের জন্য একটা স্মারক হতে পারে।
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৩৮
284475
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ, আবূসামীহা ভাই।
343086
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৩৯
শেখের পোলা লিখেছেন : সহমত৷
343101
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:০৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো। বিষয়টা ব্যাক্তিগত পর্যায়ে থাকলে বিশেষ সমস্যা থাকার কথা নয়। কিন্তু উইশ থেকে পার্টি হইলেই সমস্যা।
343117
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:৪৫
মোহাম্মদ মুজিবুল হক লিখেছেন : আপনার কথায় আমিও একমত
343121
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:৫৮
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..


যা শিরক-বেদয়াত এবং গোনাহের কাজ নয় এমন কিছু রীতি রেওয়াজকেও গোনাহের দিকে ঠেলে দেয়া উচিৎ নয়।


রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো। বিষয়টা ব্যাক্তিগত পর্যায়ে থাকলে বিশেষ সমস্যা থাকার কথা নয়। কিন্তু উইশ থেকে পার্টি হইলেই সমস্যা।


যথার্থ বলেছেন, সহমত

জাযাকুমুল্লাহ
343146
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৩:৫৪
কাহাফ লিখেছেন :
সওয়াবের নিয়তে মনগড়া ইবাদতের নামই বিদাত,যা পরিত্যাজ্য সব সময়ই!
তবে সামাজিকা অনেক মোবাহ বিষয় কে জোড় করে হারাম করে নেয়া পুর্ণ মুমিনের আকামত নয়!
আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন।আমিন!
343592
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:৩৪
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : সুন্দর ও শিক্ষণীয় পোস্টের জন্য ধন্যবাদ জানবেন। আসলে শিরক ও বিদআত সম্পর্কে ভাসাভাসা জ্ঞানের কারণে আমরা না বুঝে মোবাহ কাজগুলিকেও বিদআত এমনকি শিরক নামে আখ্যায়িত করে বসি। অনেকে শুধুমাত্র মাযহাব মানার কারণেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বিদয়াতী বলে রায় দিয়ে বসেন। আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝ দিন।
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৫:২৭
285142
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : ঠিক বলেছেন ভাই।
343768
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০১:১৭
নুর আয়শা আব্দুর রহিম লিখেছেন : আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহামাতুল্লাহি ওবারাকাতুহু। জম্মদিন পালন করা কোনো ভাবে সমর্থন যোগ্য নয়....! কারন জম্মদিনকে অন্য ধর্মের লোকেরা ইবাদত হিসেবে নিয়েছে.... ইসলামে সেহেতু রেওয়াজ নেই সেহেতু পালন না করাই উত্তম। ধন্যবাদ।
350061
১৭ নভেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৫:০৮
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : একেকটি জন্মদিন বা দিবস এগিয়ে আসা মানে মৃতু্দিবসকে স্বাগত জানানো..!কেন আমাদের এখনও বোধ হচ্ছে না?
ধন্যবাদ..

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File