প্রবাস কাহিনী- ৪
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ লোকমান ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১১:৩৫:৩৪ সকাল
প্রায় পাঁচ ঘন্টা আকাশে উড়ে আমাদেরকে বহনকারী বিমানটি আবুধাবী আন্তুর্জাতিক বিমান বন্দরে আবতরণ করলো। ইমিগ্রেশন ইত্যাদি যথাসময়ে সমাপ্ত করে বের হতে হতে আব্বাকে খুঁজতেছিলাম। কিন্তু না, নজরে আসছে না। একটু দূর থেকে এক দ্বিনী ভাই, সৈয়দ আহমদ (মরুহুম) আমাকে ইশারা করলেন ওনার দিকে যাওয়ার জন্য। তিনিই আমাকে নিতে এসেছেন। জানতে চাইলাম, আমার আব্বা আসেননি কেন? জানালেন একটু অসুস্থ তাই আসতে পারেন নি। তিনি এয়ার পোর্ট থেকে আমাকে সরাসরি নিয়ে গেলেন আবুধাবী সেন্ট্রাল হসপিটালে। হাসপাতালে গিয়ে আমি হতবাক! আব্বার একটি বড় অপারেশন হয়েছে গতকাল, আমাকে শুনানো হয়নি দুশ্চিন্তা করবো ভেবে। অপারেশনটি সফল হওয়াতে আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করলাম।
সেরাত হাসপাতালের কেবিনেই থেকেছি আব্বার সাথে। অত্যন্ত পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন কেবিনের মধ্যে রেয়েছে রুগীকে পর্যবেক্ষণের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, কলিং বেল, টেলিফোন সুবিধা, চেয়ার-টেবল, আলমিরাসহ একটি সুসজ্জিত কামরা।
হাসপাতালের বাহিরের পরিবেশও অত্যন্ত মনোরম। এম্বুলেন্স এবং রোগীর আনাগোনা চোখে না পরলে কোন আগন্তুকের নিকট এটি ‘ফাইভ স্টার হোটেল’ বলে ভ্রম হওয়ার সম্ভাবনা থকাতো।
আমাদের দেশের হাসপাতাল, বিশেষ করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সাথে এর কী তুলনা করবো তা বুঝে উঠতে পারছি না। যেখানে রুগীর জন্য কেবিন দূরে থাক, নুন্যতম লক্ষর-ঝক্কর টাইপের সিট বরাদ্দ পাওয়াও ভাগ্যের ব্যাপার। ময়লা আবর্জনার মধ্যে গরু ছাগলের মতো রোগীকে কোন রকম মেঝেতে শুইয়ে রাখা হয়। ইদানিং বড় ছোট প্রায় সব ডক্তারই কোন না কোন প্রাইভেট ক্লিনিক-হাসপাতালের সাথে জড়িত। সেকারণে হয়ত সরকারী মূল্যবান হাসপাতালটি উন্নত করার কোন দাবী বা আন্দোলন হয় না।
পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার অবস্থা বলতে গেলে বলতে হয়, ইহা যেন একটি বিরাট ময়লার ডিপো। নাক চেপে ধরেও দুর্গন্ধ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়না। সরকারী অনুদান বাদ দিলেও বিদেশ থেকে যেসব সাহায্য পাওয়া যায় তার সঠিক ব্যবহার হলেও এই প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা সম্ভব বলে মনে করেন বিজ্ঞজনেরা।
সেরাতে খাবার খাইয়েছিলেন হাসপাতালের একজন ইন্ডিয়ান স্টাফ, তার বাসা ছিল হাসপাতালের কাছাকাছি। আমাদের দেশের হাসপাতালের স্টাফরা ছাতক পাখীর মতো চেয়ে থাকে কিভাবে আপনার পকেট কাটা যায়। বাংলাদেশী ডাক্তার শরীফ এবং তার স্ত্রী আবুধাবী আহলিয়া হাসপাতালে কাজ করেন। একদিন কথা প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মেডিকেলের স্টাফদের আচরণ প্রসঙ্গে বললেন, একবার তারা দু’জন কোন এক অসুস্থ আত্মীয়কে লিফটে করে ৪ তলায় নেয়ার সময় লিফটম্যান তাদের নিকট থেকেও টাকা নিয়ে ছেড়েছেন, অথচ তারা দু’জন ওখান থেকেই পাশ করে বের হয়েছেন।
বিষয়: বিবিধ
১১৯৮ বার পঠিত, ২১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ।
লেখা মনে হয় আরেকটু বড় করলে ভালো হয়।
সুন্দর পোষ্ট, অনেক অনেক ধন্যবাদ
আবুধাবি শেখ খলিফা মেডিকেলে আমি ১ দিন ছিলাম।
ধন্যবাদ আপনাকে
ধন্যবাদ..
মন্তব্য করতে লগইন করুন