পায়ের ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়লিনা, সেটা আবার সালাম হলো!!

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ লোকমান ২৮ জুলাই, ২০১৫, ১০:১০:৪২ সকাল

বছর কয়েক আগের ঘটনা। এক নিকটাত্মীয় আমার বাসায় বেড়াতে আসলে যথা সম্ভব হক আদায় করে মেহমানদারী করার চেষ্টা করেছি। কয়েকদিন পর অন্যান্য আত্মীয়ের মুখে শুনলাম, উক্ত মেহমান আমার বাসায় এসে সন্তুষ্ট হতে পারেনি, কারণ আমার মেয়ে তাকে সালাম করেনি।

আমরা দীর্ঘদিন সপরিবারে আরব দেশে অবস্থান করেছি, যেখানে হাটতে, বসতে, চলতে ফিরতে সর্বত্র সালামের সয়লাব। হিন্দু-বৌদ্ধ-ইহুদী-নাসারা থেকে শুরু করে নাস্তিকেরাও সালাম বিনিময়ে কার্পণ্য করেনা এখানে। এমন একটি দেশে যে মেয়েটি শিশু শ্রেণী থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত লেখা পড়া করে আসলো, সে এদেশে এসে কিভাবে সালামের অভ্যাস ত্যাগ করলো?

মেয়েকে জিজ্ঞেস করলাম, ওমুককে সালাম করোনি কেন? মেয়ে খুবই অবাক হয়ে জবাব দিয়েছিল, ‘আমিতো সালাম করেছি, আব্বু!’ তখন আমরা ধরে নিয়েছি, মেয়ে নিশ্চয়ই এমন ক্ষীণ কণ্ঠে সালাম দিয়েছে, যা ঐ আত্মীয় শুনতে পায়নি। আগন্তুকের কানের পর্দায় সালামের বাণী পৌঁছাতে ব্যর্থতার কারণে সেদিন মেয়েকে বেশ বকা দিয়েছিলাম।

ঘটনাক্রমে এবারের ঈদে কিছু সময় উক্ত আত্মীয়ের সাথে কাটানোর সুবাদে লক্ষ্য করলাম, সে পায়ের উপর হুমরি খেয়ে পড়াকেই সালাম মনে করে। “আসসালামু আলাইকুম” শব্দদ্বয় তাকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। আমাদের ভুলটা ভাংতে বেশ সময় নিয়েছিল।

পায়ে হাত রেখে কপালে ঘষা নয়, জীবনভর পায়ের ওপর কপাল ঘষলেও একবার ‘আসসালামু আলাইকুম’ আর ‘ওয়া আলাইকুম সালাম’ এর সমতুল্য হবে না। আল্লাহ আমাদেরকে বুঝার তাওফিক দান করুন।

বিষয়: বিবিধ

১৩১০ বার পঠিত, ২৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

332155
২৮ জুলাই ২০১৫ সকাল ১০:২৮
হতভাগা লিখেছেন : এটাকে কদমবুসি বা পায়ের ধুলো নেওয়া বলে ।

মুরুব্বী গোছের কাউকে পা ধরে সালাম না করলে সেটাকে আমাদের সংষ্কৃতিতে বেয়াদবী বলে মনে করা হয় ।

ইসলামী শরিয়তের সাথে সাংঘর্ষিক অনেকগুলো কাজের মধ্যে এটাও অন্যতম।

সালাম দেবার ও জবাব দেবার সময় ডান হাত কপালে ঠেকানো (স্যালুটের মত) করা কি ঠিক ?

দিনে একজনকে কয়বার সালাম দেওয়া যায় ? মাসজিদে সালাম দেওয়া যায় কি ?
৩১ জুলাই ২০১৫ সকাল ০৮:৩০
275037
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : সালাম আদান প্রদানের সময় ডান হাতে ঈশারা তথা হাত উপরে তুলতে প্রায় দেখি, মনে হয় না এটি খারাপ কিছু। তবে এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
সালামের ব্যাপারে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)এর বাণী হলো : দু’জন লোক কোন গাছের আড়াল থেকে পরস্পর দেখা হলে তখনও যেন সালাম বিনিময় করা হয়, অর্থাৎ সালামের কোন সীমা নেই, কতবার করতে হবে। মসজিদতো সালাম আদান প্রদানের একটি সর্বোত্তম যায়গা। ধন্যবাদ।
332157
২৮ জুলাই ২০১৫ সকাল ১০:২৯
মু নূরনবী লিখেছেন : ঠিক বলেছেন।

ধন্যবাদ।
৩১ জুলাই ২০১৫ সকাল ০৮:৩১
275038
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
332165
২৮ জুলাই ২০১৫ সকাল ১১:১৬
এ,এস,ওসমান লিখেছেন : এ মাথা সৃষ্টা ছাড়া আর কারুর কাছে নত করবার অনুমতি নায়।
৩১ জুলাই ২০১৫ সকাল ০৮:৩২
275039
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : ঠিক বলেছেন, মাথা আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে নত করার অনুমতি নাই।
332167
২৮ জুলাই ২০১৫ সকাল ১১:২৮
আহমদ মুসা লিখেছেন : ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানরা বেশীর ভাগই হিন্দু এবং বৌদ্ধ ধর্ম থেকে রিভার্ট হয়ে ইসলামের দিকে এসেছে। বিশেষ করে এতদঞ্চলের মানুষ অধিকাংশই অগ্নীপুজারী ও পৌত্তলিক উদ্ভট কালচার পরিত্যাগ করে ইসলামের সুমহান ও শাশ্বত মহিমার ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছে। আজকে যারা হিন্দু নামে পরিচিতি লাভ করে মূলত তাদের রীতি রেওয়াজের মধ্যে বড় বা মুরুব্বীদের সম্মান ও তোয়াজ করার ক্ষেত্রে যেসব শিরকী পদ্ধতিসমূহ চালু ছিল সেখান থেকেই মুসলিম সমাজে কিছু কিছু রেওয়াজ অনুপ্রবেশ ঘটেছে। তাদের রেওয়াজগুলোর কতক হুবহু রয়ে গেছে মুসলিম সমাজে আবার কতক বিকৃত হয়ে জগাখিছুড়ী টাইপের নতুন পদ্ধতির উদ্ভব ঘটেছে যা অনেকাংশে ইসলাম সাপোর্ট করে না। পায়ে ধরে সালাম করার রেওয়াজটাও হিন্দুদের কাছ থেকে এসেছে। এই উপমহাদেশে আজ মুসলিম সমাজে কবরপুজা তথা মাজার কেন্দ্রীক যেসব শিরক বেদআত চালু আছে তা হিন্দু এবং বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাবেই হয়েছে। সম্ভবত আরব জাহানের শিরক বেতআদের অন্ধ অনুসারী যারা রয়েছে তাদের রীতি রেওয়াজ ও উপমহাদেশীয় মুসলিম কমিউনিটির বেদআত ও শিরকী কাজ কামের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে।
৩১ জুলাই ২০১৫ সকাল ০৮:৩৮
275040
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : ধন্যবাদ আহমদ মূসা ভাই। আমার মনে হয় যারা শুরুতে বুঝে ঈমান গ্রহণ করেছিলেন তারা সমস্ত অপকর্ম ছেড়ে দিয়েই মুসলিম হয়েছিলেন। পরবর্তীতে হিন্দু এবং ইংরেজ শাসনামলে মুসলমানেরর তাদের চাপে দিকভ্রান্ত হয়ে এ্সবে লিপ্ত হয়েছেন। যেমন আমার দাদার জমিনের দলীল এবং পুরানো গৃহস্তালী জিনিষ; ডেক,চিলমচি ইত্যাদির মধ্যে নামের আগে ‘শ্রী’লিখা রয়েছে।
332173
২৮ জুলাই ২০১৫ সকাল ১১:৫২
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এই কাজের পক্ষে অনেকে যুক্তি দেন যে এটা নাকি এখন সমাজের প্রখা হয়ে গেছে তাই অবশ্য পালনিয়!!! আর এটা চালু থাকার পিছনে তথাকথিত পির সাহেবদেরও অবদান আছে।
৩১ জুলাই ২০১৫ সকাল ০৮:৩৮
275041
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : ঠিক বলেছেন, সবুজ ভাই।
332192
২৮ জুলাই ২০১৫ দুপুর ০১:৫০
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন :


লোকমান ভাই এভাবে মনে হয়!
৩১ জুলাই ২০১৫ সকাল ০৮:৩৮
275042
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : হা হা হা।
332195
২৮ জুলাই ২০১৫ দুপুর ০২:০৪
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনেক অনেক দিন আগের কথা:
একদা এক আরব দেশের পীর বাংলাদেরশের গ্রামে আসিয়াছিল। তিনি এক বাড়ীতে আসন লইলে সকলে তাহাকে কদম বুচি করিতে লাগিয়া গেল। তিনি যার পরনাই বিব্রত হইলেন। একজনকে জিজ্ঞাসা করিলেন মানুষেরা পায়ে ধরিয়া কি করিতেছে? কেন করিতেছে?

একজন শোধালেন এটা একটা উত্তম কাজ, কাউকে সম্মান করিতে এই কাজ করিতে হয়!

সম্মানী ও লোভনীয় কাজের নমুনা পাইয়া, পীর সাহেব নিজেই আগত মানুষদের কদম বুচি করিতে লাগিয়া গেলেন। সাধারণ মানুষেরা তওবা তওবা করিয়া পালাইয়া গেল!

পীর প্রশ্ন করিলেন, তাহারা পালাইতেছে কেন?

উত্তর জানাইলেন, শরম পাইয়া পালাইতেছে।

তিনি তাজ্জব হইয়া বলিলেন, কদম বুচি করা যদি সেরা কাজ হয়, তাহলে সে কাজ পীরের জন্যও তো সেরা, পীরও কদম বুচি করা লাগবে।

আর সেটা যদি মুরীদের জন্য শরমের কাজ হয়, তাহলে পীরের জন্যও শরম।

পীর কহিলেন, একটি কাজের তো দুইটি আলামত থাকিতে পারেনা! যেটা কাহারো জন্য গৌরব আবার কাহারো জন্য শরম সৃষ্টি করিতে পারে।
৩১ জুলাই ২০১৫ সকাল ০৮:৩৯
275043
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : সুন্দর! অসংখ্য ধন্যবাদ টিপু ভাই।
332212
২৮ জুলাই ২০১৫ দুপুর ০৩:১০
আবু জান্নাত লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, এটা হিন্দুদের সংস্কৃতি, এদেশে ইসলাম ধর্ম প্রচার হলেও অনেক হিন্দু সংস্কৃতি এখনো ঠাই দাডিয়ে আছে, তন্মধ্যে এটিও একটি। কবে যে আমাদের হুশ হবে! আল্লাহ তায়ালা সবাইকে সঠিক ইসলাম বুঝার তাওফীক দান করুক। জাযাকাল্লাহ খাইর
৩১ জুলাই ২০১৫ সকাল ০৮:৪০
275044
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : আল্লাহ রহম করুন। জাযাকাল্লাহ খাইরান।
332342
২৯ জুলাই ২০১৫ রাত ১২:৫৩
আবু জারীর লিখেছেন : পায়ে হাত রেখে কপালে ঘষা নয়, জীবনভর পায়ের ওপর কপাল ঘষলেও একবার ‘আসসালামু আলাইকুম’ আর ‘ওয়া আলাইকুম সালাম’ এর সমতুল্য হবে না। আল্লাহ আমাদেরকে বুঝার তাওফিক দান করুন।


বরং তাতে উল্টটা হবে।
ধন্যবাদ।
৩১ জুলাই ২০১৫ বিকাল ০৪:৪৭
275106
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : জ্বি,আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ, কবির ভাই।
১০
332415
২৯ জুলাই ২০১৫ দুপুর ১২:১৭
দ্য স্লেভ লিখেছেন : সালাম মুবারক ও কদম মুবারক তো এক হাইতে পারে না। সুন্নাহ হল সালাম...আর প্রথা হইলো মাথা ঘষা...
৩১ জুলাই ২০১৫ বিকাল ০৪:৪৮
275107
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : সেটাই তো। আমাদের মুরুব্বীরা কিন্তু খুব সহযে বুঝেননা বিষয়টি।
১১
335580
১৩ আগস্ট ২০১৫ সকাল ১১:৩৫
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
১২
337548
২২ আগস্ট ২০১৫ বিকাল ০৪:৪৭
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : এবার চট্টগ্রাম বেড়াতে গিয়ে মজার একটা বিষয় দেখলাম সবুজ কবির ভাইয়ের কল্যাণে। ফিরিঙ্গিবাজার, অভয়মিত্র ঘাট এ জনৈক ব্যক্তি একটি দোকান ভাড়া নিয়ে লালসালু টানিয়ে মাজার ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে যেখানে আগে থেকে কোন মাজারের অস্তিত্ব ছিল না। আমিতো এটা দেখে থ! মাজার নিয়ে ধান্ধাবাজি কি পর্যায়ে পৌছেছে।
২৬ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ০১:০৮
279483
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : এদেশের বোকা লোকদেরতে ধর্মের নামে ধোকা দেয়া খুবই সহজ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File