ছাত্রজীবনের টুকিটাকি- ১৬
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ লোকমান ২৭ জুন, ২০১৫, ০২:০৭:৩৯ দুপুর
আনোয়ার হোসেন নামে আমাদের পূর্বের ব্যাচের একজন বড় ভাই চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে ভর্তি হয়েছিলেন ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং এ। তিনি মানবিক বিভাগ থেকে এস এস সি পাশ করেছিলেন। সংবাদটি জেনে খুবই আপ্লুত হলাম। পলিটেকনিকে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং এর জন্য যদি সাইন্স থেকে পাশ করা বাধ্যতামূলক না হয়, তা হবে আমার জন্য সোনায় সোহাগা। সুতরাং আর দেরী কেন? আনোয়ার ভাইয়ের সাথে দ্রুত সাক্ষাত করে সত্যতা নিশ্চিত হলাম এবং তাঁর নিকট থেকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা গ্রহণ করলাম। তিনি আমাকে কিছু বই পড়ার সাজেস করলেন এবং বললেন ভালো করে প্রিপারেশন নিলে ভর্তি নিশ্চিত।
পলিটেকনিকে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিংএ ভর্তি হওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে স্ট্যাডি শুরু করলাম। এতটাই আশান্বিত এবং নিশ্চয়তার সাথে অধ্যয়ন করতে লাগলাম, অন্য কোন কলেজ থেকে ফরম সংগ্রহ করাও জরুরী মনে করলাম না।
ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়ে তো আমার প্রায় খেই হারানোর অবস্থা। একেতো আসন সংখ্যার বিপরীতে অসংখ্য পরিক্ষার্থী তার উপর প্রায় বেশীর ভাগ সাইন্স থেকে, সাইন্সে উচ্চ-মাধ্যমিক এবং বিএসসি অধ্যয়নরত অনেকের সাথেও পরিচয় হলো, যারা আমার সাথে পরিক্ষার্থী। তাদের সাথে প্রতিয়োগীতায় আমি টিকতে পারবো তো!
যথা সময় লিখিত পরীক্ষার ফল বের হলো এবং ভালই পাশ করলাম। তারপর আসলো মৌখিক পরীক্ষার পালা। আমার প্রতি প্রথম প্রশ্নটি ছিল- পতেঙ্গা কিজন্য বিখ্যাত? জবাব দিলাম, বিমান বন্দর এবং তরমুজের জন্য বিখ্যাত। তখন পতেঙ্গার তুরমুজ খুব নাম করা ছিল। দ্বিতীয় প্রশ্নটি ছিল রাউজানের সংসদ সদস্য কে? এই প্রশ্নটি করার কারণ ছিল সম্ভবত সে বছরই রাউজান খুব আলোচিত আসনে পরিনত হয়েছিল। প্রেসিডেন্স জিয়াউর রহমানের সময় সালাহ উদ্দীন কাদের চৌধুরীর বিপরীতে জহির উদ্দীন খাঁনকে রাউজান থেকে জিতিয়ে আনা হয়েছিল। এ উপলক্ষে মন্ত্রী এমপিদের ব্যাপক উপস্থিতির ফলে রাউজানকে তখন দ্বিতীয় রাজধানী বলে মজা করা হতো, যেমনটি এরশাদের সময় জিয়াউদ্দিন বাবলুকে জেতানোর জন্য করা হয়েছিল। যাই হোক, সংসদ সদস্যের নাম বলতে গিয়ে আমি থেমে গেলাম। কারণ তাঁর ডাক নাম ‘ব্যম্বো খান’ এতটাই প্রচার পেয়েছিল, যে কারণে প্রকৃত নাম ‘জহির উদ্দিন খান’ স্মরণেই আসছিল না। ওনার ভালো নাম এ মুহুর্তে স্মরণ আসছে না স্যার, তবে ‘ব্যম্বো খাঁন’ নামে তিনি খুব পরিচিত- আমি জবাব দিলাম। জবাব শুনে বোর্ডে হাসির রোল পড়ে গেলো।
আর কথা না বাড়িয়ে ইন্টারভিউ বোর্ড থেকে আমাকে বলো হলো, ‘তোমাকে আমরা কমার্সিয়াল ডিপ্লোমাতে রেফার করতে চাই, সেখানে তুমি খুব ভালো করবে।’ সম্মানিত স্যারদের সাথে বেশী আর্গুমেন্ট করার সাহস ও মেন্টালিটি তখনো খুব একটা গ্রো করেনি তখন। শুধু বললাম, কমার্সিয়াল ডিপ্লোমায় আমি আগ্রহী না স্যার। আচ্ছা তুমি এসো, আমরা দেখছি- বলে বিদায় করলেন। স্যারদের সুবিবেচনার প্রত্যাশা নিয়ে ফিরে আসলাম।
চলবে.....
বিষয়: বিবিধ
১১০৮ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সে সময় কমার্শিয়াল ডিপ্লোমা ধারি রা সহজেই ব্যাংক ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি পেতেন।
ধারাবাহিক নাটকের মত রহস্য কেন ভাই?
আমরাও অপেক্ষায় থাকলাম..
মন্তব্য করতে লগইন করুন