ছাত্রজীবনের টুকিটাকি- ১৩
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ লোকমান ২০ জুন, ২০১৫, ০৪:৩০:৪৫ বিকাল
এইট পাশ করার পর সাব্জেক্ট নির্বাচনের প্রশ্ন আসলো। শুরু থেকেই আমি ছিলাম একটু টেকনিক্যাল-মাইন্ডেড। তার উপর আমার বন্ধু এনামের বড় ভাই ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যের ওমানে গিয়ে বেশ সাফল্য অর্জন করেছিলেন। এসব কারণে নবম শ্রেণীতে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হওয়ার প্রবল আগ্রহ জাগ্রত হলো। কিন্তু বাঁধ সাধলো আমার স্কুল, বন্ধু এবং সম্মানীত শিক্ষক মন্ডলী। না, তাদের পক্ষ থেকে কোন বাঁধা নয়,বাঁধা আমার মনেরে পক্ষ থেকে। যেহেতু আমার বর্তমান স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগ নেই সেহেতু আমাকে অন্য স্কুলে চলে যেতে হবে, যদি বিজ্ঞান পড়তে চাই।
বন্ধুদের ছেড়ে আন্য স্কুলে যাওয়ার কল্পনা করলেই বুকের বেতর কেমন জানি একধরণের ব্যথা অনুভব করতাম। স্কুল, বন্ধু আর সম্মানীত শিক্ষকগণের ভালবাসা জলাঞ্জলি দিয়ে আমি অন্য স্কুলে যাবো, ভাবতেই পারছিলাম না। ভালবাসা আমাকে এতটাই মোহাচ্ছন্ন করে ফেলেছিল যে, ‘ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায়, দু’বছর পর বাধ্য হয়ে স্কুল ছাড়তেই হবে’ এ বোধ টুকুও যেন লোপ পেয়েছিল।
শুধু বন্ধুদের সাথে নয়, বেশ কয়েকজন সম্মানীত শিক্ষকের সাথেও গভীর আন্তরিক সম্পর্ক তৈরী হয়েছিল। বিভিন্ন সময় আত্মীয়ের মতো স্যারদের বাড়ীতেও বেড়াতে গিয়েছি। এ নিয়ে বন্ধুরা বেশ মজাও করতো। তারা আমার সাথে কোন কোন স্যারের মেয়ের ভবিষ্যৎ কাল্পনিক সম্পর্ক তৈরী করে টিপ্ননী কাটতো, অমুক স্যার তোমাকে মেয়ের জামাই বানানোর টার্গেট নিয়েছেন- ইত্যাদি বলে ক্ষেপাতো।
শেষপর্যন্ত বানিজ্য বিভাগ নিয়ে স্কুলে থেকে গেলাম। ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার বাসনা ত্যাগ করে এখন ব্যাংকার হওয়ার স্বপ্ন দেখতে লাগলাম। তখনকার দিনে ব্যাংকার মানেই হাতের আঙ্গুল দিয়ে দ্রুত টাকা গুনার অভ্যাস থাকতে হতো, মানে ব্যংকারের ইহাও একটি গুন। সেই গুনটি আগ্রীম অর্জন করার জন্য সবগুলো বই আর খাতার দুই কোণ প্রায় নষ্ট করে ফেলতাম গুনে গুনে! কাজ যে একেবারে হয়নি তা নয়, এখনো মাঝে মধ্যে ব্যংক বা কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা গুনে নেয়ার সময় আশ পাশের লোকেরা বেশ আগ্র নিয়ে দেখে- এ কেমন পাব্লিক! কারণ আজকাল টাকা গণনার মেশিন বের হওয়ার ফলে হাতে দ্রুত টাকা গণনা করা অনেকটা লোপ পেয়েছে, তাই হঠাৎ এমন দৃশ্য চোখে পড়া একটু দেখার বিষয় বৈকি।
চলবে.....
বিষয়: বিবিধ
১১৯৪ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
খুচরা ব্যবসা এবং আড়তদারিতেও কাজে আসত মনে হয়।
--ওরা তো এমনি এমনি বলতো না? পিলাচ পিলাচ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন