দেখুন তো, কেমন ধনী হওয়া যায়!
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ লোকমান ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০১:৪২:৫৩ দুপুর
মানুষের ধনী হওয়ার বিষয়টি আমার নিকট কেমন যেন মনে হয়। অর্থাৎ পরিকল্পনা এবং হিসেব নিকেস করে ধনী হওয়ার কোন সুযোগ আছে বলে আমার মনে হয় না।
একেবারে লেটেষ্ট মডেলের মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়িটি পার্কিংয়ে রেখে এক ভদ্রলোক আমার দোকানের দিকে এগুচ্ছেন। দূর থেকে দেখে পরিচিত মনে হচ্ছে, তবে তার গাড়ী, পোষাক আর হাবভাবের সাথে আমার পরিচিত ব্যক্তির সাথে মিলছে না। ভাবলাম মানুষের সাথে মানু্ষের মিল থাকতেই পারে। ও-মা, কাছে আসার পর নিশ্চিত হলাম সে-ই আমার পরিচিত সেই মিশরিয় নাগরিক সাফোয়াত, আমাদের বিল্ডিংয়ের নাতুর ছিল যে লোকটি।
তার এই রাজকীয় পরিবর্তনের কেমনে কি জিজ্ঞেস করাতে নিজের ডান হাতের তালু আর পিষ্ট দেশে কয়েকবার চুমু খেয়ে বার কয়েক আলহামদু লিল্লাহ বলে আল্লাহর শোকর আদায় করলো।
তারপর বললো, আমার শোকরিয়া আদায় করতে এসেছে। আমার দোকান চেনা ছিল না, তাই এতদিন আসতে পারেনি। কার নিকট থেকে যেন ঠিকানা পেয়ে আর দেরী করেনি, সে বলল। আমার শোকরিয়া কেন? জানতে চাইলাম। সে জানালো আমার ছেড়ে আসা ফ্ল্যাটটি যা ওকে হস্তান্তর করে এসেছিলাম, এটার মাধ্যমে সে এভাবে ধনী হতে পেরেছে, তাই আমার শোকরিয়া!
আমার বাসা ছিলা আবুধাবীর মোসাফ্ফাহ ‘সাবিয়া খলিফা’য়, বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল থেকে বেশ খানিকটা দূরে। মেয়ের ইন্টার পরীক্ষার আগে ফ্ল্যাটটি ছেড়ে স্কুলের কাছাকাছি চলে যাওয়ার সময় তার অনুরোধে ফ্ল্যটটি ফেরৎ না দিয়ে তার নামে হস্তান্তর করেছিলাম। সে ওটাতে ব্যাচেলর ভাড়া দিয়ে কিছু লাভ করতেছিল। সৌভাগ্য অথবা দুর্ভাগ্য বশঃত সে বছরই (২০০৬) আবুধাবীতে অবাসন সংকট দেখা দেয়। ভাড়া বেড়ে যায় কয়েক গুন। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছিল যে, কেউ একটা বাসা খুঁজে দিতে পারলে হাজার দেড় হাজার দেরহাম বকশীশ পেতো। বাসা নয়, একটি সীট জোগাড় করে দিতে পারলেও দুই থেকে পাঁচ শ দেরহাম পাওয়া যেতো। সাফোয়াত আমার ছেড়ে আসা ফ্ল্যটটি একলাখ দেরহাম কী-মানির বিনিময়ে একটি কোম্পানীকে হস্তান্তর করে। এখান থেকেই সে আরো ফ্ল্যট ব্যবসায় করে আজ কোটিপতি। যার কাজ ছিল বিল্ডিং পরিস্কার পরিচ্ছন্ন আর পাহাড়া দেয়া, সে এভাবে হঠাৎ কোটিপতি হয়ে ওঠা চাট্টিখানি কথা নয়। এজন্য বলছিলাম ধনি হওয়া কোন হিসেব নিকেশের ব্যপার নয়, আমরা শুধু চেষ্টা করতে পারি। রিজিক এর মালিক আল্লাহ্।
لَهُ مَقَالِيدُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَن يَشَاءُ وَيَقْدِرُ ۚ إِنَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
আসমান ও যমীনের ভান্ডারসমূহের চাবি তাঁরই হাতে, যাকে ইচ্ছা অঢেল রিযিক দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা মেপে দেন৷ তিনি সব কিছু জানেন৷ (আশ শুরা-১২)
বিষয়: বিবিধ
১৭১৩ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
প্রত্যেক মানুষের উচিত হালাল রিজক অন্বেষণ করা এবং আল্লাহর শোকরগুজার করা।
আমরা বুঝিনা বলেই যেন তেন ভাবে সম্পদ বৃদ্ধির চেষ্টা করি।
০ যাদের কাছে আছে বিশ্বের একমাত্র সেভেন স্টার হোটেল আর কৃত্রিম দ্বীপ - তাদের কি না আবাসন সঙ্কট ?
উদাহরণ স্বরূপ: আমার ৩০স্কয়ার মিটারের দু’টি দোকানের ফোরসিলিং ভাড়া দিয়েছিলাম আট হাজার দেরহাম প্রতিমাসে। এভাবে প্রতিটি দোকানের ফোরসিলিং হয়ে উঠেছিল বাসগৃহ!বর্তমানে অবশ্য বেশ ভালো ব্যবস্থা হয়েছে। ধন্যবাদ।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু শ্রদ্ধেয় সুহৃদ লোকমান ভাইয়া।
আসমান ও যমীনের ভান্ডারসমূহের চাবি তাঁরই হাতে, যাকে ইচ্ছা অঢেল রিযিক দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা মেপে দেন৷ তিনি সব কিছু জানেন৷ (আশ শুরা-১২)
অনেক ধন্যবাদ খুব ভালো লাগলো ।
হাহহা..দোয়া
হালাল রিযক এর অন্বেষন ই মানুষ কে সুখি করে। ধনি হওয়ার হিসাবের মধ্যে ধ্বংস হয়ে যায় হৃদয় এর শান্তি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন