ব্লগিং-এর পঞ্চম বর্ষ এবং ফেলে আসা দিনগুলি - ৭
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ লোকমান ২৪ এপ্রিল, ২০১৪, ০৬:১৮:১২ সন্ধ্যা
ওখানে ব্লগাররা সরাসরি দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। এক ভাগে ছিলেন সত্য ও সুন্দরের পক্ষের শান্তিপ্রিয়, পরিচ্ছন্ন ব্লগার আর অপর পক্ষে ছিলেন নাস্তিক, গালিবাজ আর দুষ্টু আওয়ামী ব্লগার। প্রথমোক্তরা ব্লগে সর্বদা পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় রাখার চেষ্টা করতেন আর শেষোক্তরা চেষ্টা করতেন গালাগালি আর অশ্লীলতার সয়লাবের মাধ্যমে নারকীয় পরিবেশ তৈরী করতে। অশ্লীলতা আর গালাগালিকে তারা শিল্পে (!) পরিণত করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন। এ কারণে তারা নিজেদের মধ্যেও অশ্লীল গালাগালির চর্চা করতেন, যেমনটি গ্রামের অশিক্ষিত লোকেরা কথায় কথায় একে অপরকে গালি দিয়ে কথা বলে। আগেই বলেছি, ওরা সৎ-ভদ্র এবং মার্জিত ব্লগারদেরকে চোখ বন্ধ করেই জামায়াত শিবির মনে করতেন। তাই অশ্লীলতা আর গালাগালিকে জায়েয করার জন্য তাদের গুরুরা বলতেন, “ছাগু/জাশি’র সাথে ফাইট করার সময় গালি বৈধ, তাদেরকে অবশ্যই গালি দিতে হবে, গালি না জানলে শিখে নিতে হবে এবং নিজেদের বাচ্চা-কাচ্চাদেরকেও গালি শিখাতে হবে, না হলে ওরা বড় হলে ফাইট করবে কি দিয়ে?” নির্লজ্জতা আর কারে কয়? আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করে থাকবেন গণজাগরণ মঞ্চের নারী পুরুষের অবৈধ ডলা-ডলির মধ্যে তাদের শিশুদেরকে কোলে কাঁধে করে নিয়ে গিয়েছিলেন আর মেয়ে-শিশুদেরকে দিয়েও অশ্লীল অঙ্গ-ভঙ্গীর মাধ্যমে ফাঁসি ফাঁসি করে লম্ফ-ঝম্প করিয়েছিলেন।
সামুতে বংশগত অতি উৎসাহী স্বপ্রনোদিত গালিবাজ ছাড়াও ছিলেন সার্বক্ষণিক নিয়োগ প্রাপ্ত নাস্তিক-গালিবাজ ব্লগার। ওনারা নানা কৌশলে শান্তিপ্রিয় ব্লগারদেরকে লাঞ্চিত আর অপমানিত করার চেষ্টা করতেন। গালিবাজদেরকে প্রতিহত করা এবং নাস্তিকদের অপপ্রচারের জবাব দানের নিমিত্তে শান্তিপ্রিয় অগ্রসর ব্লগাররা নিজেদের মধ্যে পরিচিতির সম্পর্ক গড়ে তোলেন। জোটবদ্ধ ব্লগাররা পারস্পরিক যোগাযোগের মাধ্যমে নিজ নিজ ব্লগ থেকে ইসলাম অবমাননাকারী এবং অশ্লীল গালিবাজ ব্লগারদের ব্যপারে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের ফলে আই ওয়াশের জন্য ব্লগে কিছু গালিবাজকে ব্যান করা হলেও পরে ব্লগ টীম তাদের কিছু নতুন নিককে নতুন করে ব্লগিং করার সুযোগ করে দিতেন। এতে করে সমস্যা থেকেই যায়।
অতপর শান্তিপ্রিয় ব্লগারগণ সামুর নারকীয় পরিবেশ থেকে মুক্ত হয়ে একটি পরিচ্ছন্ন ব্লগের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন গভীরভাবে। নিজেদের মধ্যে শুরু হলো নতুন একটি ব্লগবাড়ী তৈরীর তোড়জোড়। মেধা-শ্রম-সময় ও অর্থ দিতেও তৈরী হলেন অনেক অনেক বন্ধু। ব্লগবাড়ী তৈরির দৌঁড়-ঝাপের মধ্যে নিজেদের অজান্তেই পেয়ে গেলাম ‘আমার বর্ণমালা’ এবং ‘সোনার বাংলাদেশ’ ব্লগ নামে দু দু’টি পরিচ্ছন্ন ব্লগের সু-সংবাদ। আলহামদুলিল্লাহ্! আমাদের প্রত্যাশা ছিল মাত্র একটি পরিচ্ছন্ন ব্লগ, আর আল্লাহ আমাদের জন্য দান করলেন দু’দুটি ব্লগ, তাও আমাদের কোন অর্থ ও শ্রম ব্যয় ব্যতিরেখেই। (লোকমুখে শুনতে পেয়েছি, জাপান এবং জার্মানীতে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে নিয়োজিত দুই বাংলাদেশী মেধাবী যুবক ব্লগ দুটির জনক। এতদিনে এ দুজন ব্লগ স্রষ্টা উচ্চতর ডিগ্রী প্রাপ্ত হয়ে নিজ নিজ কর্ম ক্ষেত্রে সফলতার সাক্ষর রাখছেন নিশ্চয়ই। (আল্লাহ তাদের যোগ্যতা এবং জাতির খেদমতের আগ্রহ বৃদ্ধি করে দিন।) শান্তিপ্রিয় ব্লগারদের জোট এ ব্লগ দু’টিতে নিজেদের সরব উপস্থিতি এবং বহুল প্রচারের ফলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ব্লগ দু’টি ঈর্ষণীয় সফলতা লাভ করলো। আরো বছর খানেক পরে আসলো আজকের এই ‘বিডিটুডে’ ব্লগ।
‘এবি’ এবং ‘এসবি’ যখন এক ঝাঁক পরিচ্ছন্ন ব্লগ সৈনিক আর সত্য ও সুন্দরের পতাকাবাহী এক দল কলম শিল্পী তৈরিতে ব্যস্ত, তখনই শকুনের কু-নজরে পড়ে গেলো ব্লগ দুটির উপর। অপরাধ একটাই ‘সত্য ও সুন্দর’। তাঁরা সত্য ও সুন্দরকে জমের মতো ভয় করে। মিথ্যা, প্রতারণা, শঠতা আর ধোকাবাজী যাদের পুঁজি, তারাতো সত্য ও সুন্দরকে ভয় পাবেই। বিডিটুডে! এই ব্লগটিও কত রকমের কৌশল আর সংগ্রামের মাধ্যমে এখনো টিকে আছে তাতো নগদেই দেখতে পাচ্ছি। টিকে থাকার নব নব কৌশল প্রয়োগের জন্য সম্পাদক সাহেবের প্রতি স্যালুট।
চলবে...
বিষয়: বিবিধ
১৩৮৮ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার সাথে কন্ঠ মিলিয়ে দোয়া করি আল্লাহ টুড়ে সম্পাদক সহ তাদের যোগ্যতা এবং জাতির খেদমতের আগ্রহ বৃদ্ধি করে দিন।
জাযাকাল্লাহ খায়ের
প্রচারের দিক দিয়ে এসবি থেকে এবি একটু পিছিয়ে ছিল।
সত্য বলেছেন।
“তারা ধরে নিয়েছিলেন ইন্ডিয়ার প্ররোচনায় বিভক্ত হওয়ার চেয়ে এক সাথে থেকে ন্যায্য অধিকার আদায় করে নেয়া শ্রেয়।” এমন ধারণা পোষণ করতেন মুসলিম লীগ,কাওমী এবং আলীয় মাদ্রাসার সাথে সংশ্লষ্টরা, পূর্ব বাংলা কমিউনিষ্ট পার্টি, তৎকালীন চাকমা রাজা,বৌদ্ধ সম্প্রদায় সহ আরো অসংখ্য সংগঠন ও সম্প্রদায়। এখন জামায়াতে ইসলামী ছাড়া বাকীরা মুক্তিযোদ্ধা(!)।্ এর মানে কি? সম্প্রতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর উক্তি- ‘জামায়াতে ইসলামী ৪৩ বছর আগে যা বুঝোছল তা আমরা বুঝতেছি ৪৩ বছর পর’। অতি সম্প্রতি তাজুদ্দীন কন্যার লেখা থেকে পরিস্কার বুঝা যাচ্ছে শেখ মুজিবুর রহমানও তখন সাধীনতা চাননি। তাহলে সব দোষ জামায়াতের উপর কেন? একজন চিন্তশীল ব্যক্তি হিসেবে বিষয়টি বিবেচনা করার অনুরোধ রইলো। ধন্যবাদ।
সত্য বলেছেন। ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ অনেক ধন্যবা।
মন্তব্য করতে লগইন করুন