বিবর্তনবাদের আরেক শত্রু; কাংখিত ফসিলের ঘাটতি
লিখেছেন লিখেছেন বিন রফিক ১৪ জুলাই, ২০১৪, ১১:৩৬:৩০ রাত
ডারউইন নিজেই জানতেন তার প্রস্তাবনাটি সঠিক হতে হলে প্রচুর পরিমাণ অন্তর্বর্তীকালীন আকৃতির ফসিল খুঁজে পেতে হবে। তার Origin of Species বইয়ের থিওরির সমস্যাসমূহ (Difficulties on Theory) অংশে তিনি নিজেই বলেন-
"প্রথমত, যদি প্রজাতিরা অন্য প্রজাতি থেকে উদ্ভূত হয়ে থাকে তাহলে কেন সর্বত্র আমরা প্রচুর সংখ্যক ট্রাঞ্জিশনাল বা মাঝামাঝি সময়ের আকৃতি (transitional forms) দেখি না? কেন প্রকৃতির সর্বত্র বিশৃঙ্খার পরিবর্তে প্রজাতিসমূহ সুগঠিত আকারে আছে? "
বিবর্তনবাদের মতানুসারে প্রত্যেকটি প্রাণীই কোন একটি পূর্বসূরী থেকে এসেছে। সময়ের সাথে অপেক্ষাকৃত আগের প্রজাতি রূপান্তরিত হয়ে গেছে এবং এভাবেই সব প্রাণী এভাবেই অস্তিত্ত্বে এসেছে। এ রূপান্তর লাখো বছর ধরে চলেছে।
ঘটনা যদি এই হত তাহলে এই রূপান্তরকালীন সময়ে অসংখ্য মধ্যবর্তী প্রজাতির (intermediary species) উপস্থিতি থাকত। যেমন বলা যায় অতীতে কোন অর্ধ-মাছ/অর্ধ সরিসৃপ এর অস্তিত্ব থাকত যা তার মেছো বৈশিষ্ট্যের সাথে সাথে কিছু সরিসৃপীয় বৈশিষ্টও লাভ করত, কিছু সরিসৃপ পাখি থাকত যারা সরিসৃপীয় বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি কিছু খেচর বৈশিষ্ট্যও অর্জন করত। এরকম প্রাণীর অস্তিত্ব থাকলে তাদের বিভিন্ন প্রকারে সংখ্যা হওয়া উচিত কোটি কোটি। আর এ অদ্ভূত প্রাণীদের ফসিল তো অবশ্যই দেখা যাবার কথা।
এই ট্রাঞ্জিশনাল প্রজাতির প্রাণিদের সংখ্যা পৃথিবীর বর্তমানে বিদ্যমান প্রজাতির চেয়ে বেশি হওয়া উচিত। তাদের ফসিল বা মৃতদেহ সব জায়গায় পাওয়া যাওয়ার কথা।
ডারুইন বলেন-
"আমার থিওরি প্রমাণিত হতে হলে অগণিত মাধ্যমিক (Intermediate) প্রকরণ উপস্থিত থাকতে হবে যেগুলো একই জাতীয় সকল প্রজাতির মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করবে। ফলে, তাদের পূর্ববর্তী অস্তিত্বের প্রমাণ শুধু ফসিলের মধ্যেই পাওয়া যেতে পারে।"
তাঁর থিওরির এই এই অসুবিধা মেনে নিয়ে তিনে বলেন, " এই সমস্যাটি অনেক দিন যাবত আমাকে বিমূঢ় করে রেখেছে।"
এই অসুবিধা দূর করতে তিনি যে ব্যাখ্যা নিয়ে আসলেন তা হলো ততদিন পর্যন্ত আবিষ্কৃত ফসিলের সংখ্যা ছিল অপ্রতুল। তাঁর মত ছিলো 'পাওয়া যাবে'।
এই আশ্বাসকে ভিত্তি করে বিবর্তনপন্থীরা উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে পুরো দুনিয়া চষে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু বিধি বাম! ফসিল বরং বলে বিপরীত কথা, জীবনের উদ্ভব ঘটেছে হঠাৎ এবং সম্পূর্ণ সুগঠিত (Well-formed) অবস্থায়।
Derek V. Ager নামক বিখ্যাত ব্রিটিশ জীবাশ্মবিদ বলেন-
" বর্গ (Order) বা প্রজাতি যে কোন ক্ষেত্রেই ফসিল রেকর্ডের বিস্তারিত বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখি জীবেদের উদ্ভব ক্রমে ক্রমে নয় হঠাৎ ঘটেছে"
এর প্রত্যক্ষ উদাহরণ হল ক্যাম্ব্রিয়ান পিরিয়ড (দেখুন বিস্তারিত)
ডারউইন আরো বলেন-
যদি দেখানো যায় যে কোন জটিল প্রাণী অসংখ্য ধারাবাহিক স্বল্প পরিবর্তন ছাড়াই অস্তিত্বমান ছিল তবে আমার থিওরি ধসে পড়বে। (Darwin, 1859, p. 219)
হারভার্ড ইউনিভারসিটির ভূতত্ত্ব ও জীবাশ্মবিদ্যার অধ্যাপক Stephen Jay Gould বলেন-
" ফসিল প্রজাতির সাথে ডারউইনের ক্রমানুবাদের দুটি অমিল রয়েছে-
১.Stasis বা স্থিতাবস্থাঃ বেশিরভাগ প্রজাতিতেই পৃথিবীতে তাদের অস্তিত্বকালে কোন নির্দিষ্ট পরিবর্তন দেখা যায় না। ফসিল রেকর্ড থেকে দেখা যায় তারা যেভাবে অস্তিত্বে এসেছিল অনেকটা ঠিক সেভাবেই (একই আকৃতিতে) অস্তিত্ব হারিয়েছিল। গাঠনিক পরিবর্তন সীমিত ও এলোমেলো।"
২. আকস্মিক আবির্ভাবঃ যে কোন স্থানীয় এলাকায় প্রজাতি তার পূর্ব-পুরুষ থেকে ট্রান্সফরমেশনের দ্বারা আসেনি, এসেছে একবারে পূর্ণ আকারে।
ডারউইনের তত্ত্ব সব প্রজাতিকে একই পূর্ব-পুরুষ থেকে উৎপন্ন দেখাতে চায়। ক্যামব্রিয়ান যুগের শুরুতেই ৫০ থেকে ১০০ প্রজাতির আকস্মিক আবির্ভাব ঘটে। ফসিল রেকর্ড ক্যমব্রিয়ান-পূর্ব যুগে তাদের সাধারণ (Common) আদি পুরুষের অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে পারেনি।
at alomoy.com: http://www.alomoy.com/2014/07/fossil-against-evolution.html
তথ্যসূত্রঃ
http://www.evolutiondeceit.com/
http://www.veritas-ucsb.org/library/battson/stasis/2.html
http://harunyahya.com/en/Articles/2013/The-fossil-record-refutes-evolution
বিষয়: বিবিধ
১৪৪২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ডারউইন ভিত্তিক ইভায়লুয়েশন তত্ব এর মিসিং লিংক শত বর্ষ পরেও প্রমানিত হয়নি। বাংলাভাষায় লিখা কিছু বইতে কেনিয়াতে ডঃ লিকির আবিস্কারকে মিসিং লিংক দাবি করা হয়েছে। কিন্তু ইন্টারনেট সেগুলি কে পুর্ন মানুষ বলেই তথ্য পাওয়া যায়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন