আজকের বাংলাদেশ প্রতিদিনে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দীকির কিছু সুন্দর কথা

লিখেছেন লিখেছেন বিন রফিক ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১০:৫৫:১৭ রাত

**যতকাল ইসলাম থাকবে ততকাল ইসলামী দল থাকবে

**যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে মাত্র ৬-৭ জনের বিচার করলেই হবে? সবাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়। তাহলে যুদ্ধাপরাধী তো নিরূপণ করতে হবে। এই ৬-৭ জন নিয়েই তো আর যুদ্ধাপরাধ হয়নি। অন্তত ৬ হাজার অথবা ৬ লাখ তো হবেই। ৬০ লাখ লোকও যদি পাকিস্তানের পক্ষে না থেকে থাকে, তাহলে পাকিস্তান থাকল কী করে

**মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাজীবের বাড়ি গিয়ে বলেছেন, 'এ দেশে জামায়াতের রাজনীতি করার অধিকার নেই।' বিশ্বজিতের বাড়িতে গিয়ে বলতে পারতেন, 'ছাত্রলীগের রাজনীতি করার অধিকার নেই।' আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে কথাটি মানালেও, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মানায় না।

**আওয়াজ উঠেছে, ইসলামী দল বাতিল করতে হবে। কিন্তু হিন্দুর দল থাকবে, খ্রিস্টানদের দল থাকবে, শুধু শতকরা ৯০ জন মুসলমানের দেশে মুসলমানের দল থাকবে না_ কেমন সব আজব কথা!

**মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের পক্ষ থেকে উকিল নোটিস পেয়েছি। যুদ্ধাপরাধী বলায় তিনি আমার নামে মামলা করবেন। তিনি সিএসপি পরীক্ষা দিয়ে পাকিস্তান সুপিরিয়র সার্ভিসে যোগ দিয়েছিলেন। সুনামের সঙ্গে পাকিস্তানে চাকরি করেছেন। অনেক তকমা বা প্রশংসা পেয়েছেন। ২৬ মার্চ আমরা যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু করি তখনো তিনি পাকিস্তানি কর্মচারী ছিলেন। স্বাভাবিক কারণেই বাংলাদেশের শত্রু। তার সিনিয়র বা জুনিয়র অনেক সিএসপি জীবন বাজি রেখে মুজিবনগর সরকারের নির্দেশে রণাঙ্গনে ছিলেন। আর মহীউদ্দীন খান আলমগীরসহ যারা পাকিস্তানকে টিকিয়ে রাখতে হানাদার বাহিনী বা পাকিস্তানের আজ্ঞাবহ হিসেবে প্রশাসন চালিয়েছে, যেহেতু পাকিস্তান হেরেছে, সেহেতু পাকিস্তানি অনুগত অফিসারদের দশবার ফাঁসি হওয়া উচিত। সেদিন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক প্রশ্ন করেছিলেন, আমরা তো জানতাম না মহীউদ্দীন খান আলমগীর পাকিস্তানে চাকরি করেছেন। শুধু চাকরি করেনি, মাস্টারি, ডাক্তারি নয় ডিসিগিরি করেছেন। এখনো যেমন ডিসি-ওসিরা লাঠিয়াল হয়ে সরকার টিকিয়ে রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করে, ভদ্রলোক তেমন করেছেন। তাই উকিল নোটিস পেয়ে জানিয়ে দিয়েছি। তিনি যে নিরন্তর পাকিস্তানের হয়ে চাকরি করেছেন, পাকিস্তানের প্রতি অনুগত ছিলেন তার গেজেট-ফেজেট আছে দেখে নিতে পারেন। বাংলাদেশ সরকারের গেজেটেও তার নাম আছে, পূর্ব পাকিস্তান গেজেটেও আছে। কুকর্ম করলে নাম থাকবেই। হানাদারদের পক্ষে রাজাকার হলে যদি ফাঁসি হয়, ডিসি হলে দশবার ফাঁসি হলেও শাস্তি কম হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার, আলবদর, আলশামস ছিল সব থেকে ছোট দরের খুনি। ওসি, ডিসি, এসপিরা তো অনেক বড় দরের ঘাতক বা খুনি। আগে মনে হতো আমি যেভাবে যুদ্ধ দেখেছি, অন্যায়-অত্যাচার, খুন-খারাবি সবাই বোধহয় সেভাবেই দেখেছে, এটাই আমার ভুল। মাস্টার, ডাক্তার, কেরানি, ইঞ্জিনিয়ার তারা প্রশাসন চালায় না, তারা চলে। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেটরা প্রশাসন চালান। ছোট ম্যাজিস্ট্রেটের ছোট কাজ, বড় ম্যাজিস্ট্রেটের বড় কাজ। এডিসি, ডিসি র্যাঙ্কের অফিসাররা জেলার পুরো প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করে। কাউকে গ্রেফতার করা, কাউকে মুক্তি দেওয়া তাদের কাজ। চার পয়সার দাম নেই, জেলা সদরে রাজসিংহাসনে বসে মানুষের নিবর্তনমূলক আটকাদেশে সই করে, 'আমি সন্তুষ্ট হইয়া আপনাকে এত দিনের আটক আদেশ দিলাম।' সেই ডিসি পদে মহীউদ্দীন খান আলমগীর ছিলেন। পাকিস্তান হানাদারদের হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত নন, তো কে সম্পৃক্ত? টাঙ্গাইলে যেমন আশিকুর রহমান ডিসি ছিলেন, তাকে সে সময় গ্রেফতার করা হয়েছিল। পাকিস্তান প্রশাসনের ডিসি যুদ্ধাপরাধীদের ওই সময়ই ফাঁসিতে ঝুলানো উচিত ছিল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর দয়ায় ওরা বেঁচে গেছে কিন্তু বেশি বাড়লে আল্লাহই তাকে শায়েস্তা করেন। তা না হলে শাহবাগ জাগবে কেন? আমরা পাকিস্তানের দোসর সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার চাই। আইনে ফাঁসি হলে হবে আর কোনো খায়খাতির নেই। যারা রাজাকারকে রক্ষা করতে চাইবে তাদেরও বিচার চাই।

**গত ১৪ তারিখ বৃহস্পতিবার ভালোবাসা দিবসে বঙ্গবন্ধুর কবর জিয়ারতে গিয়েছিলাম। ফেরি থেকে নামতেই কয়েকজন বৃদ্ধ হাত চেপে ধরে বলেছিল, 'বাবা, ইসলামী দল নাকি সব বন্ধ হয়ে যাবে। মসজিদে গেলে নাকি বাধা দেবে।' তাজ্জব হয়ে গিয়েছিলাম। শতকরা ৯০ জন মুসলমানের দেশ। আল্লাহর নাম নিতে, মসজিদে যেতেও বাধা হবে, এমন শঙ্কা মানুষের মনে, তাহলে আমরা আছি কোথায়?

**যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের আসামি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী যে বয়সের, বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্য প্রধানমন্ত্রীর বিয়াই মোশারফ হোসেনও সেই বয়সের। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরী চিটাগাংয়ে শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। ঠিক তেমনি বৃহত্তর ফরিদপুরের সম্ভ্রান্ত জমিদার নুর মিয়া ফরিদপুর জেলা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। শান্তি কমিটির চেয়ারম্যানের ছেলে হিসেবে বাবার প্রতি অনুগত মোশারফ হোসেন যতটা সম্ভব বাবাকে সমর্থন করেছেন, সাহায্য করেছেন। সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীও তার বাবাকে সাহায্য করেছেন। তাহলে শুধু একজনের বিরুদ্ধে মামলা হবে কেন? সবকিছু কেমন যেন সাজানো নাটকের মতো মনে হচ্ছে।

কলাম পড়তে ক্লিক করুন

বিষয়: বিবিধ

১৩৫৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File