নাস্তিকতা যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার-ধর্ম হবে রাষ্ট্রীয় কাজের ভিত্তি

লিখেছেন লিখেছেন বিন রফিক ১৩ জুলাই, ২০১৩, ১১:২৯:১৭ সকাল

নিবেদিত প্রাণ নাস্তিকরা ধর্মের প্রতি সহানুভূতি (!) দেখিয়ে বলেন যার ইচ্ছা ধর্ম পালন করবে। তবে তা সীমাবদ্ধ থাকবে শুধু তার ব্যক্তি জীবনে। রাষ্ট্রীয় তথা রাজনৈতিক জীবনে ধর্মের কোন প্রভাব থাকা উচিৎ নয়। তার মানে রাষ্ট্র চলবে নাস্তিকতার ভিত্তিতে। ধর্মের প্রধান শর্ত হচ্ছে আল্লাহর উপর বিশ্বাস। আর নাস্তিকতা মানে আল্লাহ উপর অবিশ্বাস। এখন রাষ্ট্রীয় কাজে তথা সংবিধান প্রণয়ণে ও আইন রচনায় ধর্মের অংশগ্রহণ না থাকা মানে আল্লাহকে এক্ষেত্রে অনুপস্হিত ও অযোগ্য (নাউজুবিল্লাহ) মনে করে নিজেরাই একটি মানব রচিত সংবিধান তৈরি করে নেওয়া।

কিন্তু নাস্তিকতা এমন কোন আদর্শ হতে পারে না যাকে রাষ্ট্র পরিচালনার ভিত্তি হিসেবে মেনে নিয়ে ভরসা করা যায়। বৈচিত্র্যময় চরিত্রের অসংখ্য মানুষ নিয়ে গঠিত জটিল এই মানব জীবনকে পরিচালনার জন্যে প্রয়োজন একটি সুন্দর জীবনব্যাবস্হা বা সংবিধান। গ্রহ, নক্ষত্র ও তাদের নিয়ে গঠিত বিলিয়ন বিলিয়ন গ্যালাক্সির এই মহাবিশ্বে ভারসাম্য বজায় রয়েছে কারণ তারা মেনে চলে তাদের স্রষ্টার বেঁধে দেওয়া নিয়ম। এই নিয়ম তারা নিজেরা বানিয়ে নেয়নি।

একইভাবে মানব সমাজে ভারসাম্য, শান্তি ও স্হিতি প্রতিষ্ঠা করতে চাই মানবের স্রষ্টার দেওয়া নিয়ম মোতাবেক জীবন পরিচালনা। শুধু স্রষ্টাই জানেন কীভাবে পরিচালিত হলে তাঁর সৃষ্টি সুন্দরভাবে চলবে। যেমন একটি নির্দিষ্ট যন্ত্র কীভাবে চলবে তিা ঠিকভাবে বলতে পারে শুধু তার নির্মাতাই। তাই যুক্তির দাবী হচ্ছে যিনি হবেন স্রষ্টা তিনিই হবেন আইনদাতা।

নাস্তিকতা মানে আদর্শহীনতা। আদর্শের ভিত্তি হচ্ছে জবাবদিহীতা। চিরন্তন ধর্ম ইসলামেই রয়েছে জবাবদিহীতার অনুভূতি সৃষ্টিকারী উপকরণ আল্লাহর উপর বিশ্বাস, পরকালের উপর বিশ্বাস, নিজেদের সব কর্মকান্ড রেকর্ড হয়ে যাচ্ছে এই বিশ্বাস। যতক্ষণ না কারো মনে উল্লিখিত চেতনাগুলো তৈরি না হবে ততক্ষণ সে কোন সুবিচারপূর্ণ সংবিধানও রচনা করতে পারবে না এবং সেই সংবিধানকে সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নও করতে পারবে না। কারণ আল্লাহর কাছে এবং পরকালে জবাবদিহীতার ভয় না থাকায় আইন রচয়িতারা আইনের মাধ্যমে নিজেদেরই কল্যাণ সাধন করবে এবং প্রতিদ্বন্দীকে ঘায়েল করবে।

কিন্তু অনেক নাস্তিককেও দেখা যায় তারা স্বীকার করেন আল্লাহই তাদের স্রষ্টা। কিন্তু তারা আল্লাহকে মানেন না আইন রচয়িতা হিসেবে, আল্লাহর বাণীকে মানেন না সংবিধানের উৎস হিসেবে। এটা ঠিক তেমনই যেমন এক গোলাম তার মুনিবের প্রশংসায় মুখের লালা ঝরায় কিন্তু মুনিবের হুকুমের প্রতি কর্ণপাত করে না।

রাজনীতি হচ্ছে এমন একটি বিষয় যা স্হিতিশীল হলে দেশের পুরো কাঠামো স্হিতিশীল থাকবে। তাই এটা পরিচালনার ভার আদর্শহীনতার উপর অর্পণ করা যায় না। বরং যুগ ‍যুগ ধরে ইসলাম ধর্ম এসেছে মানুষকে জীবন পরিচালনায় একটি সুন্দর দিকনির্দেশনা দিতে। মানুষকে আতর দেওয়া, নির্দিষ্ট পোষাক পরানো বা যেসব কাজকে ধর্মীয় কাজ বলে সমাজে গণ্য করা হয় পৃথিবীতে নবীদের আসার উদ্দেশ্য এটা ছিল না। নবীরা এসেছেন আল্লাহর জমীনে আল্লাহরই বিধান স্হাপন করতে। আর এটা হয়ে গেলে তথাকথিত ধর্মীয় কাজগুলোর প্রচলন এমনিতেই হয়ে যাবে।

তাই যারা বলেন ’আমিও তো নামাজ-রোজা করি’ -কিন্তু আল্লাহর আইনকে স্বীকার করেন না তিনি মূলত ধর্মকে ‘গরু মেরে জুতো দান’ করেন।

তাই বলতে হয় কেউ যদি নাস্তিক হতে চায় সেটি তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। ইসলাম তার এই কাজে হস্তক্ষেপ করবে না। কিন্তু এই নাস্কিক্য মতবদাকে রাষ্ট্রীয় আইন প্রণয়ণের কাজে হাত দিতে দেওয়া যাবে না। সেটি হবে ইসলামের মতো মহান জীবনাদর্শের কাজ।

(চলবে)

Click this link

বিষয়: বিবিধ

১২৩৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File