কণ্ঠ নকলে অবিশ্বাস্য ভয়েজ চেঞ্জার সফটওয়্যার!
লিখেছেন লিখেছেন নতুন সময় ০১ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৬:০০:২৯ সন্ধ্যা
মানুষের কণ্ঠ যে পুরুষ থেকে মেয়ে বা উল্টোভাবে মেয়ে থেকে পুরুষ কিংবা নিজের কণ্ঠটি জনপ্রিয় কারো মতো হুবহু নকল করা যে সম্ভব তারই অত্যাধুনিক প্রমাণ হচ্ছে কম্পিউটার টেকনোলজিতে ব্যবহৃত ভয়েজ চেঞ্জার সফটওয়্যার। এতে ডিজিটাল বিশ্বে নিজের কণ্ঠটিও যদি কোথাও অবিশ্বাস্যভাবে শোনা যায়, তাতেও বিস্ময়ের কিছু নেই। এটিকে ভয়েজ এনহেন্সারও বলে। শুধু কণ্ঠ নকল করাই নয়, বরং কণ্ঠকে পুরোপুরি ভিন্নতাও এনে দিতে সক্ষম এই সফটওয়্যার। কণ্ঠের টোন বা পিচ অথবা ব্যবহারকারীর কণ্ঠ পাল্টাতে অথবা এগুলোকে একীভূত করতে সক্ষম কম্পিউটার প্রযুক্তির এই সফটওয়্যার। সঙ্গীত জগতে ব্যবহৃত ‘কাজু’ বা ‘ডিডজেরিডু’ যন্ত্রের ব্যবহার যেমনটা সঙ্গীতে অভাবনীয় পরিবর্তন এনে দেয়, তেমনটাই হচ্ছে এর কাজ।
সাধারণত আগে এই ভয়েজ চেঞ্জার ব্যবহৃত হতো টেলিফোনে কণ্ঠের অবগুণ্ঠনে অর্থাৎ ছদ্মাবরণে। স্বল্প মূল্যের ও ক্ষুদ্র লিথিয়াম ব্যাটারিচালিত ভয়েজ চেঞ্জার ফোনের মাউথপিস ও ব্যবহারকারীর মাউথপিসের মধ্যবর্তী স্থানে যুক্ত করা হতো। অডিও ইঞ্জিনিয়ারিংসহ ফিল্ম মেকিং বা লাইটিংয়ে বহুল পরিচিত শব্দ ‘ফেডার’ যেমন পরিবর্তনকে বোঝায়, তেমনি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ভয়েজ চেঞ্জারও তাই-ই করে থাকে।
অধুনা সেই ভয়েজ চেঞ্জার হাতের নাগালে চলে এসেছে। ইচ্ছে করলে যে কেউ ইন্টারনেটে বা অনলাইনে কিনতে পারেন, এমনকি বিনামূল্যেও পেতে পারেন। অনলাইনে প্রাপ্ত এই সফটওয়্যার যেকোনো কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম উপযোগী; তাতে কোনো সমস্যা নেই। সেগুলো আবার ‘অডাসিটি’ বা উইন্ডোজ, ম্যাক, লিনাক্স রেকর্ডিং এপ্লিকেশনে ব্যবহৃত অডিও এডিটর হিসেবে পাওয়া যায়। পরিবর্তনশীল পিচ বা স্বরগ্রামে সুর বাঁধা কণ্ঠকে বিশেষ প্রভাবে গ্রাফিক ইকোলাইজারের মাধ্যমে ‘রিয়েল টাইমে’ অথবা তাৎক্ষণিকভাবে পরিবর্তন করা সম্ভব। সেজন্য বহুল ব্যবহৃত এই ভয়েজ চেঞ্জার সফটওয়্যারগুলো হচ্ছে এভি ভয়েজ চেঞ্জার, মোর্ভভক্স, অডিও ফর ফান এবং ফেইক ভয়েজ। এগুলো সাধারণত ওয়াইআইএম, এমএসএন, এওএল মেসেঞ্জার এআইএম, আইসিকিউ, কাজাঁ, ট্রিলিয়ান, আইটিউনস, কুইকটাইম, জেট অডিও, মোরফিয়াস, রিয়েল প্লেয়ার, সিডি এবং ক্যারিওকি প্লেয়ারে ব্যবহার উপযোগী। ইতিমধ্যে সাফল্যজনকভাবে এই ভয়েজ চেঞ্জার সফটওয়্যারের ব্যবহার ঘটেছে বেশ কিছু বিশ্বখ্যাত ছায়াছবিতে। এর মাঝে রয়েছে- ১৯৯৬ সালে কেভিন উইলিয়ামসন রচিত ও ওয়েস ক্রাভেন পরিচালিত আমেরিকান ছবি ‘স্ক্রিম’, ২০০৪ সালে লিয়ে ওয়ানেল রচিত ও জেমস ওয়ান পরিচালিত আমেরিকান ছবি ‘সো’, ২০০১ সালে ‘ব্রোকেন লিজার্ড গ্রুপ’ রচিত ও জয় চন্দ্রশেখর পরিচালিত কমেডি ছবি ‘সুপার ট্রুপার্স’ এবং ১৯৯২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত জন হিউজেস রচিত ও ক্রিস কলম্বাস পরিচালিত ক্রিসমাস কমেডি ‘হোম এলোন - টু : লস্ট ইন নিউ ইয়র্ক’ ছায়াছবিতে ব্যবহৃত হয়েছে বহনযোগ্য কেসেটপ্লেয়ার ‘টকবয়’। এ ছাড়াও কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স জাতীয় পাশ্চাত্যের টেলিভিশন ডকুমেন্টারিতে সাক্ষাৎকার প্রদানকারীকে অবগুণ্ঠিত রাখতে এই সফটওয়্যারের ব্যবহার করা হয়। জাপানিজ ‘এনাইম’ বা ‘ম্যাঙ্গা’ জাতীয় ‘ডেথ নোট’ কমিকে বা হাস্যরসাত্মক নাটিকায় এর ব্যবহার রয়েছে। তেমনি পকোমান, টিম রকেট বস, জিওভান্নি ও কোনান এডোগাওয়ায় এই ভয়েজ চেঞ্জার সফটওয়্যারটি ব্যবহৃত হয়েছে।
সূত্র : আমাদের সময়.কম
মূল লেখা পাবেন এখানে। আমাদের সময়
বিষয়: বিবিধ
২৭৫৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন