সোনার ছেলে এবং টিভি ক্যামেরার সামনের সেই মেয়টি (কিঞ্চিত ১৮+, নো-বালেগ প্রবেশ নিষেধ)
লিখেছেন লিখেছেন আজব মানুষ ৩০ অক্টোবর, ২০১৪, ০৭:১০:১৩ সন্ধ্যা
সকাল থেকে রতন মিয়া বেশ উত্তেজিত। গত কয়েক ঘন্টায় সে একাধিকবার গোসল করেছে। কিন্তু তার উত্তেজনা কমার পরিবর্তে বরং যেন আরে বেড়েছে। রতন মিয়া রুম জুড়ে পায়চারি করছে, কখনো বা শুয়ে বসে ঠান্ডা হওয়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।
রতন মিয়ার এহেন করুনাবস্থা দেখে তার শিষ্যকুলের চিন্তার শেষ নেই। সমাধানের চেষ্টায় বসেছে তারা। অবশ্য গুরুকে ঠান্ডা করার উপায় তাদের জানা আছে। সমাধানের উপায় তাদের সামনে একটাই। হ্যাঁ, নারী লাগবে রতনের।
রতনের নাম রতন মিয়া হলেও জনগণ তাকে চিনে সোনার ছেলে হিসেবে। নেতাজির স্বপ্নের সমাজ গঠনে পেছনে তার সম্যক ভূমিকার কারনে দলের সবাই তাকে ‘সোনার ছেলে’ উপাধিতে ভূষিত করেছে।
অবশ্য নিন্দুকেরা বলে অন্য কথা। রাজনৈতিক সার্টিফিকেট নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া রতন নিজ দলের মেয়ে কর্মীদের কাছে হিরো হিসেবে জনপ্রিয় হলেও সাধারণ ছাত্রীদের নিকট রীতিমত সে মূর্তিমান আতঙ্ক। সুন্দরী বলুন আরুৎসিত বলুন সব মেয়েই রতন মিয়ারে দেখলে পালিয়ে বেড়ায়।
তারপরও যে, ছাত্রীরা নিরাপদ ছিল সেটা কোনভাবেই সত্য নয়। বরং যে বা যারা তাকে উইলিংলি রতনের কাছে নিজেকে বিকিয়েছে সে বা তারা পেয়েছে সীমাহীন আনন্দ আর তৃপ্তি। কিন্তু যার ওপর রতনের চোখ পড়েছে, কিন্তু স্বেচ্চায় আসেনি তার সে কিন্তু তার থেকে বাঁচতে পারেনি। তার নিদর্শন দেশের মানুষ জানে। জোর করে যাদের সে তার শয্যায় নিয়েছে সে সংখ্যা শতকের ঘর পার করায় রতন কেক কেটে চেঞ্চুরী উদ্যাপন করেছে। এই জন্য দেশের এই সম্পদকে জনগণ ‘সোনর ছেলে’ উপাধি দিয়েছে।
কালের আবর্তে, রতন এখন পোড়ামুখো। পার্টির যেসব নারী কর্মীদের সময় কাটত রতনের আশপাশে ঘুরঘুর করে, তারা এখন আর তার আশপাশে ঘেঁষে না। আসবাইবা কেন? রতনের আগের সেই এনার্জি আর নাই। এখন ওর কাছে আসা মানে সময় নষ্ট, আবর গরম হয়ে এর ওর কাছে ধর্ণা দেয়া। এত্তসব জক্কি ঝামেলায় কে পড়তে চায়?
তাইতো রতনের এখন অকাল। অবশ্য সে যখন উত্তেজিত হয়ে ওঠে, তখন তার শিষ্যরা তার ঠাণ্ডা হওয়ার জন্য সাথে সাথে যোগানে ব্যস্ত হয়ে যায়।
আজ রতন একটু বেশিই অস্থির। সন্ধ্যা বেলায় এখন জিনিষ পাওয়া দুষ্কর। তারপরও তার শিষ্যরা নেমে পরে।
তারা অনেক খোঁজা খুঁজি করে একটা জোগার করে রতনের লাল ঘরে নিয়ে এল। রতন মিয়াতো মহা খুশি। সারাদিন কত্ত কষ্ট পেতে হয়েছে তাকে!
কাল বিলম্ব না করে রতন মিয়া লাল পর্দা টানা সেই রুমে ঢুকল।
কিন্তু এ কি! রতন মিয়া দেখি সাথে সাথেই বের হয়ে এল।
বের হয়েই রতন তার শিষ্যদের গালে এলোমেলো থাপ্পড় চড় মারা শুরু করল। আর বলতে লাগল এই তোরা কাকে এনেচিস?
কেন ওস্তাদ, আপনার পছন্দ হয়নি?
চুপ! যা শালারা গিয়ে দেখ চিনস কিনা? অমনি এক শিষ্য ঘরে ঢুকে কতক্ষণ পর ফিরে এল।
এসেই সে বলতে লাগল, হ্যাঁ ওস্তাদ আমি মনে হয় চিনতে পেরেছি। এতো টিভি ক্যামেরার সামনের এ মেয়েটা। ভালেইতো...
চোপ শালা, তুই কি এত দিনে আমার রুচী সমর্কেেএই জেনেচিস? যা ফেলে দিয়ে আয় যেখান থেকে এনেসিস সেখানে।
কেন ওস্তাদ, ও তো......
আবার কথা! বল্লাম না, এইটার প্রতি আমার কোন রুচি নাই। ওটা সামন্য টিভি কেমেরার সামনে গিয়ে গলা পাঠানোর জন্য চাচা, ভাতিজা এভারেজে সাবার সাথে থেকেছে। আবার দিন রাত সব রাস্তার ওপর কাটিয়েছে। কি বিশ্বাস আছে যে, ও কোন রোগ বালাই শরীরে নিয়ে ঘুরছে না? এটার চাইতেও আমার কাছে বেশ্যা পাড়ারগুলারে পবিত্রই মনে হয়। দরকার হলে আজ রাত সেখানেই যামু। তারপরও ওটাতে আমার রুচী বসবে না।
কি আর করা! শিষ্যরা ঐ মেয়েটারে নিয়ে গেল যেখান থেকে তারে ধরে এনেছে সেখানে। কিন্তু ততক্ষণে সেখানে কয়েকটা মাতাল গোল মেরে বসে ছিল। সোনারছেলের নির্দেশ তাই শিষ্যরা ওকে সেখানেই ফেলে রওয়ানা দিল। যাওয়ার আগে মেয়েটির নাম জেনে নিল তার। নাম তার পিয়া।
এদিকে মাতালগুলো মেষ না চাইতেই বৃষ্টি পেয়ে গেল। মাতালারা চার পাশে গোল হয়ে একজন একজন করে পিয়ার কাছে আসবে ঠিক করল। যেন আসপাশের কেউ কিছু বুঝতে না পারে।
পরিকল্পনা মত প্রথম জন গেল আর পিয়ার পড়নের কাপড় চোপড় ছিড়তে লাগল। মাতালদের হাত থেকে বাঁচার জন্য পিয়া চিৎকার করতে লাগল। কিন্তু তার মুখ থেকে চিৎকারের পরিবর্তে ভেষে এল ফাঁসী ফাঁসী চাই, রতন মিয়ার ফাঁসী চাই.....
পাস দিয়ে যাচ্ছিল, লীগাত্তর টিভির ক্যামেরাম্যান ও রিপোর্টার। তারা সাথে সাথে অফিসে জানাল। চ্যানেল মালিম মুজা মিয়া সাথে সাথে তা লাইভ টেলিকাস্টের সুযোগ করে দিল। রিপোর্টার গোল হয়ে বসা লোকদের ক্লোস শর্ট দেখাচ্ছে আর বুমিং করছে, হ্যা মিথিলা আপনি দেখতে পাচ্ছে, গুবাগে হাজার হাজার জনতা রাজাকারদের ফাঁসীর দাবীতে সমাবেশ করছে। আর তাদের মাঝে ফাঁসী ফাঁসী চাই স্লোগান দিয়ে উত্তেজিত জনতাকে উজ্জিবিত করে রেখেছে টিভি ক্যামেরার সামনের সেই মেয়েটি যার নাম পিয়া............
বিষয়: বিবিধ
২০৩৫ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
রতন মিয়ার সাথে ছিলেন না টিভি চ্যানেল এর সাথে।
'সোনা'র ছেলেদের 'সোনা'(গ্রাম্য ভাষায় বিশেষ অংগ) নিয়ে কারবার তাতে আশ্চর্যের কী!
ওদের জন্মই তো এসব ঘিরে!
মন্তব্য করতে লগইন করুন