কমিউনিটি ব্লগার্স ফোরামঃ আশা ও আকাঙ্খা

লিখেছেন লিখেছেন আজব মানুষ ০২ জুলাই, ২০১৩, ০৪:৪৬:১২ বিকাল



বলোগারদের ফাঁসী চাই, ফাঁসী চাই। গত ২/তিন মাস এসব শুনতে শুনতে বোর হয়ে গেছিলাম। ফাঁসীর দাবীকারিদের চাওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে বিতর্কে যাওয়ারে ইচ্ছে না থাকলেও তাদের দাবীযে, আমাদের মত হতভাগা শ্রেণীর ব্যর্থতা; তা স্বীকার করতে রাগঢাকের প্রয়োজন নেই।

ব্লগার স্পেইলবাইন্ডারের কথাটি কোট করতে হচ্ছে “কাপুরুষের শেষ আশ্রয় স্থল দেশপ্রেম।” শাহবাগের তথাকথিত নাস্তিক নামধারী ইসলাম বিদ্ধেষীদের বেলাও ঘটেছে এটি। তারা জানতো তাদের চেতনার অসততা। তাইতো তারা দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ বলে আধপাগল আম জনতাকে ধোঁকা দিতে চেয়েছে। কিন্তু তারা বুঝতে পারেনি শত কোটি টাকা তাদের পেছনে ঢেলে “র” নামক গোয়েন্দা সংস্থাটি তাদের অশুভ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উন্মুখ ছিল। এরপরের ইতিহাসতো সবাই জানেন।

এত কিছুর পর বাস্তবিক অর্থে যেসব ব্লগার দেশ, জাতি আর ধর্মকে নিয়ে ভাবেন তাদের একটি প্লাটফরম তৈরী হয়েছে। তারা এটি বোধগম্য করতে সফল হয়েছে যে, ব্লগার মানেই নাস্তিক নয়। বরং এমন অনেক ব্লগার আছেন, যরা ঐসব বেজন্মা ধর্মবিদ্ধেষীদের (এদেরকে নাস্তিক বলতে নারাজ, বরং এরা ধর্মবিদ্ধেষি) সাথে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমানে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন।



অন্ধকে আলো দিতে আসছে সিবিএফ

হ্যাঁ, কমিউনিটি ব্লগার্স ফোরাম। শাহবাগীদের “দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ” বিভ্রান্তকর হাদীসের মাধ্যমে জনগনকে ধোঁকা না দিয়ে সত্যিকারের বাংলাদেশী জাতিয়তাবাদ ও ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে কতেক যুবকের অদম্য ইচ্ছে শক্তিতে আত্মপ্রকাশ এর।

স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসের মত বিশেষ বিশেষ দিনে মাথায় পতাকা আর গায়ে মানচিত্র আঁকা গেঞ্জি পরে একদিনের দেশপেমিক না হয়ে জন্ম থেকে আমৃত্যু পর্যন্ত দেশপ্রেমিক থাকার ধাবমান ঘোড়ার ন্যায় এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে জন্মেছে সিবিএফ তথা কমিউনিটি ব্লগার্স ফোরাম।

সিবিএফের স্বপ্নদ্রষ্টাদের ভালভাবেই জানা আছে, এ পথে নেই বিরিয়ানী, কাড়ি কাড়ি টাকা আর নাম, যশ, খ্যাতি। বরং এ পথ কন্টকময় আর বন্ধুর।

সীমাহীন সীমাবদ্ধতা আর প্রতিবন্ধকতার মাঝেও যে, কতিপয় যুবকের তারুণ্য সবার মাঝে আশা জাগিনায়া পাথেয় হতে সক্ষম হয়েছে। এটাওবা কম কিশের?

ঢাকার সংক্ষিপ্ত সভা শেষে বাংলাদেশের অনেক জায়গায় কার্যক্রম শুরু হয়েছে, এটা ভবিষ্যতে আমাদের পথচলাকে বিদ্যুৎ গতি দেবে এমন বিশ্বাস অর্জিত হয়েছে। তবে এটাতে আত্মতৃপ্ত না হয়ে বিপিএফের কিছু সমালোচনা ও কর্মপন্থা আলোচনা করছি। আশাকরি সিবিএফ সেটা পর্যালোচনা করবে।

গল্পে পড়েছিলাম, এক অতিথি পাখির অন্ধ অনুকরণ করতে গিয়ে আমাদের দেশের একপাখি উড়া ভুলে গিয়ে এক পায়ে হাটা শিখেছিল। শেষে দেখা গেছে, সেই পাখিটি শিকারির তাড়া খেয়ে উড়ে পালানোর চেষ্টা করেও পারলো না! ফলশ্রুতিতে সে শিকারীর ভক্ষিত বস্তুতে রুপান্তরিত হল।



সিবিএফ’র পথচলা ঢাকা হতে শুরু

সিবিএফের অবস্থাও মনে হচ্ছে তেমন। ঢাকায় একটি সফল মানব বন্ধনের ফলে কিছু তরুণ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তাদের আবেগের ভাল ফল হল সিবিএফ। কিন্তু আবেগ মরে গেলে যেমন কার্যক্রম স্থীর হয়ে যায়; সিবিএফে তেমনটি না ঘটলেও দেশব্যাপী এর কার্যক্রম ঐ কমিটি ঘটন পর্যন্তই।

গাছের গোড়া শক্ত না হলে আগায় উঠে লাফানোর কোন প্রশ্নই ওঠে না।



অদম্য চট্টগ্রামের সিবিএফ সদস্যরা

সিবিএফ’র এখন পর্যন্ত সেন্ট্রালী কোন কমিটি, লক্ষ্য নির্ধারণ ও গঠনতন্ত্র প্রণয়ণ কিছুই হয়নি! কমিটি গঠনের শেষে আমি কার খালু আমি কার খালু করা ছাড়া আর কোন কাজ তাদের থাকে না।

সিবিএফের উচিত ছিল এমন কিছু কার্যক্রম হাতে নেয়া, যেটি শুধুমাত্র দেশ ও জাতির কল্যাণময় হবে। ইসলামসহ দেশে বিরাজমান সকল ধর্মের সম্মন রক্ষা করাও সিবিএফের লক্ষ্য থাকা জরুরী। দেশ বিরোধী ও নাস্তিকতার নামে ইসলাম বিদ্বেষীদের বিরুদ্ধে সিবিএফকে থাকতে হবে সোচ্চার। কোন রাজনৈতিক দলের প্লাটফরম অথবা ক্ষমতার সিড়ি কিংবা মুখপাত্র অবশ্যই সিবিএফ হবে না; এমন প্রতিশ্রুতি সিবিএফকে দিতে হবে।

নামের ক্ষেত্রে কিছুটা অবজেকশনতো রয়েছেই। কমিউনিটে ব্লগার্স ও অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম (সিবিওএএফ/সিবিওএফ) রাখা যেতে পারে। তবে অনলাইন এ্যাক্টিভিস্টের ক্ষেত্রে শুধু ফেসবুক ব্যবহার করলেই নয়, বরং এক্টিভিটি থাকতে হবে।

আর একটি কথা, শুধুমাত্র পেইজ নির্ভর না হয়ে সত্যিকারের কর্যণালী নিয়ে ময়দানে নামতে হবে। এর পাশাপাশি আরো কিছু পরমর্শ সিবিএফের জন্য। বাম ঘরনার ব্লগারদের শক্তিশালি একটি টীম ছিল। যার মাধ্যমে সিন্ডিকেট ব্লগিং তার করতো। আর ডান ব্লকের ব্লগারদের নাস্তানুবুদ করে ছাড়তো।

সিবিএফ সেরকম এক চোখা ব্লগিং না করলেও তাকেও দেশপ্রেম ও ধর্মের প্রয়োজনে এরকম সিন্ডিকেট করতে হবে। প্রয়োজন পরলে সিবিএফ তার সকল সদস্যকে কোন ব্লগে কমেন্ট কিংবা পোস্ট করার আহবান করতে পারবে।

দ্বিতীয়ত, একটি বিষয় খেয়াল করলে দেখবেন বাম ও আ.লীগের হাতে গণা যে ক জন ব্লগার অথবা অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট জনপ্রিয় তাদেরকে কিন্তু জনপ্রিয় করেছি আমরা কয়জন আতেলরা। এ বিষয় আমার পরামর্শ থাকবে, সিবিএফ বিরোধি কোন ক্যাচাল বা বিতর্ক শুরু হলে তাদের পোস্টে কমেন্ট না করে এন্টি পোস্ট দিতে হবে। এবং সাথে সাথে আমাদের সকল সদস্য সেই পোস্টে গিয়ে কমেন্ট করবেন। তবে এ বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে, পোস্ট যেন একটি হয়, এবং অপেক্ষকিত তথ্য বহুল হয়। আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে বামরা যেন আমাদের ঐ পোস্টে আসতে বাধ্য হয়।

তৃতীয় পর্যায়ে যা বলবো, সেটি হল সিবিএফকে একটি শক্তিশালি মাধ্যম হিসেবে তৈরী করতে হবে। দেশের মানুষ না জানুক ব্লগ কিংবা বলগ কি জিনিষ; তাতে সমস্যা নাই। কিন্তু তাদেরকে জানতে হবে বিবিএফ কি জিনিষ। এ জন্য আমাদেরকে সমাজ সেবা ও অন্যান্য দেশপ্রেমে উদ্ধুতা মূলক বিষয়ে অনন্য নজির স্থাপন করতে হবে। এ যেমন ধরুন, আল্লাহ না করুন, যদি ‘মহসেন’ আসে এবং দেশ জনপদের ক্ষতি করে তাহলে সিবিএফকেই সবার আগে যাপিয়ে পড়তে হবে তাদের কল্যাণে।

চতুর্থত, একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, আমাদের লক্ষ অটুট থাকলে সফল আমরা হবই। আর তখন অনেকেই আমাদেরকে ব্যবহার করে তার রাজনীতি কিংবা ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতে চাইবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সিবিএফকে এ বিষয়ে কঠোরতা অবলম্বন করতে হবে। মনে রাখতে হবে, লক্ষ্য আমাদের দূর-দূড়ান্তর...

সিবিএফ সব অপশাসন আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে জাগ্রত থাকুক যত বাধাই আসুক, এই প্রত্যয়ে...

বিষয়: বিবিধ

১৫০৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File