চট্টগ্রামে এসবি ব্লগ ও আমার বর্ণমালা ব্লগ চালুর দাবীতে মিছিল

লিখেছেন লিখেছেন আজব মানুষ ২৬ এপ্রিল, ২০১৩, ০৮:২৫:৫৩ রাত

বিষয়টা হল সেই ফেব্রুয়ারীর ৬ তারিখ থেকে শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের ইতিহাসকে নতুন ভাবে সমৃদ্ধ করার মিশন। যুদ্ধাপারাধীদের বিচারের দাবীকে সমর্থন করে বাংলার আম জনতা ছুটে গিয়েছিল স্বদেশের ভালবাসার টানে শাহবাগসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের প্রজন্ম চত্ত্বরে।

কিন্তু জাতির আশা-আকাঙ্খা প্রতিফলনের প্রতি বৃদ্ধা আঙ্গুলী প্রদর্শন করে গুটি কয়েক মানুষ যখন নিজেদের স্বার্থে অহিংস আন্দোলনকে শত্রুতায় পর্যবেশিত করে স্বীয় স্বার্থ চারিতার্থ করতে নেমে পরে তখন মানুষ পূর্ণ অসহায় হয়ে পড়লেও হাল ছাড়েনি।

পরবর্তিতে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ সম্পূর্ণ রুপেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে ঐ প্রজন্ম এরিয়ার আশপাশ থেকে।

নেবেইবা না কেন? সময়ের পরিক্রমায় মানুষ যখন দেখল, তাদেরকে যারা নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে; তাদের আসল খল চরিত্র।

যখন উম্মেচিত হতে থাকল তথাকথিত সেই নাস্তিকদের একের পর এক আল্লাহ, রাসুল, কোরআন ও ইসলামের ওপর আঘত, অপমান আর লাঞ্ছনা! তখন তাদের পেছনে থাকে কোন গর্দভ?



পরিস্থিতির ইউটার্ন। দেশব্যাপী পূনঃজাগরণ ঘটে। এইবার দেশ সরাসরি দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ধর্মপ্রেমি জনগণ গর্জে ওঠে। দাবী তাদের একটাই নাস্তিকদের ফাঁসি চাই।

অবশ্য সর্বপ্রথম তাদের দাবীতে ভীত এবং লাঞ্ছিত হতে থাকি। যেহেতু ব্লগে একটু আধটু পদচারণা হয়ে থাকে সেহুতু হেফাজতে ইসলামের দাবীতে এমন লাঞ্ছনা আর বঞ্ছনা ব্লগার হিসেবে হজম করতে কষ্টই হচ্ছিল। তারপরও চুপ থাকতে হয়েছে।



প্রথমে তাদের দাবী ছিল ব্লগারদের ফাঁসি চাই। ঐ কুজন্মা তথাকথিত নাস্তিকরা ব্লগ ও ব্লগারদেরকে এতটাই কালারড করেছেযে, সাধারন মুসলমান ও অন্যান্য ধর্মের আস্তিকদের একটাই দাবী, ব্লগারদের ফাঁসি চাই।

যাক্ পরবর্তিতে পরিস্থিতি আস্তে আস্তে ব্লগারদের অনুকূলে আসে। এখন তারা ব্লগারদের ফাঁসি চাই কথাটি না বলে বলছে নাস্তিক ব্লগারদের ফাঁসি চাই (অবশ্য এখানেও আমার অবজেকশন রয়েছে। কারন এরা যারা এই কুকীর্তিগুলো করেছে, তারা কার্যত কোন ভিশনারি নাস্কি নয়। এরা হল ফ্যাশনের নাস্তিক। এদের নাস্তিকতা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে। বাকি সব ধর্ম তাদের কাছে স্বাভাবিক। তাই এদেরকে নাস্তিক না বলে চরম ইসলাম বিদ্বেষি কিংবা মুরতাদ বললেই যথাযগ্য শব্দ প্রয়োগ হবে বলে মনে করি)।

হেফাজতে ইসলামের লোকেরা এখন ভাল করেই জানে, সকল ব্লগাররা নাস্তিক নয়, বরং আস্তিক ও ইসলামিস্ট ব্লগারদের সংখ্যা ওদের চাইতে অনেক বেশি।

তাদের এমন মনোভাব সৃষ্টিতে যে ব্লগটি অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছে, সেটি হল আমার বর্ণমালা ব্লগ। গত ৬ এপ্রিল তাদের লংমার্চে এই ব্লগটি লাইভ ব্লগ পোস্ট দিয়ে হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ প্রতিমূহুর্তে আপডেট করে বিশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়।

নিজে যখন ফেসবুকের মাধ্যমে আমার বর্ণমালা ব্লগের আয়োজনের কথা জানতে পারি সাথে সাথে লুপে নিই সুযোগটি। কারন সবাইকে বোঝাতে হবে ব্লগার মানেই নাস্তিক নয়।

ব্যাপক সাড়া পরে। তুমুল হীট হয় আমার বর্ণমালার পোস্টটি। আমি নিজেও কয়েকটি আপডেট দেই।

কিন্তু বিধিবাম! সরকার কেন যেন সহ্য করতে পারেনি ব্যাপারটি। পরের দিনই বন্ধ করে দেয় সরকার আমার বর্ণমালা ব্লগ সাইটটি। সরকারের এই বাকশালী আচরণ অপছন্দ হলেও সহ্য করতে হয়।

আজ সকালে পেশাগত বাধ্যবাধকতায় হেফাজতে ইসলামের সমাবেশস্থলে গিয়ে চক্ষু স্থির হয়ে পরে। একি একটি ফেস্টুন ঝুলছে! তখনো লোকজন তেমন একটা আসেনি। কিন্তু কয়েকটি ছেলে এরকম কয়েকটি ফেস্টুন আর একটি ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।



কাছে গিয়ে কথা বল্লাম। জানতে পারলাম আজ দুপুরে ওরা মিছিল করবে। উৎসাহ দিলাম। নিজে মিছিলে অংশগ্রহণ না করলেও ওদের কার্যক্রমের প্রতি দায়বদ্ধতার কারনে সাথে গেলাম তাদের। তুল্লাম কয়েকটি ছবি।

হ্যাঁ, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা, সোনার বাংলাদেশ ব্লগ ও আমার বর্ণমালা ব্লগ বন্ধের প্রতিবাদে ওরা ৮/১০ জনে মিছিল করবে চট্টগ্রামের জিইসি এলাকায়।

অবাক হওয়ার তখনো বাকি। মিছিল করার কথা ছিল দুপুর ২ টায়। কিন্তু পৌনে ২টার দিকে ব্যানার নিয়ে ওরা দাঁড়াতেই সাধারণ মানুষ ও মুসল্লিরাও এসে যোগ দেয় তাদের সাথে। প্রায় হাজার খানিক লোকের স্লোগানে মুখরিত হল বাকশাল নিপাত যাক, আমার দেশ মুক্তিপাক।

নাস্তিকদের ঠাঁই নাই, আমার বর্ণমালা ব্লগ ফেরত চাই।

অবিলম্বে এসবি ব্লগ চালু কর করতে হবে। ইত্যাদি ইত্যাদি। পরে মিছিল হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে এসে শেষ হয়।





বিষয়: বিবিধ

৩৪৯৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File