গুজরাটি মুসলিমদের বর্তমান অবস্থা এবং কায়েদে আজাম জিন্নাহ
লিখেছেন লিখেছেন বিজয় ০৭ জানুয়ারি, ২০১৩, ০১:৫৩:৫৫ রাত
কিছুদিন আগে নরেদ্র মোদী তৃতীয় বারের মত গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হলেন. এই নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ২০০২ সালে জঙ্গি হিন্দুরা হাজার হাজার মুসলিম কে হত্যা করে, মুসলিম মেয়েদের রেপ করে আগুনে পুড়িয়ে মারে. পাকিস্তানের স্থপতি কায়েদে আজম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ছিলেন এই গুজরাটেরই মুসলমান. সে কারণে তিনি ভালো উর্দু বলতে পারতেন না. যেভাবে আমাদের Sohrowardi ভালো বাংলা বলতে পারতেন না. জিন্না বেশির ভাগ পাবলিক বক্তৃতা ইংরেজিতে দিতেন আর ফ্যামিলিতে গুজরাটি ভাষায় কথা বলতেন.
দু:খের বিষয় হলো জিন্না পাকিস্তান তৈরির মাধ্যমে কোটি কোটি মুসলিম কে বার্হ্মন অত্যাচার থেকে রক্ষা করতে পেরেছিলেন, কিন্তু তার নিজের জাতি গুজরাটি মুসলিমরা আজ ও অত্যাচারিত, নির্যাতিত. তত্কালীন কংগ্রেস নেতা মৌলানা আবুল কালাম আজাদ জিন্নাহ কে বলেছিলেন আপনি পাকিস্তান তৈরি করে কিছু মুসলমানকে রক্ষা করেছেন, কিন্তু যারা এখনো ভারতে বসবাসরত তাদের কি হবে? তিনি উত্তর দিলেন তাদের জন্য উপরে আল্লাহ আর নিচে আপনি আছেন. তবে সে সময় গুজরাটসহ পাকিস্তানের নিকটবর্তী অঞ্চল থেকে লক্ষ লক্ষ মুসলিম পাকিস্তানে চলে যায়. বিহার এবং কলকাতা থেকে লক্ষ লক্ষ মুসলিম বাংলাদেশে চলে আসে. কলকাতার মুসলমানরা আমাদের সাথে মিশে গেলে ও বিহারী মুসলিমরা উর্দু ভাষা এবং ৭১ সালের ভূমিকার কারণে আজ ও আলাদা হয়ে আছে.
পাকিস্তান আন্দোলনের সময় কিছু কিছু মুসলিম জিন্নাহর নেতৃত্ব মানতে চায়নি. তাদের যুক্তি ছিল জিন্নাহ একজন শিয়া মুসলমান এবং বাক্তিগতজীবনে জিন্নাহ ধর্ম কর্ম করতেন না. তখন উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম মাওলানা আশরাফ আলী থানভী(র বলেন আমরা মামলা জিতার ক্ষেত্রে ধর্মীয় পরিচয় দেখিনা. আমরা দেখি কাকে দিয়ে মামলাতা জিতা যাবে. জিন্নাহ হচ্ছে সেরকম একজন যাকে দিয়ে মামলাটা জিতা যাবে, পাকিস্তান রাষ্ট্র বানানো যাবে. বহু দলে বিভক্ত মুসলিমদের এক করে ব্রিটিশদের কনভিন্স করে হিন্দুদের থেকে স্বাধীন মুসলিম ভূখন্ডের দাবি আদায় করা জিন্নার পক্ষে সম্ভব. অবশেষে জিন্নাহর নেতৃত্বে ১৯৪৭ সালের অগাস্ট মাসে আমরা স্বাধীন মুসলিম ভূখন্ড পাই. জিন্না দীর্ঘদিন যক্ষা রোগে ভুগতেছিলেন কিন্তু তিনি সেটা কাউকে জানাননি, শুধু তার বোন্ এবং তার ডাক্তার জানত. সেকারণে আন্দোলন চলাকালে অনেকবার তিনি অসুস্থ হয়ে পরেছিলেন. পাকিস্তান হবার কিছুদিনের মাথায় ১৯৪৮ সালে তিনি মারা যান. লর্ড মাউন্ট বেটেন তার জীবনীতে লিখেছিলেন তিনি যদি জিন্নার অসুস্থতার কথা জানতেন তাহলে ভারত পাটিসন আরো দেরী করতেন যাতে জিন্নাহ মারা যায়. সে সময় পাকিস্তান সফল না হলে আমাদের অবস্থা হয়ত গুজরাটের কিংবা আসামের অথবা কাশ্মীরের মুসলমানদের মত হত. তবে আমরা মুক্তি পেয়েছি এজন্য যেমন শুকরিয়া করতে হবে তেমনি আল্লাহর কাছে ভারতের মুসলিমসহ সকল নির্যাতিত মানুষের জন্য দুয়া করতে হবে.
বিষয়: বিবিধ
২৭৭৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন