কয়েকটি বিশ্বখ্যাত ইউনিভার্সিটির নগ্ন ইতিহাস এবং ঢাকা ইউনিভার্সিটির অসভ্যতা

লিখেছেন লিখেছেন বিজয় ০৩ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৮:২৭:২১ সকাল

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন সংক্ষেপে UCL বিশ্বের অন্যতম নামকরা ইউনিভার্সিটি. এটি ১৮২৬ সালে একজন ইহুদি কতৃক প্রতিষ্ঠিত হয়. ইংলান্ডে এটি প্রথম ইউনিভার্সিটি যেখানে সকল ধর্মের, সকল বর্ণের এবং নারীদের ভর্তি হবার চান্স দেয়া হয়. এর আগে অক্সফোর্ড এবং কেমব্রিজ এ ভর্তি হবার শর্তাবলীর মধ্যে ছিল খ্রীষ্টান হতে হবে, সাদা হতে হবে-কালো বা এশিয়ান হলে হবে না, পুরুষ হতে হবে. তখন ইহুদিরা নিজেদেরকে শিক্ষিত করার উদ্দেশে UCL প্রতিষ্ঠা করে পাশাপাশি অন্য ধর্মের, বর্ণের এবং নারীদের ও ভর্তি হবার সুযোগ প্রদান করে. UCL এর কারণে অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ ধীরে ধীরে তাদের ভর্তির নীতিমালা পরিবর্তন করে.

এবার আসি কলকাতা ইউনিভার্সিটির আলোচনায়. ব্রিটিশ শাসনালে মুসলিম ছাত্রদের ভর্তির ক্ষেত্রে অলিখিত বিধিনিষেধ ছিল. ভর্তি কমিটিতে সবাই ছিল হিন্দু. তারা ভর্তির আবেদনপত্রে মুসলিম নাম দেখলে হাতেগুনা কিছু আবেদনপত্র রেখে অধিকাংশই গায়েব করে দিত. পরবর্তিতে মুসলিমরা সেটা বুজতে পারে এবং ভর্তির আবেদনপত্রে নামের পরিবর্তে সিরিয়াল নাম্বার / কোড নম্বর এর দাবি জানায়. ভর্তি কমিটি বাধ্য হয়ে মুসলিমদের দাবি মেনে নেয়. এরপর মুসলিম ছাত্রদের সংখা ক্রমান্নয়ে বাড়তে থাকে.

এবার আসি আমার নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা ইউনিভার্সিটির আলোচনায়. এখানে অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ বা কলকতা ইউনিভার্সিটির মত সংখালগুরা বঞ্চিত নয়. বঞ্চিত গ্রুপটি স্বজাতিরই অংশ. ১৯৯৬ সালে awami লীগ যখন অতীত ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসে তখন তারা আর্টস এবং সোশ্যাল সাইন্স এর ৫ টি ডিপার্টমেন্ট এ মাদ্রাসা ছাত্ররা যাতে ভর্তি হতে না পারে সেজন্য নতুন নীতিমালা করে. পরবর্তিতে সমালোচনার কারণে ৫ টি থেকে কমিয়ে ২ টি তে নিয়ে আসে. মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন ক্ষমতায় আসার পর আবার একই চক্রান্ত শুরু হয়. awami লীগ- নাস্তিক জোট ক্ষমতায় আসার পর সেই চক্রান্ত কয়েক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়. গত চার বছর যাবত মাদ্রাসা ছাত্ররা ১১/ ১২ টি ডিপার্টমেন্ট ভর্তি হতে পারছে না. হাইকোর্ট বিষয়টিকে বেআইনি ঘোষণা করলে ও ইউনিভার্সিটি কতৃপক্ষ তথা সরকার এতে কর্ণপাত করছে না. মাদ্রাসার একজন ছাত্র কে স্কুল এর সিলেবাস almost cover করার পর ও কোরআন, হাদিস, আরবি প্রথমপত্র, দিব্তীয়পত্র পড়তে হয়. যার ফলে নাম্বার বন্টন এর ক্ষেত্রে স্কুল এবং মাদ্রাসায় কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে. মাদ্রাসার সকল বিষয়ের নম্বর ১২০০ নাম্বারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে গিয়ে বাংলা প্রথমপত্র এবং দিব্তীয় পত্র মিলে ১০০, ইংলিশ প্রথমপত্র, দিব্তীয়পত্র মিলে ১০০ নম্বর পড়ানো হয়. শুধু নম্বর বন্টনের এই ভিন্নতার অজুহাত তুলে মাদ্রাসার ছাত্রদের ভর্তিতে বাধা দেয়া হচ্ছে. অথচ এই নম্বর বন্টন মাদ্রাসার ছাত্ররা করে নাই, করেছে মাদ্রাসা বোর্ড এবং অনুমোদন করেছে সরকার. এই সিলেবাস এবং এই নম্বর বন্টনের আলোকে একজন মাদ্রাসার ছাত্র buet , মেডিকেল সহ দেশের সকল ইউনিভার্সিটি, ইউরোপ, আমেরিকার ইউনিভার্সিটি কোথাও সমস্যা হয় না, এমনকি ঢাকা ইউনিভার্সিটির সাইন্স ফাকাল্টি, কমার্স ফাকাল্টি তে সমস্যা হয় না. শুধু সমস্যা হয় যে সব ডিপার্টমেন্ট এ বেশিরভাগ শিক্ষক awami league অথবা নাস্তিক.

সর্বশেষ যে বিষয়টি বলতে চাই ১০০/ ১৫০ বছর আগে কোনো ইউনিভার্সিটি কতৃপক্ষ বা সরকার হয়ত অসভ্য আচরণ করেছে এবং তারা বর্তমানে সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছে. কিন্তু এ যুগে এসে অসভ্য আচরণ কোনভাবেই মানা যায় না, তাও আবার নিজ জাতির সাথে.

বিষয়: বিবিধ

১১৬৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File