'পূর্ব বঙ্গ ও আসাম' প্রদেশ এবং পাকিস্তান আন্দোলন: ০১
লিখেছেন লিখেছেন বিজয় ০৭ জুন, ২০১৩, ০৩:১০:৩৪ দুপুর
নবাব সলিমুল্লাহর চার পুরুষ পূর্ব থেকে তারা বাংলাদেশে বসবাস করছেন. তারা মূলত কাশ্মির থেকে প্রথমে আসাম, তারপর ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় তার অবদান সবচেয়ে বেশি, এছাড়া নবাব নওয়াব আলীর অবদান অন্যতম. অবাঙালি হয়েও নবাব সলিমুল্লাহ কখনো নিজেকে বাঙালি মুসলমানদের থেকে আলাদা ভাবেননি, বরং স্বপ্ন দেখেছেন এদেশের মুসলমানদের ভাগ্য পরিবর্তনের. ১৯০৫ সালে যখন বঙ্গ ভঙ্গের মাধ্যমে 'পূর্ব বঙ্গ ও আসাম' নামে নতুন প্রদেশটি হলো তিনি এর উন্নয়নে নিজের সমস্ত সম্পত্তি অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছেন, দেশের এই অন্যতম ধনী মানুষটি একেবারে দরিদ্র মানুষে পরিনত হয়েছেন. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা, বুয়েটের জন্য জায়গাসহ বিভিন্ন ভাবে তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন. এরকম একজন ডেডিকেটেড মুসলমানের উদ্ধেগে মুসলমানদের উন্নয়নে যে প্রতিষ্ঠান সেখানে আজকে মাদ্রাসার ছাত্রদের ভর্তি হতে কত না সমস্যা. ১৯০৫ সালের বঙ্গ ভঙ্গের পর তিনি সারা ভারতের মুসলিম শিক্ষাবিদদের নিয়ে ঢাকার শাহবাগে একটি শিক্ষা সম্মেলনের আয়োজন করেন, যেই শিক্ষা সম্মেলন থেকেই মুসলমানদের অধিকার আদায়ের জন্য মুসলিম লীগের জন্ম হয়, ঢাকায় জন্ম নেয়া মুসলিম লীগের হাত ধরেই পাকিস্তান রাষ্টের জন্ম হয়. মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ 'পূর্ববঙ্গ ও আসাম' প্রদেশটি পাওয়াতে মুসলমানদের মধ্যে স্বাধীনতার সাধ জেগে উঠে, কিন্তু কপালে বেশিদিন সুখ সইলনা; ১৯১১ সালেই হিন্দুদের আন্দোলনে বঙ্গভঙ্গ রদ হয়ে যায়. শুধু স্বাধীনতার জন্য নয়, এই অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য ঢাকা রাজধানী হিসেবে টিকে থাকা দরকার ছিল
হিন্দু শাসনামলে বাংলার রাজধানী ছিল গৌরো যেটি পশ্চিম বঙ্গে অবস্থিত, আবার মুসলিম শাসনামলে রাজধানী ছিল মুর্শিদাবাদ এটিও পশ্চিমবঙ্গে, আবার ইংরেজ শাসনামলের রাজধানী ছিল কলকাতা. অর্থাত উন্নয়ন কার্যক্রম বরাবরই পশ্চিম বাংলাকে ঘিরে হয়েছে. পূর্ব বাংলায় অতি মাত্রায় নদী-নালার কারণে শাসক গোষ্ঠী বরাবরই রাজধানী স্থাপন করেছে পশ্চিমবঙ্গে. সে কারণে ঢাকাসহ সমগ্র বাংলাদেশের উন্নয়ন কার্যক্রম মূলত ১৯৪৭ সাল থেকেই শুরু হয়. অন্যদিকে ১৯৪৭ সালের অনেক আগেই মুঘলদের হাতে লাহোর এবং রাওয়াল পিন্ডির শহর গড়ে উঠে. অর্থাত জন্মকালীন সময় থেকেই দুই পাকিস্তানের মধ্যে বৈষম্য বিদ্ধমান ছিল. (চলবে)
বিষয়: বিবিধ
২০৪২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন