স্বপ্না মরিয়ম!!
লিখেছেন লিখেছেন সাদামেঘ ০৭ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৭:৩৭:৪০ সন্ধ্যা
স্বপ্না মরিয়ম!!
লোকদের সামনে সেজেগুজে বসে থাকা, আর ইন্টারভিউ দেয়া, স্বপ্না মরিয়মের কাছে খুব ঘৃনার মনে হয়। বিয়ে এই দুটি শব্দের মাঝে যেন নারীর সব কলংক মুছে যায় নয়তো কত লোকের কথা যে শুনতে হয় তার ইয়াত্তা নেই লোকের শুনতে শুনতে মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় গলায় দড়ি দিতে কিন্তু আত্মহত্যা মহা পাপ বলে কিছুই করতে পারেনা স্বপ্না মরিয়ম। কেন যে পৃথিবীতে মানুষকে এত এত জটিল সমস্যায় পড়তে হয়? কোনই জবাব পায়না স্বপ্না মরিয়ম। কত পরিবার এপর্যন্ত দেখতে আসল অপছন্দও করেনা কোন ছেলে, লম্বা, স্মার্ট, সুন্দরী, শিক্ষিতা, চুল ও এত লম্বা যে মাজা ছাড়িয়ে পড়ে আছে এক কথায় যে কোন ছেলে একবার দেখাতেই পছন্দ করে। সবকিছু মেচিং হয় ছেলেদের পরিবারের সাথে, ছেলে মেয়েকে পছন্দ করে আর মেয়ে ছেলেকে পছন্দ করে কিন্তু শুধু একটি বিষয়ের কারনেই বিয়ে ভেঙে যায় বারবার। বিষয়টি হল বাবা সরকরি পুলিশ আর একারনেই স্বপ্না মরিয়মের বিয়ে ঠিক হয় আবার ভেঙে যায়। কার অপরাধ স্বপ্না মরিয়মের? নাকি ওর বাবার? মরিয়ম মাঝে মাঝে ভাবে এর জম্মটাই বৃথা নয়তো আত্মীয় স্বজন থেকে শুরু করে পাড়াপ্রতিবেশি সবার কথা শুনে মাত্র একটি কারনে কেন বিয়ে হয়না? বিয়ে কি ছেলের হাতের মুয়া? যে বললেই হয়ে যাবে? না বিয়ে ছেলের হাতের মুয়া নয়। এর থেকেও নিম্মস্তরের মেয়েদের ভাল ভাল জায়গায় বিয়ে হয়ে যায় কিন্তু স্বপ্না মরিয়ম অনেক গুণের হয়েও বিয়ে হচ্ছে না এর জন্য কে দায়ী? আমাদের সমাজ? আমাদের আধুনিক কালচার? নাকি ডিজিটাল বাংলার ডিজিটাল পুলিশের জন্য? কে দেবে এর জবাব?
স্বপ্না মরিয়মেরা পাঁচ বোন! সব বোনেরা বিয়ের উপযুক্ত আবার ঢাকায় বাড়িও আছে কিন্তু বাবা পুলিশের চাকুরী করে বলে মেয়েদের বিয়ে হচ্ছেনা। ছেলে পক্ষ আসে দেখে, পছন্দ করে, আবার আসবো বলে শেষে আর আসেনা কিছুদিন পর খবর পাঠায় সবই ভাল লেগেছে কিন্তু বাবা পুলিশ বলে ছেলের বাবা রাজি হচ্ছেনা, বাবা পুলিশ বলে ছেলের একমাত্র মামা রাজি হচ্ছেনা, বাবা পুলিশ বলে ছেলের একমাত্র দুলাভাই রাজি হচ্ছেনা তাই বিয়েটা হবেনা। স্বপ্না মরিয়ম তো কেঁদে কেঁদে বালিশ ভিজাচ্ছে কেউ নেই তার চোখের পানি মুছে দেবার। পুলিশের ছেলে মেয়ে হয়ে বড় সমস্যায় পড়েছে স্বপ্না মরিয়ের পরিবার স্বপ্না মরিয়মের মা বলে পুলিশের চাকরী না করে ঠেলা ঠেলে খাওয়া অনেক ভাল। ইদানিং স্বপ্না মরিয়ম কারো সামনে যেতে চায়না, আর কারোর সামনে সে যেতে রাজি নয়, সে শুধু এই প্রত্যশা বুকে বেঁধে আছে স্রষ্টা যদি কপালে বিয়ে রাখে তো হবে নয়তো আফছূছ করে কোন লাভ নেই। ছোট বেলায় নানী দাদির মুখে শুনতাম ‘’মাছ খেলে খেও ইলিশ আর প্রেমীক ধরলে কইরো পুলিশ’’ বর্তমানে এই কথার কোনই মূল্য নাই।
এই তো শুধু একটি পরিবারের কথা। এদেশে এমন আরো অনেক পরিবার আছে যাদের বিয়ে হচ্ছেনা শুধু বাবা বা ভাই পুলিশ বলে। বর্তমানে পুলিশ শব্দ শুনলেই মানুষ পিছিয়ে যায় বিয়ে শাদীর ব্যাপারে। এদেশের রক্ষকেরা যা করছে একদিন এর খেসারত দেবে তাদের সন্তানেরা যখন পুলিশের ছেলে বলে কেউ তাদের কাছে মেয়ে বিয়ে দেবেনা আবার পুলিশের মেয়ে বলে কোন ছেলে বিয়ে করবেনা তখন তারা ঠিকই নিজেদেরকে শুধরিয়ে নেবে কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যাবে। স্বপ্না মরিয়মের মত হজারও পরিবার কন্যা দায়ে ভুগছে কে দেবে এর সমাধান? কবে হবে এই সমস্যার থেকে আছান? এখনো যদি বাংলার রক্ষকেরা নিজেদেরকে না শুধরায় তবে আর কত স্বপ্না মরিয়মেরা মানুষের কাছে হেয় হবে? কত লাঞ্চিত হবে লোকেরা কাছে? আমাদের পুলিশ ভাইদের কি চোখ খুলবেনা? তাদের অন্তরে কি স্বপ্না মরিয়মদের জন্য কোন মায় নেই? পিতার অন্তরে কি স্বপ্না মরিয়মদের জন্য কোন স্নেহ নেই? তবে কেন পিতার জন্য কন্যার দায় হবে? কেন ভাইয়ের জন্য বোনের বিয়ে বন্ধ থাকবে? এই প্রশ্নের জবাব কে দেবে? আর কেইবা এর সমাধান করবে? আমাদের পুলিশ প্রশাসনের এসব ভেবে দেখা উচিৎ নয়? যদি তারা এসব ভাবার সময় নাই পায় তবে তারা কিভাবে আইনশৃংখলা বাহিনী হল? তারা তো বিশৃংখলা বাহীনিই হল। যারা নিজেদের পরিবারের আইন শৃংখলাই ঠিক করতে পারেনা, মেয়ের মুখে হাসি ফুটাতে পারেনা, বোনের চোখের পানি মুছে দিতে পারেনা তারা কিভাবে দেশ ও দশের জন্য আইনশৃখংলা করবে?
৭ই ডিসেম্বর ২০১৩
বিষয়: বিবিধ
১৯১৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন