আঁখির সৌন্দর্য!!

লিখেছেন লিখেছেন সাদামেঘ ০৩ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৬:৩০:৪৩ সন্ধ্যা

সূচনাতে, প্রথমেই আমাদের মহান আল্লাহর শুকরিয়া এই বলে করা উচিৎ যে, তিনি যদি চোখ ও চোখের দৃষ্টিশক্তি না দিতেন তবে আমরা এই সুন্দর পৃথিবীর কিছুই দেখতাম না। এই সুন্দর পৃথিবীকে মনে হত আঁধারের রাজ্য, দিন ও রাত্রিকে মনে হত সমান। তাই প্রথমে মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে বলি আল-হামদুলিল্লাহ।

আঁখি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর বস্তু। যে সুন্দরের মাঝে প্রাকৃতির সব সৌন্দর্য লুকায়িত, আমরা এই চোখকে নানান নামে অভিহিত করি। কখনো চোখ, কখনো আঁখি, কখনো নয়ন, কখনো নেত্র যার যেভাবে ভাল লাগে সে নামেই তাকে ডাকা হয়। ভালবাসা পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ও পবিত্রতম দিক, যদি আমাদের চোখই না থাকতো তবে ভালবাসা কাকে বলে জানতাম? না কি ভালবাসার সৌন্দর্য অবলোকন করতে পারতাম?

কারন প্রথমে চোখ দিয়ে দেখেই তো ভাল লাগে, আর এই ভাল লাগা থেকেই জম্ম হয় ভালবাসার। তাই ভালবাসার সুন্দরের পূর্বে বলতে হবে প্রতিটি চোখ সুন্দর, এবং চোখের চাহনি সুন্দর। চোখ সুন্দর বস্তু বলেই চোখের সামনে যা কিছু আছে সবকিছুতেই সুন্দরে মৌহিত মনে হয়।

বিশ্লেষনে বলব, চোখের জ্যোতি আছে বলেই চোখ সুন্দর। জ্যোতি বিহীন চোখ পৃথিবীর সব সুন্দরকেই আঁধার করে দেয়। জ্যোতিপূর্ণ চোখ দিয়ে দেখে সুন্দর-অসুন্দর সব কিছুতে আমরা পার্থক্য করতে পারি।

ধানে জড়ানো ধানের ছড়া সুন্দর, নদীতে পাল তোলা নৌকা সুন্দর, কাননে ফোটা ফুল সুন্দর, গগনে উদিত চাঁদ সুন্দর, পাহাড়ী ঝর্না সুন্দর, সুনীলাকাশ সুন্দর, নিবির ভাবে বয়ে যাওয়া বাতাস সুন্দর, বয়ে চলা নদীর ঢেউ সুন্দর, প্রভাতীর সূর্যদয় সুন্দর, অস্তমিত সূর্য সুন্দর, জোসনায় স্নাত রাত সুন্দর, রঙ ধনূর রঙ সুন্দর, রাত্রের নিরবতা সুন্দর, মায়ের কাছে শিশুর মুখখানি সুন্দর, শিশুর কাছে মায়ের আদর সুন্দর, মায়ের মমতার আঁচলখানি সুন্দর, প্রেমীকের কাছে প্রেমীকার হাসি সুন্দর, অধির আগ্রহে থাকা প্রিয়র ভাবনা সুন্দর, বিবাহিত জুটি সুন্দর, পৃথিবীর আলো-আঁধারের খেলা সুন্দর,

এ সবকিছু সুন্দরের উৎস হলো চোখ। চোখ সুন্দর বলেই পৃথিবীর ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র আর বুহত্তম থেকে বুহত্তম যা কিছু আছে সব কিছুকেই সুন্দর মনে হয়। যদি চোখই না থাকতো তবে এই সুন্দর পৃথিবীর সৌন্দর্যটুকু কি আমি বা আমরা দেখতে পেতাম?

পৃথিবীর সব সৌন্দর্যের প্রধান হল চোখ। আর সবচেয়ে সুন্দর হল দু’চোখের জ্যোতি আর চোখের চাহনি সুন্দর বলেই পৃথিবীর সবকিছুকে সুন্দর ও নির্মল মনে হয়। তাই যারা সেই চিরসত্য, চিরসুন্দর চোখের অশ্রু ঝড়ায় সামান্য ছোট-খাট কারনে তাদেরকে ঘৃনা করা উচিৎ। তাদেরকে বোঝানো উচিৎ সুন্দর সব সময়ই সুন্দর, যে সুন্দরের তুলনা কেউ কখনোই দিতে পারবেনা।

সে সুন্দর চোখের অশ্রু ক্ষয় করা মানুষের মানায় না। ধবংসের চেয়ে গড়া সুন্দর, সে সুন্দর গড়তে পারে একমাত্র মানুষেই। পৃথিবীর যা কিছু আছে তার সবই প্রশংসা পায় একমাত্র চোখের কারনে। তবুও কেন চোখ লোনা অশ্রু ঝড়ায়? তাকে তবুও মানায়। ফুলকে ফোটার জন্য একটু সময় দিতে হবে, তেমনী অন্তরের ব্যাথা ঘুচাতে চোখের অশ্রু ঝড়াতেই হবে।

চোখ কাঁদে, চোখ দেখে, চোখ ঘুমায়, চোখের বোবা চাহনি মনের অনেক কথাও বলে দেয়। তবুও আঁখি সুন্দর, যে সুন্দরের তুলনা কোন কবির কবিতায় ধরা যায়না, সে কবিতার চেয়েও বেশী সুন্দর। কোন ক্যানভাসে আঁকা যায়না, সে ক্যানভাসে আঁকা ছবির চেয়েও বেশী সুন্দর। ফুল খুবই সুন্দর, এবং লোভনীয় যদি চোখই না থাকতো তবে আমরা কিভাবে ফুলকে দেখতাম? বা ফুলের প্রতি আকৃষ্ট হতাম। তাই ফুলের সুন্দরের পূর্বে চোখ সুন্দর বলতে হবে।

চাঁদ সিমাহীন সুন্দর, চাঁদের আলোতে পৃথিবী ধন্য হয়। চাঁদকে কাছে পেতে আগ্রহী হয়, যদি চোখই না থাকতো, তবে কিভাবে চাঁদ, চাঁদের আলো দেখতাম? তাই চাঁদের বেলাতেও চাঁদকে সুন্দর বলার পূর্বে চোখ সুন্দর বলতে হবে। চোখের সুন্দর যখন ধবংস হয়ে যায় তখন পৃথিবীর সব কিছুকেই অসুন্দর মনে হয়। তাই আমাদের মনকে সবার পূর্বে সুন্দর করতে হবে, তারপর প্রাকৃতিকে, তারপর দৃষ্টিকে, তখন মনের সৌন্দর্যে প্রাকৃতিক রুপকে, চোখের সৌন্দর্যে দেখতে অপরুপ লাগবে।

পৃথিবীর সব সুন্দরের প্রধান হলো চোখ, এচোখ দিয়ে কোন অসুন্দর বস্তু দেখার পূর্বে আমাদের প্রতিজ্ঞা করা উচিৎ চোখকে সুন্দর ও সুন্দর্য পূর্ণ পবিত্র স্থানে নিহিত রাখবো। আর মহান মালিকের কাছে ফরিয়াদ তিনি যেন সবার চোখকে আজীবন ভাল রাখেন।

**তাই তো মনে মনে বলে ফেলি আমি

ধরনী সুন্দর যেমনই, আঁখির সুন্দর তুমি।

চোখ ছাড়া এই ধরনীকে মনে হতো আঁধার মরুভূমি,

তুমি আছো বলে মনে হয় সব সুন্দরের পূর্ণতা তুমি।

বিষয়: বিবিধ

১৯৭৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File