"জ্ঞান শূনত্যা পূরন হোক"
লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ১১ মার্চ, ২০১৭, ০৬:৫৯:৫০ সন্ধ্যা
একটি অনুরোধেএকজন ইসলামিক মাউন্ড সম্পন্ন পরিবারের একটি অনুরোধ রাখতে গিয়ে তাদের মেয়ের জন্যে একটি বিয়ের প্রস্তাব পৌছলাম। পাত্র মদিনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অনার্সের প্রথম বর্ষের ছাত্র (পাত্র হাফেজ)। এ ব্যাপারে বলার পর সে পরিবার থেকে জানানো হলো ছেলে তো হাফেজ এবং আলেম কিন্তু আমরা তো শুধু আলেম ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে দেবোনা ছেলেকে অনন্ত তাবলীগ জামাতে তিনসালের সাথি হতে হবে। ( বলে রাখি তিনসালের সাথি হলো যারা তাবলীগে তিন বছর সময় লাগিয়েছেন তাদেরকে তিনসালের সাথি বলা হয়)। তাদের পরিবার থেকে আরো জানালো ছেলে এখন যাই হোক না কেন আগে যদি ছেলে তাবলীগে সময় না লাগান তবে অবশ্যই তাকে তাবলীগে তিনসাল সময় লাগিয়ে আসতে হবে। নয়তো সম্ভব না এবিয়ে। আমি তো তাদের জবাব শুনে পুরাই লা-জবাব। মোবাইলে তাদের জবাব শুনে আমার শরীর ঘামতে লাগলো। ভেতরে কেমন যেন অস্থীরতা অনুভব হলো। মনে হতে লাগলো যারা ইসলামিক মাইন্ডের তাদের মাঝেই যদি এত বাধ্যবাধকতা থাকে তবে যারা অনৈসলামিক তাদের মাঝে কি করে ঐক্যতা আসবে? নিজেকে কন্ট্রোল করে পরে শুধু বললাম একজন কুরআনে হাফেজ যে পুরো কুরআনটা মুখস্থ পারে। এবং সে আলেম হতে চলেছে বর্তমানে সে বিশ্বের অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অনার্সের ছাত্র। যার ভেতরে পুরো কুরআন ও কুরআনের ব্যাখ্যা জানা আছে এবং জানা আছে প্রিয় হাবীব (সঃ) এর উত্তম আদর্শ আর সে আদর্শ নিয়েই সে বড় হয়েছে। আর এই আদর্শ তাকে পৌছে দেবে চিরস্থায়ী জান্নাতের নিকটে। আপনাদের কাছে তার শিক্ষা যোগ্যতাকে কম মনে হচ্ছে? তাবলীগে তিনসাল লাগানো একজনকে বড় হচ্ছে তাইনা? কি বলবো বোন? আপনাদের জবাব শুনে মনে হচ্ছে মানুষের জ্ঞান শূন্যতা অনেক। আপনারা এতবছর ধরে তাবলীগ করেন অথচ একজন আলেমের মর্যাদাই বুঝলেন না। আর অন্ধভাবে কোন কিছুকেই মানা ঠিক না। আপনাদের জ্ঞান শূন্যতা পূর্ণ হোক। ভেবে দেখবেন একজন সাধারন মানুষ একশতাব্দীও যদি তাবলীগে সময় লাগায় সে কি একজন আলেমের সম-মর্যাদার হতে পারবে?
ক্বওমী ওয়ালা গণ ক্বওমী পরিবারে সাথে সম্পর্ক করবেন। তাবলীগগণ তাবলীগিদের সাথে সম্পর্ক করবেন্ জামাতীরা জামাতীগণের সাথে সম্পর্ক করবেন। যারা পীরের ভূমিকায় আছেন তারা পীরের পরিবারেই সম্পর্ক করবেন। তবে যারা জেনারেল শিক্ষায় শিক্ষিত তারা কিভাবে ইসলামকে জানবে ও বুঝবে? কিভাবে তারা ইসলাম মানবে? সবাই যদি নিজ মতকেই প্রাধান্য দেয় তবে সকল মতেরই তো প্রচারনা চলে। আসল ইসলাম যেন সকল মতের ভীতরে দিনকে দিন হারিয়ে যাচ্ছে। আসলেনিজ নিজ অবস্থানে সবাই নিজেকেই সহীহ বিবেচনা করে। একবারও ভেবে দেখেনা বাস্তবতায় কুরআন হাদীস আমাদেরকে কোন পথে চলতে বলেছে? আমরা কোন পথের পথিক হয়েছি? আমরা কি আদৌ সঠিক পথের পথিক হতে পেরেছি? শুনে শুনে কেন আমল কবরো? সরাসরি নিজে কুরআন বুঝতে চেষ্টা করবো ও আমল করবো। মহান আল্লাহ তা'য়ালা ও সৃষ্টির মাঝে তার প্রভুত্বের পরিচয় তুলে ধরেছেন। মানুষ কেন সঠিক জ্ঞান অর্জন না করে পীরের কথা, মুরুব্বীর কথা, ক্বওমী মাদ্রাসার হুজুরের কথা মানে আমার বুঝে আসেনা। দোয়া করি আল্লাহ্ সবাইকে কুরআনের সঠিক জ্ঞান দান করুন। আমিন।
পরিশেষে বলবো যারা তাবলীগ করেন ভালো কথা করেন। কিন্তু অন্ধভাবে কোনকিছু বিশ্বাস করা ঠিক নয়। আপনাদের হৃদয়কে এতটুকু প্রসস্থ রাখুন যেন আপনাদের সামনে কুরআনের কোন আয়াত পড়া হলে বা কোন হাদীস পড়া হলে আপনি জানতে পারেন আপনার আগের জানা ছিলো ভুল আর পরের জানা হলো সঠিক তখন সাথে সাথেই তা গ্রহণ করার মন-মানষিকতা তৈরি রাখুন। শুধু শুনে শুনে কোন আমলই করবেন না। আপনাদের মুরুব্বীরা বলেছে প্রত্যেক নেককাজের সওয়ার উনপঞ্চাশকোটি করে দেয়া হবে। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি মহান আল্লাহ্ নির্ধারিত কোন নেকী দিবেন না কারন তিনি সবচেয়ে বড়দাতা কারো কাজকে পছন্দ হলে মহান আল্লাহ বেহিসাবই নেকী দিতে পারেন। (আল্লাহই ভালো জানেন কাকে কতবেশী নেকী দিবেন)। নির্ধারিত নেকী দেবার চিন্তা করলে তো মহান আল্লাহ তা'য়ালার বড়ত্বে অসম্মান করা হবে, অস্বীকার করা হবে মহান রব্বুল আলামিনের বিশালত্বপূর্ণ মর্যাদাকে। মহান আল্লাহ্ আমাদের সকলের জ্ঞানের পরিধি আরো বাড়িয়ে দিন যেন আমরা সেই জ্ঞান দ্বারা আমাদের প্রতিপালকের বেশী বেশী প্রশংসা করতে পারি। তাবলীগওয়ালারা শুধু মুরুব্বীদের কথা শুনে ও তাদের কথাই মানে মহান আল্লাহ্ ও তার প্রিয় হাবীব (সঃ) এর আনীত আদর্শকে দুরে ঠেলে। এবার পাঠকগণই বিচার করুন মুরুব্বীগণ বড় নাকি আল্লাহ্ ও তার রাসূল (সঃ) বড়?
বিষয়: বিবিধ
৯৬০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন