হে মানুষ সঠিকভাবে আল্লাহকে চিনতে চেষ্টা করো।

লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ০৯ মার্চ, ২০১৭, ০৬:৪৪:০১ সন্ধ্যা

আমরা আল্লাহকে পাওয়ার জন্যে কত কি তালাশ করি। আল্লাহকে পাওয়ার জন্যে তারই সৃষ্টিকে মাধ্যম বানিয়ে নেই। আল্লাহ্ কি তাঁর বাণী পবিত্র কুরআনে বলেননি?

مَلِكِ النَّاسِ - মানুষের মালিক (আল্লাহ্)। [সূরা আন্-নাস:২]

أَلَمْ تَعْلَمْ أَنَّ اللَّـهَ لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا لَكُم مِّن دُونِ اللَّـهِ مِن وَلِيٍّ وَلَا نَصِيرٍ -

"তুমি কি জানো না যে, আল্লাহর জন্যই নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের 'মুলক' (রাজত্ব, আধিপত্য)? আর (প্রকৃতপক্ষে) আল্লাহ্ ব্যতীত তোমাদের আর কোন 'ওলী'(বন্ধু, মুরুব্বী, অভিভাবক) ও সাহায্যকারী নেই।" [সূরা আল-বাক্কারাহ্: ১০৭] ইসলাম আমরা পেয়েছি একমাত্র মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে। অথচ তিনি কোন তথাকথিত ওলী-আওলিয়ার বক্তব্য মেনে চলার কথা বলে যাননি। বরং তিনি সরাসরি কুরআন ও সহীহ্ হাদীসকে আঁকড়ে ধরার কথা বলে গেছেন।

وَعَن مَالك بن أنس مُرْسَلًا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” تَرَكْتُ فِيكُمْ أَمْرَيْنِ لَنْ تَضِلُّوا مَا تَمَسَّكْتُمْ بِهِمَا: كِتَابَ اللَّهِ وَسُنَّةَ رَسُولِهِ . رَوَاهُ فِي الْمُوَطَّأ

মালিক ইবনে আনাস (রাযিঃ) হতে মুরসাল রূপে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: “আমি তোমাদের মধ্যে দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি। যতক্ষণ তোমরা সে দু’টি জিনিস আঁকড়ে থাকবে, পথভ্রষ্ট হবে না: আল্লাহর কিতাব ও রাসূলের হাদীস”।[ মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হাদিীস: ৩৩৩৮] আল্লাহকে পাইতে গিয়ে রাসূল (সঃ) এর পথ ভুলে অন্য পথ অবলম্বন করি আর যাকে পাওয়ার তাকেই ভুলে যাই। মহান আল্লাহ্ আমাদেরকে সঠিক বুঝ দিন।

এখান থেকে এফ বির পাতা থেকে কপি পেস্ট করেছি।

একজন মুরিদকে জিজ্ঞাস করেছিলাম,

Q: ভাই আপনি পীর ধরেছেন কেন-?

উত্তরে মুরিদ বললেনঃ শুনুন দেশের প্রেসিডেন্টের কাছে কি আপনি যেতে পারবেন? কোন MP-MINISTER or SECURITY-এর মাধ্যম ব্যতীত-?

আমি বললাম না। -

Q: তারপরে ঐ মুরিদকে বললাম তা, এই কথার সাথে পীর মুরিদের কি সম্পর্ক-?

উত্তরে মুরিদ বললেনঃ বিনা MP-MINISTER ছাড়া যেমন প্রেসিডেন্টের কাছে যাওয়া যায় না, ঠিক তেমনি আল্লাহ্‌কে পাইতে হলে পীর ছাড়া পাওয়া যাবে না।

তারপর, আমি উনাকে ধন্যবাদ জানালাম- পীর সম্পর্কে কিছু কথাবার্তা বলার জন্যে।

Q: তারপরে আমি মুরিদকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কি কুরআন মানেন-? মুরিদ বললো হ্যাঁ মানি। এরপরে জিজ্ঞাসা করলাম, পড়তে জানেন-? মুরিদ বললেন হ্যাঁ পারি। এরপরই মুরিদকে আমিও একটা উদাহরণ দিলাম।

মাননীয় প্রেসিডেন্ট কি আপনাকে চিনে-? মুরিদ বললো না। সেকি আপনাকে কোন দিন দেখেছে-? সে বললো না-? তার পক্ষের কেউ আপনাকে চিনে-? মুরিদ বললো না। ___ এরপর আমি বললাম, প্রেসিডেন্ট আপনাকে চিনে না বলেই আপনার কোন অনুমতি নেই- তাই সে লোক প্রেসিডেন্টকে চিনে তার মাধ্যমেই আপনার আবেদন পাঠাতে হবে। যদি প্রেসিডেন্ট এমন একজনকে চিনে সেই লোক প্রেসিডেন্টের কাছে গেলে কেউ থাকে বাঁধা দিবে-? মুরিদ বললো না। কারণ সে তাকে চিনে।

Q: আমি বললাম, আপনি কি আল্লাহ্‌কে দেখেন-? সে বললো না। তারপরে বললাম, আল্লাহ্‌ কি আপনাকে চিনেন, নাকি চিনেন না-? মুরিদ বললো চিনেন।

আপনি যে কথাটা মুখ দিয়ে নয়- অন্তরে মনে মনে শুধু ভাবছেন সেই কথাটা কি আল্লাহ্‌ জানেন-? মুরিদ বললো জানেন। এরপরে আমি বললাম; যে আল্লাহ্‌ আপনার না বলা কথাটাও জানেন আপনাকে দেখেন ও আপনাকে চিনেন তাহলে আপনি আল্লাহ্‌কে ডাকতে বা পাইতে মাধ্যম হিসেবে পীরকে ধরলেন কেন-? ঠিক আল্লাহ্‌র কাছে আপনি যেমন আপনার পীরও তেমনি- কোন পার্থক্য নেই। তবে যে যত মজবুত ঈমান আনবে ও আমল করবে নবী (সাঃ) তরিকায় সেই তত মর্যাদাশীল হবে। সেটাও আল্লাহ্‌ পরে জানিয়ে দিবেন- অন্য কারো সাধ্য নেই যে বলতে পারে, অমুক আল্লাহ্‌র বন্ধু- তমুক আল্লাহ্‌র বন্ধু।

তখন আমি মুরিদকে কুরআনের কয়েকটি আয়াত পড়ালাম- যেমনঃ আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি। (১/ সুরা ফাতিহা: আয়াত নং ৫) - এই আয়াত আপনি আমি এবং আপনার পীর সহ পড়ে ও আল্লাহ্‌র কাছে সাহায্য কামনা করে। যে পীর স্বয়ং আল্লাহ্‌র কাছে নিজের জন্যে সাহায্য কামনা করে- সে আপনাকে সাহায্য করবে কি করে-?

এরপরে পড়লাম- সুরা আ'বাসা থেকে- যেদিন কর্ণবিদারক নাদ (বিকট শব্দ) আসবে- সেদিন (পীর-মুরিদ সহ সবাই) পলায়ন করবে মানুষ তার ভ্রাতার কাছ থেকে,- তার মাতা, তার পিতা, তার পত্নী ও তার সন্তানদের কাছ থেকে। সেদিন প্রত্যেকেরই নিজের এক চিন্তা থাকবে, যা তাকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখবে। (৮০/ সুরা আ'বাসা আয়াত নং ৩৩-৩৭) - অর্থাৎ আপনার পীরের অবস্থা কি হবে দেখেছেন-? মুরিদ তখন মাথা নিচু করে ভাবতে শুরু করে দিয়েছে। আমি তা-ও বললাম বিশ্বাস না হলে আসেন, আপনার পীরকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করি।

এরপরে কুরআনের আরো কিছু আয়াত পড়লামঃ আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেনঃ "কে আছ এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? (০২/ সুরা বাকারাহ: আয়াত নং ২৫৫) "তোমরা ভয় কর সেদিনকে, যে দিন এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তি বিন্দুমাত্র উপকৃত হবে না, কারো কাছ থেকে বিনিময় গৃহীত হবে না, কারো সুপারিশ ফলপ্রদ হবে না এবং তারা সাহায্য প্রাপ্ত ও হবে না। (০২/ সুরা বাকারাহ : আয়াত নং ৪৮,১২৩)

অবশেষে মুরিদকে বললাম- দেখুন; আপনার পীর আপনাকে লুটে পুটে খাচ্ছে- আপনার ঈমান-আমল-ধন-সম্পদ সবই নিয়া সে জমিদারের মত বসবাস করছে- অথচ- তার কোন ব্যবসা-চাকরী-জমিন এসবের কিছুই নাই। কিন্তু আপনি আমার চেয়ে ভাল বুঝেন; বলেন এগুলি আসে কোথা থেকে-? একবার জিজ্ঞাসা করে দেখেছেন-?

আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেনঃ অনুসরণ কর তাদের, যারা তোমাদের কাছে কোন বিনিময় কামনা করে না, অথচ তারা সুপথ প্রাপ্ত। (৩৬/সুরা ইয়া-সীন: আয়াত নং ২১) - আপনার পীরকে বিনিময় না দিলে আপনি গেইটের ভীতরেই যেতে পারবেন না- গোলাম দিয়ে আপনাকে ২/৪টা কথা বলিয়ে বিদায় করে দিবে- আর মাল দিলে- আপনার বসার স্থান আন্দর মহলেও হবে। আর আপনার পীর যে সৎ পথ প্রাপ্ত এটাই বা পাইলেন কোথা থেকে?

অথচ আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেনঃ তিনিই ভাল জানেন কে সুপথপ্রাপ্ত হয়েছে। (সুরা নাজম: আয়াত নং ৩০) সুতরাং তোমরা নিজেদের আত্ন-প্রশংসা করো না। তিনি ভাল জানেন কে মুত্তাকী। (৫৩/ সুরা নাজম: আয়াত নং ৩২)

"এসো আলোর পথের পাতা থেকে"

বিষয়: বিবিধ

৮৮৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File