কোন কিছুই অহেতুক সৃষ্টি করা হয়নি, প্রত্যেকটি সৃষ্টিতে রয়েছে আল্লাহর সুষ্পষ্ট নিদর্শন।
লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ০৫ মার্চ, ২০১৭, ১২:৩৯:০৮ দুপুর
--------------------------------------------------------------------------------------------------অবিশ্বাসীগণ প্রায়সই বলে থাকেন আল্লাহ কি আছেন? তার নিদর্শন কি?বর্তমান যুগে এসে আমরা অনেক অবিশ্বাসীগনের সাথে তর্কযুদ্ধ করতে হয় তারা তাদের স্বভাবসুলভ আচরন করে, বিভিন্নভাবে সৃষ্টিকর্তার প্রতি অবিশ্বাসী কথাবার্তা বলে নিজেদের ভ্রান্ত ধারনা মানুষের মাঝে চালু করতে তৎপর! তারা সৃষ্টি মানে তবে সৃষ্টিকর্তায় তাদের সন্দেহ ও সংসয় আছে। তারা নিজেদের বিজ্ঞানপন্থি বলে জাহির করেন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহর নিদর্শন সম্পর্কিত বহু আয়াত আছে। এসম্পর্কিত আয়াতের বিশ্লেষণ অন্য একটা লেখায় করবো ইনশা আল্লাহ। অবিশ্বাসীগনের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সৃষ্টি অসংখ্য-অগনিত নিদর্শন সমূহ থেকে মাত্র একটি উ্ইপোকানামক ক্ষুদ্র একটি প্রাণী এবং তার শৈল্পিককর্মকান্ডের একটি উদাহরন দিলাম। উইপোকার টিবিমাত্র ৫-৬ মিটার উচ্চতা সম্পন্ন উইপোকার টিবি আইফেল টাওয়ারের চেয়েও বিষ্ময়কর! আপনি যদি শুধু একটি উইপোকার টিবির সাথে পোকাটির আকারগত পাথর্ক্যটিও বিবেচনা করেন তাহলে দেখবেন যে, একটি উইপোকার তুলনায় তা ৩০০ গুন বড়। অবশ্য মানুষও তো আইফেল টাওয়ার গড়েছে এবং তার তুলনামুলক আকারগত পাথর্ক্যটি কম নয়। কিন্তু উইপোকা ওটি গড়েছে কোন প্রকার যন্ত্রপাতি ছাড়াই, মানুষ যা পারেনি।
মিসরীয় পিরামিড গুলোর ক্ষেত্রে ও তারা যুগোপোযোগী যন্ত্রপাতি নিশ্চয়ই ব্যবহার করেছিল। তবে যাই হোক পরবর্তী তথ্যটি আপনার তর্ক প্রবনতাকে স্তব্ধ করে দিতে যথেষ্ঠ: উইপোকা সম্পুর্ণ অন্ধ! আপনি কয়েক হাজার অন্ধ ক্রীতদাসকে আজ অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে বলুন পিরামিড বা আইফেল টাওয়ার তৈরী করতে, চোখ বেধে আপনি নিজেও এই কাজে সামিল হয়ে যান, তারপর দেখুন অবস্থাটি কি দাড়ায়! যে ব্যক্তি জীবনে কোনদিন এই টিবিগুলি দেখেননি তিনি হয়তো ভাবছেন ঝুড়ি ঝুড়ি বালু একেরপর এক ফেলে এটি তৈরী করা সম্ভব। কিন্তু আপনি আসল বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন নন, যা এই ১-২ সেন্টিমিটার দেহধারী স্থাপতি প্রকৌশলীরা সৃষ্টি করেছে; এর ভিতরে রয়েছে অসংখ্য টানেলের একটি নেটওয়ার্ক,রয়েছে পরিকল্পিত করিডোর সমূহ, রয়েছে উপযুক্ত বায়ু সন্ঞ্চালন ব্যবস্থা, ছত্রাক উৎপাদনের বিশেষ আঙ্গিনা এবং জরুরী র্নিগমন পথ। أَفَمَن يَخْلُقُ كَمَن لَّا يَخْلُقُ ۗ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ যিনি সৃষ্টি করে, তিনি কি সে লোকের সমতুল্য যে সৃষ্টি করতে পারে না? তোমরা কি চিন্তা করবে না? وَإِن تَعُدُّوا نِعْمَةَ اللَّهِ لَا تُحْصُوهَا ۗ إِنَّ اللَّهَ لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ যদি আল্লাহর নেয়ামত গণনা কর, শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। (সুরা নাহল ১৭-১৮) একবার ভাবুন ক্ষুদ্রাকৃতির একটি কীট কোন প্রকৌষল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা গ্রহন না করে কোন যন্ত্রপাতি ছাড়াই এমন একটি বিষ্ময়কর স্হাপত্য নিদর্শন তৈরী করল?? অসাধারন শিল্প গুনাবলী সম্পন্ন এই স্থাপত্য হাজার হাজার অন্ধ উইপোকার সমন্বিত প্রচেষ্টায় স্থাপিত হলো?? গঠিত হবার প্রাথমিক পর্যায়ে যদি আপনি একটি উইপোকার টিবিকে সমান দুইভাগে ভাগ করেন এবং পরবর্তীতে আবার জোড়া লাগান তাহলে দেখতে পাবেন যে, এর প্রতিটি গলিপথ, রাজপথ আর সূড়ঙ্গ পথ সুন্দরভাবে পারস্পারিকভাবে মিলে গেছে।
আপনি এর কি ব্যাখ্যা হাজির করবেন? এর একটিমাত্র ব্যাখ্যা হতে পারে, আর তা হচ্ছে মহান স্রষ্টা আল্লাহ্ কোন দৃষ্টান্ত ছাড়াই ক্ষুদ্র পোকাটিকেও সৃষ্টি করেছেন স্বকীয় বৈশিষ্ঠ্যমন্ডিত পরিপুর্ণ একক হিসেবে। যে বুঝতে চায় তার জন্য এই সামান্য উইপোকার টিবির দৃষ্টান্ত অনুসরন করেও বুঝে নেয়া সম্ভব যে,মহা বিশ্বের যাবতীয় কিছুই সুপরিকল্পিত ভাবে সৃষ্ট; যার কর্তা হলেন এক আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। وَفِي خَلْقِكُمْ وَمَا يَبُثُّ مِن دَابَّةٍ آيَاتٌ لِّقَوْمٍ يُوقِنُونَ আর তোমাদের সৃষ্টিতে এবং চারদিকে ছড়িয়ে রাখা জীব জন্তুর সৃজনের মধ্যেও নিদর্শনাবলী রয়েছে বিশ্বাসীদের জন্য। (সূরা জাসিয়া,আয়াত ৪) (তথ্য সূত্র তাফসিরে ইবনে কাছির, হারুন ইয়াহিয়া)
সংগৃহীত
বিষয়: বিবিধ
৯২১ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জাযাকাল্লাহু খাইর
মন্তব্য করতে লগইন করুন