শির্ক
লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ২১ আগস্ট, ২০১৬, ০২:৪০:৩৯ দুপুর
আমরা আমাদের অজান্তে অনেক গুনাহ করে ফেলি। আমরা জানি না বা বুঝতেও পারিনা শির্ক কত বড় গুনাহ যার কারনে আমাদের উপর জাহান্নাম অবধারিত হয়ে যেতে পারে। আল্লাহর কাছে পানাহ চাই। আমরা না জেনে না বুঝে অগ্যতাবশত অনেক রকমের গুনাহ করতে পারি। তাই জেনে নেই কি কি কথা বা কাজে আমাদের শির্ক হওয়ার সম্ভবনা আছে। মহান আল্লাহ তা'য়ালা আমাদের সকলকে শির্ক ও কুফুরী মুক্ত হায়াতে তয়্যীবাহ্ দান করুন ও ঈমানের সাথে বাঁচিয়ে রাখুন ও ঈমানের সাথে মৃত্যু নসীব করুন।
বহুল প্রচলিত কয়েকটি শির্ক, আর শির্ক করে তওবাহ না করে
মারা গেলে নিশ্চিত জাহান্নামঃ-
* শরীরে যেকোন প্রকার তাবিজ ঝুলানো শির্ক [ আহমদ: ১৭৪৫৮, সহিহ হাদিস:৪৯২]
* আল্লাহ ব্যাতিত অন্য কারো নামে কসম করা শির্ক [আবু দাউদ:৩২৩৬(ইফা)]
* কোন কিছুকে শুভ-অশুভ লক্ষন বা কুলক্ষণ মনে করা শির্ক [বুখারি :৫৩৪৬, আবু দাউদ:৩৯১০]
* আল্লাহর গুণবাচক নামে অন্য কাউকে ডাকা শির্ক (যেমন: কুদ্দুস, রাহমান, রহীম, জাব্বার, সালাম, মুমিন ইত্যাদি) [সুরা ইসরা:১১০, হাশর]
* ‘তোর ভবিষ্যত অন্ধকার’,‘তোর কপালে বহুত কষ্ট আছে’, এই ধরনের গায়েবি কথা কাউকে বলা শির্ক [সুরা নমল:৬৫, আল জিন:২৫-২৬, আনাম:৫৯]
* যে কোন জড় বস্তুকে সম্মান দেখানো তথা তাযীম করা বা তার সামনে নিরবতা পালন
করা শির্ক যেমন: পতাকা, স্মৃতিসৌধ, শহিদ মিনার কিংবা মাজার ইত্যাদি। [সুরা বাকারাহ:২৩৮, আহকাফ:৫, ফাতহুল বারি ৭/৪৪৮, আবু দাউদ:৪০৩৩]
* আল্লাহর ছাড়া অন্য কারো সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কিংবা লোক দেখানো ইবাদাত করা শির্ক [সুরা আনাম:১৬২, কাহফ:১১০,ইমরান:৬৪ ,ইবনে মাজাহ হাদিস নং৫২০৪]
* আল্লাহ ব্যাতিত কোন গণক বা অন্য কেউ গায়েব জানে এই কথা বিশ্বাস করা শির্ক
[সুরা নমল:৬৫, আল জিন:২৬, আনাম:৫৯]
* আল্লাহর ছাড়া কোন পীর-আওলিয়া এবং কোন মাজারের নিকট দু'আ করা বা কোন কিছু চাওয়া শির্ক। [সুরা ফাতিহা:৪, আশ শুরা:২১৩, গাফির:৬০, তিরমিজি]
* মাজারে ও কোন পীর-ফকির কিংবা কারো নিকট সিজদাহ দেয়া শির্ক [সুরা জীন: ২০, মুসলিম:১০৭৭]
* আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো বা যেকোন পীর- আওলিয়া কিংবা মাজারের নামে মানত করা শির্ক। [সহিহ বুখারি: অধ্যায় : তাকদির]
এই রকম আরোও অনেক শির্ক সমাজে বিদ্যমান। মনে রাখবেন, শির্ক এমন একটি গুনাহ যা করলে ঈমান এবং পূর্বের সমস্ত আমল সম্পূর্ন নষ্ট হয়ে যায়। কিয়ামতের দিন আল্লাহ সুবাহানাতা'য়ালা যেকোন গুনাহ ইচ্ছা করলে ক্ষমা করে দিবেন কিন্তু শির্কের গুনাহ কখনও ক্ষমা করবেন না। আল্লাহ বলেন,, নিঃসন্দেহে আল্লাহ ইচ্ছা করলে যেকোন গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন কিন্তু শির্কের গুনাহ কখনো ক্ষমা করবেন না (সুরা নিসা :৪৮,১১৬)
নিশ্চয়ই যে ব্যাক্তি আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থাপন করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতকে হারাম করে দেন এবং জাহান্নামকে অবধারিত করে দেন (সুরা মায়িদাহ:৭২)
রাসুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,,
“আমার সামনে জিব্রাঈল আবির্ভূত হলেন।
তিনি বললেন, আপনি আপনার উম্মতদের সুসংবাদ দিন, যে ব্যাক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক না করা অবস্থায় মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।..... ।[ বুখারি :১২৩৭,মুসলিম:৯৪]
শির্ক হচ্ছে সবচেয়ে বড় ধ্বংসত্মাক বিষয়। শত পাপ করলেও কিয়ামতের দিন তা ক্ষমার সম্ভবনা আছে কিন্তু শির্কের পাপ ক্ষমার কোন সম্ভবনাই নেই এবং তা নিঃসন্দেহে জাহান্নামে নিয়ে যাবে। ইয়া আল্লাহ আমাদের সকলকে শির্ক থেকে বাঁচার তৌফিক দান করুন ও আপনার খাস হেদায়াত নসীব করুন।
বিষয়: বিবিধ
১১১১ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সকল প্রশংসা সারা জাহানের রব আল্লাহর জন্য ।
০ অনেক সময় মহিলা/স্ত্রীদেরকে ইমপ্রেসড বা কনভিন্সড করতে পুরুষ/স্বামীরা তাদেরকে প্রশংসায় ভরিয়ে দেয়*(দিতে বাধ্য হয় ) , স্তুতি বাক্য/কাব্য রচনা করে ।
এতে সেই কাঙ্খিত মহিলা/স্ত্রী ইমপ্রেসড/কনভিন্সডও হয় ।
এরকম প্রশংসা করা কি ইসলামী দৃষ্টিতে সঠিক ? এতে কি শিরক হবে না?
* কারণ - তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম । এই উত্তম খেতাব স্ত্রীর স্তুতি না গাইলে পাবার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন